আজঃ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24
শিরোনাম

গাজীপুরে ‘জাহাঙ্গীর খেলা’ চলছে জল্পনা-কল্পনা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৮ এপ্রিল ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৮ এপ্রিল ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

পাঁচ সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ৪১ জন নেতাকর্মী দলীয় ফরম সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বাধিক ১৭ জন আগ্রহী ছিলেন। এ সিটিতে সেখানকার সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বাদ দিয়ে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানকে। তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলম বিদ্রোহী প্রার্থী হন কি না, তা নিয়ে এখন চলছে জল্পনা-কল্পনা।

আর গত শনিবার আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর জাহাঙ্গীর আলম নিজেও বলেছেন, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও জনগণ যদি চায় তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ভোটের লড়াইয়ে থাকবেন। এমন পরিস্থিতিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেই পুরনো জাহাঙ্গীর খেলা শুরুর আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও গাজীপুরের স্থানীয় কিছু নেতা মিলে এই খেলার মাধ্যমে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চান।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ও জাহাঙ্গীরের শত্রু-মিত্ররা সবাই একাট্টা হয়ে জাহাঙ্গীর খেলা শুরুর ছক সাজাচ্ছেন। আর এ খেলার সুফল-কুফল নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। এরই মধ্যে ঢাকায় আওয়ামী লীগ তিন প্রভাবশালী নেতার বাসায় জাহাঙ্গীর একাধিকবার ঢু মেরে আলোচনা সেরে গেছেন। গতকাল সোমবার পুরো দিনই তিনি ঢাকায় অবস্থান করেন। কেন্দ্রীয় বিভিন্ন নেতার সঙ্গে দেখা করে নিশ্চিত হতে চেয়েছেন যে নির্বাচনে প্রার্থী হলে হামলা-মামলা বা অন্য কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি তাকে হতে হবে কি না? আর প্রার্থী হলে দল ও সরকার থেকে ঝামেলার মুখে পড়তে হবে না এমন নিশ্চয়তা পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে লড়াই করবেন। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী প্রার্থিতা ঘোষণার জন্য হাতে সময় থাকায় আরও কয়েক দিন এসব নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ভেবেচিন্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে গতকাল রাতে জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে এই প্রতিবেদক তার পরিচয় উল্লেখ করে কল করার কারণ জানিয়ে বার্তা পাঠালেও সাড়া পাওয়া যায়নি তার।

জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, তিনি (জাহাঙ্গীর) দলীয় পদের চেয়ে মেয়র পদের জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে রাজি আছেন। তার আত্মবিশ্বাস, প্রচারণায় বের না হয়েও মেয়র নির্বাচিত হবেন। হামলা-মামলার শিকার না হয়ে শুধু দল থেকে বহিষ্কারের মতো পদক্ষেপ নিলেও ভোটের মাঠে থাকবেন জাহাঙ্গীর।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কেন্দ্রীয় এক নেতার নেতৃত্বে আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীরকে নিজের শক্তির ওপর ভর করে নির্বাচনে প্রার্থী হতে উৎসাহিত করে তুলেছেন বলে জানা গেছে। জাহাঙ্গীরের শক্তির উৎস যে কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন তারা তাকে বলেছেন, শক্তির জায়গায় আত্মবিশ্বাসী থাকলে নির্বাচনে নেমে পড়তে। কারণ বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নেবে না। ফলে জাহাঙ্গীরের বিজয়ী হয়ে আসার সুযোগ আছে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ এপ্রিল। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে। ভোটগ্রহণ হবে ২৫ মে। তাই প্রার্থিতার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে জাহাঙ্গীর আলম আরেকটু সময় নিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র জানায়, শীর্ষ পর্যায়ের এক কেন্দ্রীয় নেতাসহ অন্তত ছয়জন প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে দলের মনোনয়ন পাইয়ে দিতে জোর চেষ্টা চালান। কিন্তু আজমতের রাজনৈতিক ত্যাগের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিটিতে মেয়র প্রার্থী বদলেছেন। এতে নাখোশ হয়ে জাহাঙ্গীরকে দিয়ে জাহাঙ্গীর খেলা শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন প্রভাবশালী ওই ছয় নেতা। এতে করে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ভোটের মাঠে সংকটে ফেলা যাবে। এই সিটি নির্বাচনে পরাজিত হলে আজমত গাজীপুরের রাজনীতিতে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না। এ ছাড়া গাজীপুর আওয়ামী লীগের যে অংশটি জাহাঙ্গীর খেলার সঙ্গে জুটেছেন, তাদের লক্ষ্য জাহাঙ্গীরকেও শেষ করা যাবে এর মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও গাজীপুরের একাধিক নেতা এসব তথ্য জানান।

