সাভার থেকে আসাদুজ্জামান খাইরুল
সাভারের শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজের আলোরন করা বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে রানীর মৃত্যুর পর ওয়ার্ল্ড বুক অফ গিনেস এর স্বীকৃতি নিয়ে এবার প্রকাশ্যে আসলো শিকড় এগ্রোর অন্য আরেকটি গরু চারু। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুকে জায়গা করে নিয়েছে চারু নামের এই খর্বাকৃতির গরুটি।
শেখর অ্যাগ্রো কর্তৃপক্ষ গিনেসের স্বীকৃতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত গোপনীয়তায় রাখেন খর্বাকৃতি বামন জাতের এই গরুটির বিষয়ে।
গত মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) গিনেস কর্তৃপক্ষ চারুকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট জীবিত গরুর স্বীকৃতি দিয়ে ইমেইল পাঠায়।
এর আগে,২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে ২০ ইঞ্চি, লম্বা ২৪ ইঞ্চি ও ২৬ কেজ ওজনের রানী গিনেস বুকে মৃত গরু হিসেবে রেকর্ড গড়ে। গত ১৯ আগস্ট দুই বছর বয়সে অসুস্থ হয়ে মারা যায় রানী।
এর পরপরই ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর গিনেস বুকে শেকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ খর্বাকৃতি গরু চারুর জন্য ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন করে।
খামার কর্তৃপক্ষ জানায় উচ্চতায় ২৩.৫০ ইঞ্চি, লম্বা ২৭ ইঞ্চি ও ৩৯ কেজি ওজনের, চারুর জন্ম ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। চার দাঁতের গরুটির এখন আড়াই বছর বয়স চলছে।
দেখভালের দায়িত্বে থাকা খামারের কর্মচারীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছে চারুর সেবা যত্নে।
শিখর এগ্রো লিমিটেডের কর্মচারী মো. মামুন বলেন, আমাদের শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজের অনেক রকমের পশু-পাখি পালন করি। রাণী মারা যাওয়ার পর প্রায় ছয় মাস আগে চারুকে আমরা সিলেট থেকে সংগ্রহ করেছিরাম। যেভাবে রাণীকে সংগ্রহ করা হয়েছে, সেভাবেই চারুকে আনা হয়। এরপর থেকে এই খামারে চারুকে প্রাকৃতিক খোলামেলা পরিবেশে পালন করছি।
তিনি বলেন, আগে যেহেতু রাণী মারা গেছে, তাই চারুর প্রতি একটু বেশি যত্ন নেই। কর্মকর্তারা এখানে আনার পর ওর নাম চারু দিয়েছে। গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী একাধিকবার চারুর মাপের ছবি এবং ভিডিও পাঠানো হয়েছে। শিকড় অ্যাগ্রোর পশু চিকিৎসক প্রতি দু’সপ্তাহ পরপর চারুকে দেখতে আসেন এবং ওজন, শরীর চকচকে আছে কি না, গঠন বাড়ছে কি না এসব পরীক্ষা করেন।
খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও কাজী সুফিয়ান বলেন, রানীর জীবদ্দশায়ই আমাদের সংগ্রহশালায় নতুন চমক হিসেবে যোগ হয় ৪ দাঁতের প্রাপ্তবয়স্ক দেশীয় প্রজাতির বামন গরু চারু। যার উচ্চতা ২৩.৫‘’, লম্বা ২৭’’ এবং ওজন ৩৯ কেজি। যাকে বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে জীবিত ছোট গরু হিসেবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ স্বীকৃতি দিয়েছে।
অল্প কয়েকদিনেই রাণীর উল্লেখযোগ্য ভক্ত তৈরি হয়েছিল। আর তাই বেশিরভাগ মানুষই রাণীর মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি। আমরা অনেক টাকায় বিক্রির অফার পেয়েও কেন বিক্রি করিনি সেটা নিয়ে অনেকে বিদ্রূপ করেছে। কেউ কেউ গাফেলতির কথা বলে আমাদের বকাও দিয়েছেন। তখন ভীষণ খারাপ লাগলেও আমরা পরিস্থিতি মেনে নিয়েছিলাম। আসলে রাণীর প্রতি সবার ভালবাসাটা আমরা বুঝতাম। তাই চারুর ক্ষেত্রে আমরা প্রথম থেকেই গোপনীয়তা অবলম্বন করি।
তিনি আরও বলেন, রাণীর মৃত্যুর পর গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ শোক প্রকাশ করে আমাদের ইমেইল পাঠায়। তারা জানায়, এবং আমাদের কাছে প্রতিযোগিতা করার মত কিছু থাকলে ইচ্ছা করলে আবার অংশ নিতে পারব। আর তখনই রানীর মৃত্যুর পরপরই খর্বাকৃতি গরু চারুর বিষয়টি নিয়ে আমরা আবেদন করি। যারা শিকড় অ্যাগ্রো সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন, আমাদের সুদক্ষ এবং নির্ভরশীল কর্মীরা প্রতিদিনই দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়ায়। মঙ্গলবার গিনেস বুক কর্তৃপক্ষ মেইলের মাধ্যমে চারুকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট জীবিত গরু হিসেবে আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন।