কেবল রাজধানী
ঢাকা কিংবা জেলা শহরগুলোতে নয়, মফস্বলের মাঠপর্যায়ের হেফাজত নেতারাও গ্রেপ্তার আতঙ্কে
বাড়ি ছাড়া হয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে রাত কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
২০১৩ সালের ৫
মে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে বিশাল জনসমাগমের পর আবারও সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে
আলোচনায় উঠে আসে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। মার্চে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর
জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন উপলক্ষে দেশব্যাপী জ্বালাও-পোড়াও
আন্দোলন শুরু করে সংগঠনটি।
এর পর থেকে হেফজতের
দিকে গভীরভাবে নজরদারি করতে শুরু করে সরকার। আইন প্রয়োগকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো
বলছে, ওইসব তাণ্ডবে হেফাজতের যেসব নেতাকর্মীরা ইন্ধন যুগিয়েছে অনুসন্ধান চালিয়ে তাদের
একে একে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নাশকতা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করতে সারা দেশকে কেন্দ্র
করে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
হেফজতের বর্তমান
নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন
হেফাজতে ইসলামের
বর্তমান নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে। চলমান প্রেক্ষাপটে
হেফাজতের কোনো কোনো নেতা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা বললেও সংগঠনটির এখনকার নেতৃত্ব
নিয়েই সরকার এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতিবাচক মনোভাব বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ পেয়েছে।
ধাপে ধাপে গ্রেপ্তার
হচ্ছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা
হেফাজতের নেতাদের
অভিযোগ, এ পর্যন্ত তাদের সংগঠনের আলোচিত নেতা মামুনুল হকসহ ১৬ জন কেন্দ্রীয় নেতা এবং
মাঠপর্যায়ে শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও নজরদারীতে রয়েছে শীর্ষ পর্যায়ের
প্রায় অর্ধশত নেতা।
সরকারের সঙ্গে
আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যেতে চায় হেফাজত
হেফাজতে ইসলামের
একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, চলমান পরিস্থিতিতে এখনই আন্দোলনের কর্মসূচিতে
যাওয়ার পক্ষে নন তারা। বরং সংগঠনের নেতৃত্বে মুরব্বি এবং অরাজনৈতিক নেতা যারা আছেন,
তাদের মাধ্যমে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টাকেই উত্তম পথ বলে তারা মনে
করছেন।
সম্প্রতি এক প্রেস
বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদী বলেছেন, পুরো পরিস্থিতি
হেফাজতকে সংকটে ফেলেছে। এখন তারা গ্রেপ্তারকৃতদের জন্য আইনি লড়াই চালাবেন এবং একই সঙ্গে
তারা সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছেন।
যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্প্রতি হেফাজতের
সঙ্গে নিজ বাসায় বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ ও সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী-নেতারা
যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি বিশ্লেষণ করলেও যে বিষয়টি প্রতীয়মান হয় তা হলো- সরকার বা প্রশাসন
ঢালাওভাবে হেফাজতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে না, বরং সরকার কৌশলী ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ
গ্রহণ করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোনো গণগ্রেপ্তার
হচ্ছে না। যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, ঠিক তাদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।