আজঃ শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24
শিরোনাম

হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image
প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মান উনয়নের মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও গাঙ্গেয় ডলফিনের আবাসস্থল সংরক্ষণের লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিবেশগত মান উনয়নের মাধ্যমে রুই জাতীয় মাছের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও গাঙ্গেয় ডলফিনের আবাসস্থল সংরক্ষণের লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় ও মানিকছড়ি উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, রাউজান, হাটহাজারী উপজেলা এবং পাঁচলাইশ থানার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী এবং নদী তীরবর্তী ৯৩ হাজার ৬১২টি দাগের ২৩ হাজার ৪২২ একর জমিকে বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করে।

সরকারের গেজেট অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ এলাকায় ১২টি শর্ত কার্যকর হবে। শর্তগুলো হলো:

এ নদী থেকে কোনো প্রকার মাছ ও জলজ প্রাণী ধরা বা শিকার করা যাবে না। তবে মৎস্য অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ে মাছের নিষিক্ত ডিম আহরণ করা যাবে। 

প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী কোনো প্রকার কার্যকলাপ করা যাবে না। 

ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে, এমন সব কাজ করা যাবে না। 

মৎস্য ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর কোনো প্রকার কার্যাবলী করা যাবে না। 

নদীর চারপাশের বসতবাড়ি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পয়ঃপ্রণালী সৃষ্ট বর্জ্য ও তরল বর্জ্য নির্গমণ করা যাবে না। 

কোনো অবস্থাতেই নদীর বাঁক কেটে সোজা করা যাবে না। 

হালদা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ১৭টি খালে প্রজনন মৌসুমে (ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই) মৎস্য আহরণ করা যাবে না। 

হালদা নদী এবং এর সংযোগ খালের ওপর নতুন করে কোনো রাবার ড্যাম এবং কংক্রিট ড্যাম নির্মাণ করা যাবে না। 

বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটির অনুমতি ব্যতিরেকে হালদা নদীতে নতুন পানি শোধনাগার, সেচ প্রকল্প স্থাপনের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা যাবে না। 

পানি ও মৎস্যসহ জলজ প্রাণীর গবেষণার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ তদারকি কমিটির অনুমতিক্রমে হালদা নদী ব্যবহার করা যাবে। 

মাছের প্রাক প্রজনন পরিভ্রমণ সচল রাখার স্বার্থে হালদা নদী এবং সংযোগ খালের পানি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। 

রুই জাতীয় মাছের প্রাক প্রজনন এবং প্রজনন মৌসুমে (মার্চ-জুলাই) ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করতে পারবে না।


আরও খবর



রাজধানীতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ৬

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ভোর ৪টার দিকে মিরপুরের ভাসানটেক ১৩ নম্বর কালবার্ট রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

দগ্ধরা হলেন মেহরুন্নেছা (৬৫), সূর্য বানু (৩০), লিজা (১৮), লামিয়া (৭), সুজন (৯) ও মো. লিটন (৫২)। এরমধ্যে মেহরুন্নেসার ৪৭ শতাংশ, সূর্য বানু ৮২ শতাংশ, লামিয়া ৫৫ শতাংশ, মো. লিটন ৬৭ শতাংশ, লিজার ৩০ শতাংশ এবং সুজনের ৪৩ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

জানা গেছে, পরিবার নিয়ে ওই বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকেন ফার্নিচার ব্যবসায়ী লিটন মিয়া। শুক্রবার ভোরে মশার কয়েল জ্বালাতে গেলে ঘরের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণ হয়। এতে নারী-শিশুসহ ওই পরিবারের ৬ জন দগ্ধ হয়। পরে তাদেরকে দ্রুত উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তরিকুল ইসলাম জানান, দগ্ধদের জরুরি বিভাগের অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।


