আজঃ বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

হাঁসের খামারে স্বাবলম্বী জয়পুরহাটের রেহেনা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
সুজন কুমার মন্ডল, জয়পুরহাট

Image

সংসারে অভাব অনটনের পরিবারে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে কিনে আনলেন ৩০টি হাঁস। খামারের অভিজ্ঞতা না থাকলেও ধীরে ধীরে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগের নানা প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে নিজেকে ঝালিয়ে নিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে অভিজ্ঞতা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হাঁসের সংখ্যাও।

মাত্র ৩০টি হাঁস দিয়ে শুরু করা পারিবারিক খামারে এখন হাঁসের সংখ্যা ১ হাজার ৬০০। পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়িতেই স্থাপন করেছেন একটি মিনি হ্যাচারি। এ হ্যাচারিতে ডিম থেকে হাঁসের বাচ্চাও উৎপাদন করছেন তিনি। এসব হাঁসের বাচ্চা সরবরাহ করছেন জয়পুরহাটসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায়।

গল্পটি জয়পুরহাটে খামারি রেহেনা বেগমের। এ খামার থেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। পরিবারকে করেছেন সচ্ছল। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের শাইলগুন গ্রামের সাহসী এই নারী হাঁসের খামার করে হয়েছেন নন্দিত।

কালাই উপজেলার মাত্রাই শালগুইন গ্রামের আজিজার রহমান ও আছিয়া বেগমের তৃতীয় সন্তান মোছা. রেহেনা বেগম। বাবার সামর্থ্য না থাকায় লেখাপড়া তেমন করা হয়নি তার। মাত্র ১৫ বছর বয়সে একই গ্রামের রেহেনার চেয়ে ১০ বছরের বড় ইউসুফ আলী সঙ্গে বিয়ে হয়। বর ইউসুফ সহজ সরল হওয়ায় পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হন। কিশোরী রেহেনা অপরিপক্ব বয়সের ঘোর লাগা চোখে চেয়ে দেখলেন ঘোর দুর্যোগ। এ অবস্থা সামাল দেবেন কীভাবে বুঝে উঠতেই বেগ পেতে হয় তাকে। এরপরও দমে যাননি রেহেনা। তখন থেকেই হাঁস ও মুরগি পালন করে সংসার চালিয়েছেন। এরই মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের মা হয়েছেন তিনি। বর্তমানে ছেলে ও স্বামী মিলে রেহেনার হাঁসের হ্যাচারি দেখাশোনা করেন।

নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খামারি রেহেনা বেগম বলেন, আমার পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। সে জন্য নিজের সচ্ছলতা বাড়ানোর জন্য ৩০টি হাঁস কিনে পালন শুরু করি। এরপর হাঁস ও ডিম বিক্রি করে লাভ হওয়ায় হাঁসের সংখ্যা আরও বাড়াতে থাকি। এখন আমার খামারে ১ হাজার ৬০০ হাঁস রয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক হাঁস প্রতিদিন ডিম দেয়। সেই ডিম তিন দিন পরপর বিক্রি করি।

অদম্য রেহেনার সহায়তায় এগিয়ে এসেছে স্থানীয় একটি এনজিও। তাদের কারিগরি সহায়তায় বাড়িতে একটি মিনি হ্যাচারি স্থাপন করেছেন রেহেনা। হ্যাচারির নাম দিয়েছেন মেসার্স রেহেনা হ্যাচারি। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। খামারে উৎপাদিত ডিম থেকে নিয়মিত এই হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদন হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে ডিম ও বাচ্চা।

রেহেনার এই খামারের বর্তমান খরচ ৩ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে তার। এ ছাড়া প্রতি মাসে ডিম ও বাচ্চা বিক্রি করেই ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হয় রেহেনার। 

প্রতিবেশী চান্দা আক্তার বলেন, রেহেনা বেগমের খামার দেখে খুব ভালো লাগছে। আমারও ইচ্ছা আছে এ রকম খামার করার। মোশারফ হোসেন নামের আরেক গ্রামবাসী বলেন, একজন নারী খামারি হয়ে এতটা সফল হয়েছে। এটা আমাদের সবার জন্যই গর্বের। সরকারি সহযোগিতা পেলে আমরাও হাঁসের খামার করব।

এ বিষয়ে জয়পুরহাট প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাফুজার রহমান বলেন, রেহেনা বেগম একজন সফল খামারি। আমরা তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এ ছাড়া যারা এ রকম খামার করছেন তাদের জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

নিউজ ট্যাগ: জয়পুরহাট

আরও খবর



সব সরকারি চাকরিজীবীর সম্পদের হিসাব নেবে সরকার

প্রকাশিত:রবিবার ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সম্পদের হিসাব দিতে হবে সব সরকারি চাকরিজীবীকে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি হতে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে। এখন কী পদ্ধতিতে কিভাবে জমা দেবে সে বিষয়ে আমরা ফরম্যাট রেডি করে দেবো।

পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীর নিজ সম্পদ বিবরণী নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়ার কথা। তবে চাকরির সেই আচরণবিধি আদতে মানছেন না তেমন কেউ। সম্পদের হিসাব দিতে সরকারি চাকরিজীবীর তেমন হেলদোল নেই। তাদের নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থারও হিসাব নেওয়ার ব্যাপারে নেই গরজ। দুপক্ষের অনীহায় হিসাব দেওয়ার বিষয়টি অনেকটাই কাগুজে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে দু-একটি তাদের অধীন কর্মকর্তাদের দায়সারা হিসাব নেয় বটে, কিন্তু সেগুলো খতিয়ে দেখা হয় না। কারও অস্বাভাবিক সম্পদ বেড়ে গেলেও ব্যবস্থা নেওয়ার নজির নেই। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হলো।

সদ্য সাবেক সরকারের মন্ত্রী এমপি, সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ ও এনবিআর থেকে বদলি হওয়া কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকে সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাবের বিষয়টি ফের সামনে এসেছে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সার্বিকভাবে দুর্নীতি বেড়েছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। বার্লিনভিত্তিক এ সংস্থাটি গত বছর দুর্নীতির যে ধারণা সূচক প্রকাশ করে, সেখানে আগের বছরের চেয়ে দুই ধাপ নিচে নামে বাংলাদেশ। সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন দশম।

জানা গেছে, পাঁচ বছর পরপর সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান ১৯৭৯ সালে চালু হয়। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারী আছেন। চাকরিজীবীর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণ বিধিমালায় এ নিয়ম যুক্ত করা হয়। তবে চার দশকের বেশি সময় ধরে এ নিয়ম পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। অতীতে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি মন্ত্রণালয় তাদের অধীন কর্মচারীর কাছে সম্পদের বিবরণী চেয়েও তেমন সাড়া পায়নি।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ মিয়া বলেন, নিয়ম অনুসারে প্রতি পাঁচ বছর পর ডিসেম্বরে সরকারি কর্মচারী তাদের সম্পদের হিসাব জমা দেবেন। আগে তা প্রতিবছর দেওয়ার নিয়ম ছিল। এখন পাঁচ বছরেও অনেকে তা দিতে চান না। তিনি বলেন, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসন গড়ে তোলার স্বার্থে এ আচরণবিধি কঠোর ও কঠিনভাবে সরকারের প্রয়োগ করা উচিত। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী অন্য মন্ত্রণালয় নিশ্চুপ থাকলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যেহেতু আচরণবিধি জারি করেছে, তাই তাদের মুখ্য ভূমিকা নেওয়া উচিত। ফিরোজ মিয়া বলেন, আচরণবিধি না মানলে তা অসদাচরণ। তাই সম্পদের হিসাব না দিলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা উচিত। এতে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ভীত হবেন এবং দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ না হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।