তারা বলেন, জাহাঙ্গীর খেলা বলতে ২০১৩ সালে গাজীপুর সিটির প্রথম নির্বাচন ঘিরে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আজমত উল্লা খানকে হারানো হয়েছিল তা। তখন মনোনয়নপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন না দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড নৌকা প্রতীক তুলে দেয় আজমতকে। তাতেই বেঁকে বসেন জাহাঙ্গীর অনুসারী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ এবং তাদের অনুসারী ছাত্রলীগের সাবেক প্রভাবশালী নেতারা। যারা জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে সুফলভোগী। এ অনুসারীদের চাপে পড়ে জাহাঙ্গীর খেলা শুরু সেই নির্বাচনে। তিনি কাগজে-কলমে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও মুখে ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রার্থী হিসেবে না থাকার। এবারও একই খেলা, একই ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেট

গাজীপুর আওয়ামী লীগের একটি অংশ চায় জাহাঙ্গীর খেলার মধ্য দিয়ে আজমত পরাজিত হলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ শেষ হবে এবং ওই দোষে দুষ্ট হয়ে জাহাঙ্গীর আলমেরও রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের মৃত্যু হবে। এই হিসাব থেকেও গাজীপুরের প্রভাবশালী নেতারা তার সঙ্গে জোট বেঁধেছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, সিদ্ধান্ত অমান্য করলে যত বড় নেতাই হোক না কেন, এবার আর ক্ষমা করা হবে না। সে যে-ই হোক। অনেকেই অমুক প্রার্থীর সঙ্গে তমুক প্রার্থীর সঙ্গে উসকানি দেন এমন ঘটনা বলাই যায়। কিন্তু তথ্য-প্রমাণ হাতে থাকলে সবাইকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

২০১৩ সালের জাহাঙ্গীর খেলা : গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। ২০১৩ সালের প্রথম নির্বাচনে টঙ্গী পৌরসভার তিনবারের চেয়ারম্যান আজমত উল্লা খান বিএনপির আবদুল মান্নানের কাছে পরাজিত হন। সেবার মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তরুণ নেতা জাহাঙ্গীর। তবে ভোটের আগে হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যান। এর মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার কথা কেন্দ্র থেকে বলা হলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু গণমাধ্যমে নানা আবেগী বক্তব্য দিয়ে যান ওই সময়ে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার কয়েক দিন পর আত্মগোপন থেকে ছাত্রলীগের সাবেক কিছু প্রভাবশালী নেতা তাকে বের করে এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থিত করান। এতে করে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা শেখ হাসিনার সুদৃষ্টিতে আসতে চেষ্টা করেন। ওই সময়ে সংসদ ভবনে কাজে থাকা শেখ হাসিনার সামনে জাহাঙ্গীর উপস্থিত হলে প্রধানমন্ত্রী তাকে আজমতের পক্ষে ভোট করার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা জাহাঙ্গীরকে ভবিষ্যতে দেখার আশ্বাসও আদায় করে নেন।

দলীয়প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পরদিন জাহাঙ্গীর ঘটা করে সংবাদ সম্মেলন করে গাজীপুরবাসীকে আবেগপূর্ণ করে তোলেন। সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে হাউমাউ করে কেঁদে ভোটের অল্প কয়েক দিন আগে গাজীপুরের মানুষকে দোলায় ফেলে দেন। অভিযোগ ওঠে, সংবাদ সম্মেলনের পর তিনি তার ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে বিএনপির তৎকালীন মেয়র প্রার্থী এমএ মান্নানের জন্য ভোট চান। জাহাঙ্গীর খেলার উদ্দেশ্য ছিল আর যা-ই হোক, নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঠিক রাখতে হলে আজমতকে হারাতেই হবে। তাই জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেট ওই নির্বাচনে শেষদিন পর্যন্ত রহস্যবৃত ছিল। ফলে ফলাফল যা হওয়ার কথা ছিল তা-ই হয়। মান্নানের কাছে পরাজিত হতে হয় আজমত উল্লা খানকে। অন্যদিকে নির্বাচন থেকে মুখে মুখে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও কাগজে-কলমে প্রার্থী থেকে যাওয়ার কারণে জাহাঙ্গীরের ভোটের বাক্সেও ৩০ হাজারের মতো ভোট পড়ে।