আরও খবর
শিশু হাসপাতালে আগুন নিয়ন্ত্রণে

শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪




শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনের এক অনন্য হাতিয়ার পানি: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ব্যক্তি হতে বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি-সম্প্রীতি স্থাপনে পানি এক অনন্য হাতিয়ার বলে মন্তব্য করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব সংকট বাড়ছে, তার অন্যতম সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভূ-উপরস্থ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির গুণগত মান বজায় রাখা, জলাধারের পানি প্রবাহ অটুট রাখা, পানির বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবহার ও সামাজিকভাবে পানি সংরক্ষণ এবং পানির অপচয়রোধে সচেতনতার প্রসার সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক-আঞ্চলিক-জাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রমকে ত্বরান্বিতকরণে ভূমিকা রাখবে।’

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর পানি ভবনের হলরুমে বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন। শান্তির জন্য পানি’ প্রতিপাদ্যের আলোকে দিবসের শুরুতে বর্ণাঢ্য র‍্যালি পানি ভবন হতে সার্ক ফোয়ারা প্রদক্ষিণ করে। আলোচনা শেষে একটি ভার্চুয়াল স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ: উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগানের আলোকে পানি খাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়নের সবাইকেই সচেষ্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ও মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে যাচ্ছেন। তার হাত ধরে স্মার্ট  বাংলাদেশের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।

অনুষ্ঠানে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা। আলোচনা করেন পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক, রেজাউল মাকছুদ জাহেদী ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ খান। দিবসের প্রতিপদ্যের ওপর আলোচনা করেন ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের (আইডাব্লিউএম) নির্বাহী পরিচালক মো. জহিরুল হক খান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এক প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি বছর ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস পালন করা হয়। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিওতে এ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সেখানে পানিসম্পদের জন্য একটি বিশেষ দিন ঘোষণার দাবি তোলা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয় এবং এরপর থেকে এ দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে।


আরও খবর



দেশে এলো এক হাজার টন আলু

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

চাহিদা বাড়ায় যশোরের শার্শার বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আবারও ভারত থেকে আলু আমদানি করা হয়েছে। চার চালানে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে এক হাজার মেট্রিক টন আলু এসেছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে গত ১৩ মার্চ ৮ ট্রাকে ২০০ টন, ১৪ মার্চ ৮ ট্রাকে ২০০ টন, ১৯ মার্চ ১২ ট্রাকে ৩০০ মেট্রিক টন এবং শেষ ২৪ মার্চ রাতে আরও ১২ ট্রাকে ৩০০ টন আলু আমদানি করা হয়। আলুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইন্টিগ্রেটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস।

মিজানুর রহমান বলেন, আলুর চালান বন্দর থেকে খালাস নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছে ট্রান্সমেরিন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আশা করি, দ্রুতই খালাস হয়ে যাবে।

এদিকে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, আমদানিকৃত আলুর তিনটি চালানের ৭০০ টন এরইমধ্যে বন্দর থেকে ছাড়করণ করা হয়েছে। শেষ চালানের ১২ ট্রাকের ৩০০ টন আলু বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ ডিসেম্বর তিন ট্রাকে ৭৪ টন আলু আমদানি হয়। এরপর চলতি বছরের মার্চ মাসে চারটি চালানে আরও এক হাজার টন আলু আমদানি করা হয়েছে।


আরও খবর
ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪




প্রতি কি‌লো‌মিটা‌রে বাস ভাড়া কমছে ৩ পয়সা

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রতি কি‌লো‌মিটা‌র বাস ভাড়া ৩ পয়সা কমছে। ডিজেলের দাম ২ দফায় লিটা‌রে ৩ টাকা কমায় বাংলাদেশ সড়ক প‌রিবহন কর্তৃপ‌ক্ষের (বিআরটিএ) ভাড়া নির্ধারণ কমিটি এ সুপা‌রিশ ক‌রে‌ছে।

আজ সোমবার রাজধানীর বনানীতে বিআরটিএ সদর দপ্তরে ভাড়া নির্ধা‌রণ ক‌মি‌টির সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাস মা‌লিকরাও ভাড়া কমা‌নোর সুপা‌রিশে একমত পোষণ করেন।

