উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় মোখা'র পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিনরাত নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠনগুলো।
রবিবার (১৪ মে) জেলার বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ঘুরে দেখা যায় পৃথক পৃথক স্থানে (৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত) পতাকা টানানো হয়েছে। সিপিপি ও রেডক্রিসেন্টের বিভিন্ন টিম মাইকিং করে বিপদকালীন প্রস্তুতিসহ নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বরগুনা ইউনিটের সদস্য তানজিলা আক্তার রিমা বলেন, যখনই কোন দুর্ঘটনা বা ঘূর্ণিঝড় আসে আমাদের সদস্যরা সেখানেই ছুটে যায়। এক কথায় আমরা সব সময় সবার পাশে থাকার চেষ্টা করছি সকল পরিস্থিতিতে। তেমনিভাবে ঘূর্ণিঝড় মোখা'র সকল প্রস্তুতিতে আমাদের টিম প্রস্তুত রয়েছে।
সদর ইউনিয়নের সিপিপির ইউনিট প্রধান ইউপি সদস্য পিন্টু বলেন, ঝড় তুফান যায় আসুক না কেন আমরা সবসময়ই জনগণের জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন স্থানে আমাদের ৮ নং মহাবিপদ সংকেতের পতাকা টানানো রয়েছে যাতে করে গ্রামের মানুষ একটু হলেও হুঁশিয়ারি হতে পারে। এখনো আমাদের টিম মাঠে আছে আবহাওয়া পরিস্থিতি বুঝে কাজ করে যাচ্ছি।
আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের টিম লিডার গাজী জিয়াউল হক তুহিন বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই আমরা প্রতিনিয়ত মানুষকে সতর্ক করছি। রিকশায় করে মাইকিং চলছে। ছোট ছোট রাস্তায় হ্যান্ড মাইক ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখছি যাতে করে কোন সমস্যা না হয়। ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' মোকাবিলায় আমরা সদা সব সময় কাজ করে যাচ্ছি।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির(সিপিপি)র বরগুনার উপ-পরিচালক মোঃ গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা সব সময়ই দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করে যাই নিজেদের জীবন বাজি রেখে। জেলায় আমাদের মোট সিপিপির- ৮৪৬০জন কর্মী রয়েছে। এবছর উপকূলীয় জেলা বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় মুখার প্রভাবে ৮ নং মহাবিপদ সংকেত দেখা দিলে আমাদের কর্মীরা বিভিন্ন ইউনিটে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের পাশাপাশি আরো অনেক সংগঠন ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছে। বিপদকালীন প্রস্তুতিসহ নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য মানুষের মাইকিং করে আহবান জানানো হচ্ছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়ন,উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মিটিং করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ ৮৪০০০০ টাকা, ১৪২ বান্ডিল টিন, ২৯৪.০০ মে.ট: চাল, ২০০০কম্বল, শুকনো খাবারসহ বরগুনায় ৩টি মুজিব কেল্লা, বরগুনা সদরে উপজেলায় ১৮৫ টি, আমতলী উপজেলায় ১১১টি, তালতলী উপজেলায় ৫৩টি, পাথরঘাটা উপজেলায় ১২৪ টি, বেতাগী উপজেলায় ১১৪ টি, বামনা উপজেলায় ৫৫ টিসহ মোট ৬৪২টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ সিপিপি- ৮৪৬০জন, রেড ক্রিসেন্ট ৩০০ জন, জাগনারী১৫০জন, ব্রাক ৩৫৫ জন, রোভার স্কাউট ৩৫০জন, উৎসর্গ ফাউন্ডেশন ১৫০ জন সহ প্রায় মোট ৯৬১৫ জন সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক মেডিক্যাল টিম