গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে হামাসের প্রধান
কমান্ড সেন্টার ইসরায়েলি সেনারা ধ্বংস করেছে বলে দাবি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর
(আইডিএফ)। শনিবার (৬ জানুয়ারি) ইসরায়েলের তেল আবিবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি।
তিনি জানান, ইসরায়েলি স্থল ও বিমান বাহিনীর
গত তিন মাসের অভিযানে উত্তর গাজায় হামাসের মূল কমান্ড সেন্টারের ধ্বংসের পাশাপাশি নিহত
হয়েছেন গোষ্ঠীটির প্রায় ৮ হাজার যোদ্ধা। নিহতদের মধ্যে কমান্ডার ও সাধারণ যোদ্ধা দাবি
এই মুখপাত্রের।
আন্তর্জাতিক এক গণমাধ্যম হাগারির সম্মেলননের বিষয়টি প্রকাশ করেছে। 'উত্তর গাজায় হামাসের সামরিক বিভাগের চেইন অব কমান্ড সর্ম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে' উল্লেখ করে হাগারি বলেন, গোষ্ঠীটির যে কয়েকজন যোদ্ধা এখনও অবশিষ্ট রয়েছে, তারা বিক্ষিপ্ত ভাবে অপারেশন চালাচ্ছে। সেখানে অভিযানরত ইসরায়েলি সেনারা উত্তর গাজায় অভিযান শেষ করে বর্তমানে উপত্যকার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রসর হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন হাগারি।
আরও পড়ুন>> গাজায় দিনভর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১২৫
এর আগে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে হামাস যোদ্ধারা অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থলবাহিনীও। ইসরায়েলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ২২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরী এবং বয়স্ক লোকজন। তার মধ্যে গত শনিবার নিহত হয়েছেন ১২০ জন। আহত হয়েছেন আরও ৫৪ হাজার ৯৬৮ জন এবং এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৭ হাজার জন। এছাড়া হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর-সহায় সম্বল হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনীর গত ৩ মাসের অভিযানে নিহত বাস্তুহারা হয়েছেন অন্তত ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি।
আরও পড়ুন>> রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করা বিদেশিদের নাগরিকত্ব দেবেন পুতিন
অপরদিকে, হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলায়
ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি,
ইসরায়েলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে সেদিন জিম্মি হিসেবে
ধরে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। তাদের মধ্যে এখনও মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছেন ১২৯ জন জিম্মি।
ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বার্তায় বলেন, আমাদের এই অভিযানের লক্ষ্য হলো হামাসকে নির্মূল
করা, তাদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের উদ্ধার করা এবং গাজা যেন ভবিষ্যতে ইসরায়েলের জন্য
হুমকি না হয়ে উঠতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা। যতদিন না পূর্ণ বিজয় অর্জিত হয়, ততদিন সবকিছু
একপাশে রেখে আমরা এগিয়ে যাব।