আজমত হেরে যাওয়ায় পরেরবার ২০১৮ সালে নৌকা পেতে আর কোনো ঝক্কি-ঝামেলায় পড়তে হয়নি জাহাঙ্গীর আলমকে। মনোনয়ন পেয়ে অনায়াসেই মেয়র হয়ে যান। তবে সেবার তিনি মনোনয়ন পেলেও প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে কোনোভাবেই আজমত উল্লা খানের অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠেনি। কেন্দ্রের কয়েকজন নেতার আজমতবিরোধী অবস্থানের নেপথ্য কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর বিভিন্ন নেতাকে আর্থিকসহ নানা সুবিধা দিয়ে তার ভক্ত করে রেখেছেন। অন্যদিকে আজমতের যোগ্য-দক্ষ ও ত্যাগের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন থাকায় অনেকেই তাকে ঈর্ষার চোখে দেখেন।

মেয়র হয়েই বেপরোয়া জাহাঙ্গীর : মেয়র হওয়ার পর পুরো নগরীতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার শুরু করেন জাহাঙ্গীর আলম। গাজীপুরের রাজনীতি, সিটি করপোরেশন কার্যালয়সহ সবই তার ইশারায় চলতে থাকে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতাসহ প্রভাবশালী অন্তত চারজন নেতা তাকে আশকারা দিতে থাকেন। তবে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় জাহাঙ্গীরকে। এরপর দুর্নীতির অভিযোগে মেয়র পদ থেকে অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কিছুটা চাপে পড়ে নিশ্চুপ হয়ে যান তিনি। সর্বশেষ দলীয় সিদ্ধান্তে বহিষ্কার হওয়া সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলে এর আওতায় তারও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এরপর মেয়র পদ ফিরে পেতে আদালতের শরণাপন্নও হন জাহাঙ্গীর। একই সঙ্গে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।


আরও খবর



মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ১৩ বিজিপি সদস্য

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের জেরে দেশটির সেনা ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১৩ সদস্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে টেকনাফের নাফ নদ দিয়ে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.শরীফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নতুন করে বিজিপির আরও ১৩ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। পরে তাদের বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের ১১ বিজিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

বর্তমানে সেখানে মিয়ানমারের মোট ২৭৪ জন আশ্রয় রয়েছে। তিনি আরও জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন ১১ বিজিবির অধীনে থাকা ২৭৪ জনের মধ্যে বিজিপি ছাড়াও সেনা সদস্যও রয়েছে।

এর মধ্যে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৪৬ জন পালিয়ে আসে। মঙ্গলবার দিনে প্রবেশ করেছিল ১৮ জন। তার আগের দিন সোমবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশফাঁড়ি সীমান্ত দিয়ে দুই সেনা সদস্য পালিয়ে আসে। এর আগে রবিবার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসে বিজিপির আরও ১৪ সদস্য। তারও আগে ওখানে মিয়ানমারের ১৮০ জন আশ্রয়রত ছিল। যাদের মধ্যে ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেয় আরও ১৭৭ বিজিপি ও সেনা সদস্য। গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল আরও ৩৩০ জন। যাদের ১৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।


আরও খবর



কেজরিওয়াল গ্রেপ্তার: যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ভারত

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া চাই আমরা।

এরপর ভারত সরকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র মিশনের ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধান গ্লোরিয়া বারবানাকে তলব করে। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ৪০ মিনিটের বৈঠক করেন তার সঙ্গে।

বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন আচরণের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি জানায়। তারা জানান, প্রত্যেক রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার ও সার্বভৌমত্বের ওপর শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। গণতন্ত্রের সঠিক চর্চার জন্য এই শ্রদ্ধাবোধ সবার দায়িত্ব। নাহলে অসুস্থ পরিবেশ তৈরি হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের আইনি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে প্রথম ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গ্রেপ্তার হন তিনি। দিল্লির আবগারি নীতি সংক্রান্ত ওই মামলায় কেজরিওয়ালকে জেরা করার জন্য ৯ বার সমন পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু তিনি আসেননি। এই অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে হয় তাকে।


আরও খবর



ফোর্বসের শতকোটিপতির তালিকা প্রকাশ, শীর্ষে বার্নার্ড আর্নল্ট

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

চলতি বছরটি বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের দারুণ কাটছে। ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ২০২৪ সালের ধনীদের নতুন তালিকা থেকে জানা গেছে, গত এক বছরে তাদের সম্পদমূল্য বেড়েছে দুই লাখ কোটি ডলার।

ফোর্বসের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় এই বছরে সবার ওপরে বার্নার্ড আর্নল্ট ও তার পরিবার। গত জানুয়ারিতেই ইলন মাস্ককে হটিয়ে বার্নার্ড আর্নল্ট বিশ্বের শীর্ষ ধনীর আসন লাভ করেন। তার সম্পদমূল্য ২২ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। শীর্ষ ১০ ধনীর মধ্যে প্রথম স্থানে থাকা বার্নার্ড আর্নল্ট পরিবার ছাড়া বাকি সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আর্নল্ট পরিবার ফরাসি।

ফোর্বসের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন অ্যামাজনের সহপ্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, তার সম্পদমূল্য ১৯ হাজার ৮৭০ কোটি ডলার। তৃতীয় স্থানে আছেন টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক। তার সম্পদমূল্য ১৯ হাজার ২০ কোটি ডলার। সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ আছেন তালিকার চতুর্থ স্থানে। তার সম্পদের পরিমাণ ১৭ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার। আর তালিকার পঞ্চম স্থানে আছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী ওরাকলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। তার সম্পদমূল্য ১৫ হাজার ৩৪০ কোটি ডলার।

ফোর্বসের ধনীদের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে আছেন ওরাকল অব ওমাহা ও বিনিয়োগ গুরু হিসেবে খ্যাত ওয়ারেন বাফেট। তার মোট সম্পদমূল্য ১৩ হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। সপ্তম স্থানে রয়েছেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তার সম্পদমূল্য ১৩ হাজার ৭০ কোটি ডলার। অষ্টম স্থানে আছেন অ্যালফাবেটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ। তার সম্পদমূল্য ১২ হাজার ৮৮০ কোটি ডলার।

ফোর্বসের তথ্যমতে, নবম স্থানে যৌথভাবে দুইজন শীষ ধনী রয়েছেন। ১২ হাজার ৪৭০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে নবম স্থানে আছেন লস অ্যাঞ্জেলেস ক্লিপার্সের স্বত্বাধিকারী স্টিভ বালমার এবং অ্যালফাবেটের আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা সার্জেই ব্রিন আছেন নবম স্থানে। তার সম্পদমূল্য ১২ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার।

তালিকায় ১১তম স্থানে আছেন ভারত ও এশিয়ার শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি। তার সম্পদমূল্য ১১ হাজার ৬২০ কোটি ডলার। আরেক ভারতীয় শীর্ষ ধনী ও একসময় এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির সম্পদমূল্য ৮ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার। তার অবস্থান ১৭তম।

এদিকে ধনীদের তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি শতকোটিপতি আছেন চীনে। দেশটির ধনীদের মধ্যে শতকোটিপতির সংখ্যা ৪৭৩ জন। তবে সামগ্রিকভাবে চীনা ধনীদের সম্পদমূল্য কমেছে ৩০ হাজার কোটি ডলার।

২০০ বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি নিয়ে তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে ভারত, দেশটির ধনীদের জন্য এটি নতুন রেকর্ড। অর্থাৎ এর আগে আর কখনো এতসংখ্যক ভারতীয় শতকোটিপতি ছিলেন না।