ক‌মি‌টির সুপারিশ অনুযায়ী, দূরপাল্লার বা‌সে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা থেকে কমিয়ে ২ টাকা ১২ পয়সা এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২ টাকা ৪৫ টাকা থেকে কমিয়ে ২ টাকা ৪২ টাকা করার প্রস্তাব করা হয় হয়েছে।

সরকা‌রের অনু‌মোদন পে‌লে হ্রাসকৃত ভাড়া কার্যকর হ‌বে।

এ বিষয়ে বিআর‌টিএ চেয়ারম‌্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, ভাড়া কমা‌নোর সুপা‌রিশ আজই মন্ত্রণাল‌য়ে পাঠা‌নো হ‌বে। সরকার প্রজ্ঞাপন জা‌রি কর‌লে তা কার্যকর হ‌বে।

নিউজ ট্যাগ: বুয়েট বিআরটিএ

আরও খবর



রেলের টিকিট কালোবাজারি: সহজ ডটকমের দুই কর্মীসহ গ্রেফতার ৯

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের অন্যতম হোতা সহজ ডটকমের পিয়ন মো. মিজান ঢালী ও সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাসসহ নয়জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র‍্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)।

এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে কালোবাজারির আলামত এবং অবৈধভাবে সংগ্রহ ও মজুত করা বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট।

র‍্যাব জানায়, ২০০৩ সালে কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেন মিজান। পরে CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি সহজকে দেওয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে। মিজান দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

অন্যদিকে নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট কর্মী হিসেবে সিএনএস বিডিতে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান। ২০২০ সালে সহজের সঙ্গে চুক্তি হলে তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান।

র‍্যাব আরও জানায়, সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতেন। মিজান ও নিউটন দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৩।

গ্রেফতাররা হলেন মো. মিজান ঢালী (৪৮), মো. সোহেল ঢালী (৩০), মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৬), মো. সবুর হাওলাদার (৪০) ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)।

এসময় জব্দ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল পরিমাণ টিকিট, ৮টি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রয়ের নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দেন।

শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

সহজ ডটকমের পিয়ন কে এই মিজান ঢালী

তিনি বলেন, দেশব্যপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজানের নেতৃত্বে এই চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় সকল ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল। মিজান দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

২০০৩ সালে সে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান ডেফোডিলের কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বুকিং এ CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি Sohoz.com-কে দেয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, দীর্ঘদিন টিকিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকায় সারাদেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের অফিসে এবং বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে মিজানের পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।

এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই সে বিভিন্ন স্টেশনে থাকা সহজ ডটকমের সদস্য, টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য কালোবাজির চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টিকিট বিক্রি করতো।

তিনি বলেন, সহজ ডটকমের কমলাপুর রেলস্টেশন সার্ভার রুমের সার্ভার অপারেটর গ্রেফতার নিউটন বিশ্বাস, স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ গ্রেফতার সবুর হাওলাদারসহ এবং পলাতক আব্দুল মোত্তালিব, আশিকুর রহমানসহ আরও কয়েকজন টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিশেষ করে ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতার মিজান ও সোহেল বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ সময়ের তুলনায় অধিক সংখ্যক টিকিট সংগ্রহ করতো। গ্রেফতার মিজান ও সোহেল প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের কর্মচারী ও টিকিট কাউন্টারম্যানদের মাধ্যমে প্রায় ২-৩ হাজার রেলওয়ের টিকিট কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রি করতো। তারা আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের চাইতেও বেশি সংখ্যক টিকিট সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা করছিল।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে ৫০ ভাগ Sohoz.com ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারম্যানরা পেতো এবং বাকি ৫০ ভাগ সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী সহযোগীদের মাঝে ভাগাভাগি হতো।

