পটুয়াখালীর গলাচিপায়
মেহেদীর রঙ মুছতে না মুছতেই নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায়
উপজেলার ছোট চতরা গ্রামে নববধূর স্বামীর নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ)
রাতে ডাকুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত নারীসহ তিনজনকে
গ্রেফতার করেছে।
নিহত রোমানা আক্তার
(১৯) ওই গ্রামের বেল্লাল হাওলাদারের (২৮) স্ত্রী ও দশমিনা উপজেলার পশ্চিম আলীপুরা গ্রামের
বাবুল হাওলাদারের মেয়ে।
গ্রেফতারকৃতরা
হলেন, নববধূর দেবর টিপু ফেরদাউস (১৮), শাশুড়ি ঝরনা বেগম (৪৫) ও ননদ সীমা বেগম (২২)।
এ ঘটনায় নববধূর মা সাজেদা বেগম (৪৫) বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে
ও অজ্ঞাত ২/৩ জনের বিরুদ্ধে গলাচিপা থানায় মামলা দায়ের করেন।
আজ বুধবার গ্রেফতারকৃতদের
আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন গলাচিপা
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম।
মামলার বিবরণে
জানা যায়, গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের ছোট চতরা গ্রামের শহিদুল হাওলাদারের ছেলে
বেল্লাল হাওলাদারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দশমিনা উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম আলীপুরা
গ্রামের বাবুল হাওলাদারের মেয়ে রোমানা বেগমের পারিবারিক সম্মতিতে গত তিন মাস আগে বিয়ে
হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রোমানার
ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। ক্রমেই নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে।
অবশেষে মঙ্গলবার
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শ্বশুর বাড়ি থেকে লাশ হয়ে ফিরল নববধূ রোমানা। শ্বশুর বাড়ির লোকজন
শ্বাসরুদ্ধ করে রোমানাকে হত্যা করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে
ফেলে রেখে চলে যায় এমনটাই অভিযোগ করেন রোমানার মা সাজেদা বেগম। সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ
উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালীর মর্গে প্রেরণ করে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ টিপু
ফেরদাউস, ঝরনা বেগম ও সীমা বেগমকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় নববধূর মা সাজেদা বেগম বাদী
হয়ে গলাচিপা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, নববধূর গলায় নখের আঁচড় ও জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় দেবর, ননদ ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।