আরও খবর



ঈদের আনন্দ থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয়: রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদেরকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। রাষ্ট্রপ্রধান বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে দেশবাসীকে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ঈদের আনন্দ মিলেমিশে উপভোগের অনুরোধ জানান।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তিনি দেশে ও প্রবাসে বসবাসকারী বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। এই ঈদের মধ্যেও ফিলিস্তিনসহ বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছেন উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি ফিলিস্তিনের নির্মমতার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন মানুষ হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো। তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করা।

মনে রাখতে হবে দুঃখ একলা ভোগ করা যায়, কিন্তু আনন্দ একলা ভোগ করা যায় না-সকলকে নিয়ে আনন্দ করতে হয়, বলেন রাষ্ট্রপতি।

মো. সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, ঈদ সবার মধ্যে গড়ে তুলুক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি আর ঐক্যের বন্ধন। ঈদুল ফিতরের শিক্ষা সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম উল্লেখ করে রাষ্ট্র প্রধান বলেন, মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য, পারস্পরিক সহাবস্থান ও সহযোগিতা- ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ঈদের আনন্দ থেকে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব কেউ যেন বঞ্চিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার ও তাগিদ দেন।

তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্মাট বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। এর আগে রাষ্ট্রপতি এবং তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা বঙ্গভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

রাষ্ট্রপতি রাজনীতিবিদ, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কূটনৈতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিচারক, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং বঙ্গভবনের সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



৮ ঘণ্টা পর নিভল খুলনার জুট মিলে লাগা আগুন, চলছে ডাম্পিং

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

প্রায় ৮ ঘণ্টা পর খুলনার রূপসা উপজেলার জাবুসায় সালাম জুট মিলে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ও নৌবাহিনীর দুইটি ইউনিটের প্রচেষ্টায় বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত ২টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন চলছে ডার্মিংয়ের কাজ চলছে। এ ঘটনায় জুট মিলের চারটি গোডাউনে থাকা কাঁচা পাট ছাড়াও প্রক্রিয়াজাত করা সব পাটই পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন লাগা জুট মিলে কোনো ধরনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। বারবার এ বিষয়ে নোটিশ দেয়া হলেও মালিকপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অন্যদিকে, পাটের আগুন হওয়ায় নিয়ন্ত্রণে আসতে এত সময় লেগেছে।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, আমার স্টেশনের ১১টা ইউনিট কাজ করেছে। আমারও একটি গাড়ি আছে, তবে সেটি অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার গাড়ি না। সেটা না ধরলে ১০টা ইউনিট হবে। আর প্রতিটি গাড়িতে দুইটি করে পাম্প থাকে। আমরা ২০টা পাম্প সেট করেছি, কমপক্ষে ২২-২৩ লাইন খুলেছি। পরে দেখলাম আমরা একটা প্রান্তে ঢুকতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত আমার একটি ইউনিট রয়েছে, যেটা কোথাও কাটাকাটি করা লাগলে আমরা ব্যবহার করি। সেটিকে রেসকিউ ইউনিট বলা হয়। পরে ওই ইউনিট দিয়ে আমরা পেছন থেকে দুইটা দেয়াল কাটি।

তিনি বলেন, জুট মিলের দেয়ালগুলো ১২ ইঞ্চির। আর এটা একটা জেলখানার মতো জায়গা। ১২ থেকে ১৫ ফুট উঁচু করছে যেন মানুষ অপরপাশ দিয়ে না আসতে পারে। একটা করিডোরও তো রাখা যেতো। ২টা মানুষ যে এক্সিট হবে সে পথ রাখে নাই। দুইটা গেট রাখতো।

এর আগে বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খুলনার এই জুট মিলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পরে খবর পেয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট। এরপর একে একে আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয় ১১টি ইউনিট। সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় নৌবাহিনীর ২টি ইউনিট।

এদিকে, জুট মিলের মালিক এম এম এ সালাম জানিয়েছেন, আগুনে প্রায় ৭৫০ টন রপ্তানি উপযোগী পাটজাত পণ্য ছাড়াও প্রায় ৩৫ হাজার মণ কাঁচা পাট এবং মিলের যন্ত্রপাতি পুড়ে গেছে। সবমিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১২৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া কন্টিনেন্টাল ইনস্যুরেন্সে তার ৫০ কোটি টাকার ইনস্যুরেন্স করা ছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।

নিউজ ট্যাগ: খুলনা জুট মিল

আরও খবর