এই অর্থ কখনো তারা নগদ হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিতো আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতো। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০/২৫ হাজার টাকা উপার্জন করতো। এভাবেই পরষ্পরের যোগসাজশে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দেশব্যাপী ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে আসছিল।

গ্রেফতার সোহেলকে গ্রেফতার মিজান তার আত্মীয় হিসেবে সুপারিশ করে প্রথমে CNS.bd তে চাকরি পাইয়ে দেয় এবং পরবর্তীতে Sohoz.com এ চুক্তিবদ্ধ হলে কমলাপুর শাখায় অফিস সহকারী হিসেবে তারও চাকরি বহাল থাকে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, পরবর্তীতে গ্রেফতার সোহেল ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করে। গ্রেফতার সোহেল অফিস সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় প্ল্যাটফর্মের টিকিট বুকিং কাউন্টারে বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত আনাগোনা থাকতো। একপর্যায়ে সোহেল কাউন্টারে টিকিট বুকিংয়ের দায়িত্বে থাকা কাউন্টারম্যানদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে এবং কাউন্টারম্যানদের যোগসাজশে বিভিন্ন কারসাজি করে বিপুল পরিমাণ টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজির মাধ্যমে অধিক মূল্যে বিক্রি করতো।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যসহ গ্রেফতার সুমন, শাহজালাল, জাহাঙ্গীর, জয়নাল, ও রাসেল সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে ট্রেনের টিকিটের চাহিদা দিতো। পরবর্তীতে তাদের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেফতার মিজান ঢালী অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রির জন্য তাদের কাছে সরবরাহ করতো।

তিনি বলেন, গ্রেফতার সুমন রেলওয়ের সঙ্গে এক সময়ের চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান CNS.bd তে চাকরি করতো। পরবর্তীতে Sohoz.com এর সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর সে চাকরি বাদ দিয়ে গ্রেফতার মিজান ও সোহেলের মাধ্যমে ঢালী সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়ে অবৈধভাবে সংগ্রহকৃত ট্রেনের টিকিটগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রি শুরু করে।

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, গ্রেফতার শাহজালাল একজন পাঠাও চালক, গ্রেফতার জাহাঙ্গীর কমলাপুরে অবস্থিত একটি আবাসিক হোটেলের ক্লিনার, গ্রেফতার রাসেল একই আবাসিক হোটেলের বয় এবং গ্রেফতার জয়নাল অপর একটি আবাসিক হোটেলের বয়। তারা তাদের এসকল কর্মস্থলে কাজের পাশাপাশি সবসময় অবৈধ উপায়ে টিকিটপ্রত্যাশী যাত্রী জোগাড় করে কালোবাজারির মাধ্যমে সংগ্রহকৃত টিকিটগুলো নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি করতো।

হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেনের টিকিটপ্রত্যাশীদের কাছে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে টিকিটগুলো প্রেরণ করতো।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট হিসেবে CNS.bd-তে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে ২০২০ সালে Sohoz.com এ চুক্তিবদ্ধ হলেও তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পায়। সে সার্ভার অপারেটর হওয়ায় বিভিন্ন ট্রেনের সিডিউল ও টিকিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতো বিধায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজানকে তথ্য প্রদান করতো। গ্রেফতার সবুর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের Sohoz.com এর স্টেশন রিপ্রেজেন্টেটিপ হিসেবে চাকরি করতো। গ্রেফতার সবুর সিন্ডিকেটের মূলহোতা গ্রেফতার মিজানের সঙ্গে ট্রেনের টিকিট কালোবাজির সঙ্গে জড়িত।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সহজ ডটকম টিকিট কালোবাজারির দায় এড়াতে পারে না। তাদের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল।

আসন্ন ঈদুল ফিতরে টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে কি কি পদক্ষেপ নেবে র‍্যাব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আর কিছুদিন পরেই টিকিট অনলাইনে ছাড়বে। টিকিট কালোবাজারি ঠেকাতে এনএসআই ও র‍্যাবের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।


আরও খবর