বিশেষজ্ঞদের
এক কথায় উত্তর, ‘না’। বরং তাদের বক্তব্য, ইসরায়েল অভিযান চালিয়ে হামাস নেতাদের মারতে পারে।
কিন্তু তাদের মতাদর্শ ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
বিশেষজ্ঞদের
একটি বড় অংশের বক্তব্য, রাজনৈতিক সমাধানই এই সংঘাত শেষ করার একমাত্র রাস্তা। কিন্তু
ইসরায়েলের বক্তব্য খুব পরিষ্কার। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু থেকে শুরু করে সরকারের প্রায়
সমস্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা একাধিকবার জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের এক এবং একমাত্র লক্ষ্য
হামাস নেতাদের নির্মূল করা।
সম্প্রতি নেতানিয়াহু
জানিয়েছেন, হামাস নেতারা যদি আত্মসমর্পণ করেন, তাহলে তাদের প্রাণভিক্ষা দেওয়া হবে।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতেও বার বার একটি স্লোগান দেখাচ্ছে- ‘টুগেদার উই উইন’ অর্থাৎ, আমরা একসঙ্গে লড়ে জিতব।
কিন্তু সত্যিই কি এই বিজয় সম্ভব? বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ মনে করছেন না।
৭ অক্টোবরের ঘটনার পর থেকে ইসরায়েল গাজা স্ট্রিপে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে চলছে। সেনাবাহিনী সেখানে অভিযান চালাচ্ছে। প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ বসবাস করেন এই গাজা স্ট্রিপে। কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। বহু হামাস নেতারও মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এইভাবে হামাসকে খতম করা সম্ভব নয়। কারণ, হামাস কেবলমাত্র একটি জঙ্গি সংগঠন নয়। জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের বিশেষজ্ঞ গুইডো স্টেইনবার্গের বক্তব্য, গাজা স্ট্রিপে অন্তত ২০ থেকে ৩০ হাজার হামাস যোদ্ধা আছে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, গাজা স্ট্রিপের মানুষ হামাসকে সমর্থন করে। তাদের কাছে হামাস একটি সামাজিক সংগঠন। যারা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে।
আরও পড়ুন>> হামাসকে আত্মসমর্পণের ডাক নেতানিয়াহুর
২০০৭ সাল থেকে
গাজা স্ট্রিপ পরিচালনা করছে হামাস। দাওয়াহ বলে তাদের একটি সামাজিক সংগঠন আছে। এই দাওয়াহ-তে
কাজ করে অন্তত ৮০ থেকে ৯০ হাজার মানুষ। তারা যোদ্ধা নন, ভল্যান্টিয়ার। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের
আরব স্টাডিসের অধ্যাপক রশিদ খালিদি জানিয়েছেন, ইসরায়েল গাজা স্ট্রিপে অভিযান চালাচ্ছে,
এর ফলে সেখানে হামাস নেতাদের মারা সম্ভব কিন্তু হামাসের রাজনৈতিক অবস্থান এবং মতাদর্শকে
ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
খালিদির বক্তব্য,
অভিযান চালিয়ে হামাসের নেতাদের ইসরায়েল খতম করতে পারে কিন্তু হামাসের রাজনৈতিক এবং
সামাজিক অবস্থানকে ধ্বংস করতে পারবে না। ফলে রাজনৈতিক সমাধানই এই সংঘাত শেষ করার একমাত্র
রাস্তা।