আচরণ বিধিমালা অনুসারে, নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার কথা। সরকারি চাকরিতে ক্যাডার রয়েছে ২৬টি। এসব ক্যাডার কর্মকর্তা তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করেন। সম্পদের হিসাবও নিজ নিজ মন্ত্রণালয়েই দেওয়ার কথা। ক্যাডার কর্মকর্তার বাইরেও সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বিপুলসংখ্যক নন-ক্যাডার কর্মকর্তা রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সরকারি কর্মচারীর ওপর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার ব্যাপারে কোনো চাপই নেই। ফলে এ সম্পদের প্রশ্নে স্রোতে গা ভাসিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সম্পদের হিসাব জমা দিতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হলে সে সময় সব কর্মচারী তা দিয়েছিলেন। নানা দিকে আলোচনা উঠলে ২০১৫ সালে আরেক দফা সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দিতে সরকার থেকে বলা হয়। তখন গুটিকয়েক মন্ত্রণালয় তাদের নিয়ন্ত্রিত কর্মচারীর সম্পদের হিসাব নিতে পারলেও বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়। বিশেষ করে সরকারি চিকিৎসকদের সম্পদের হিসাব চাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তখন বেশ বিপাকে পড়ে। চিকিৎসকের মধ্য থেকে এর জোরালো প্রতিবাদও ওঠে।

জানা গেছে, সরকারি কর্মচারীকে আচরণবিধি মানাতে না পেরে গত বছরের শেষের দিকে এ নিয়ম বদলে ফেলার উদ্যোগ নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরে আচরণবিধির সংশ্লিষ্ট ধারা (ধারা-১২ ও ১৩) সংশোধনের বিষয়টি সমালোচনার মুখে পড়লে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়।

একইভাবে মন্ত্রী-এমপির সম্পদ বিবরণী জনসমক্ষে প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা দীর্ঘদিন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। নির্বাচনের আগে প্রার্থী হিসেবে অনেকে যে হলফনামা নির্বাচন কমিশনে জমা দেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুসারে তা প্রকাশ করা হয় বটে। তবে সেখানে সম্পদের যে বিবরণ থাকে, এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে।

সরকারি কর্মচারী আইন (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর বিধি ১২ ও ১৩ অনুসারে সরকারি কর্মচারীর স্থাবর সম্পত্তি অর্জন, বিক্রি ও সম্পদ বিবরণী জমার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি জমি-বাড়ি-ফ্ল্যাটসহ যে কোনো সম্পদ কিনতে বা বিক্রি করতেও সরকারের অনুমতি নিতে হয় তাদের। সম্পদ কেনার ক্ষেত্রে টাকার উৎস সম্পর্কেও জানাতে হয়। আবার সম্পদ বিক্রি করা হলে দাম জানাতে হয়। কারণ, কমবেশি দামে সম্পদ বেচাকেনা হলো কিনা, তা যাচাই করার সুযোগ রাখা হয়েছে।

অভিযোগ আছে, একশ্রেণির সরকারি কর্মচারী তাদের আয়কর রিটার্ন বা এনবিআরে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে প্রকৃত সম্পদ দেখান না; বেনামে সম্পদ লুকিয়ে রাখেন। প্রতিটি আয়কর রিটার্ন ফরমের সঙ্গে আইটি ১০বি নামে একটি আলাদা ফরম থাকে। ওই ফরমেই সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হয়। সম্পদ বিবরণী জমার তিনটি শর্ত আছে। সে অনুযায়ী সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা পার হলে, গাড়ির মালিক হলে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় জমি-বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট থাকলে সম্পদ বিবরণী জমা বাধ্যতামূলক।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রশাসন ক্যাডারে চাকরিতে ঢোকার সময় নবীন কর্মকর্তারা শুরুতেই তাদের সম্পদের বিবরণী জমা দেন। প্রতি পাঁচ বছর পরপর সম্পদের হিসাবও তারা দেন। তবে অন্য ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়গুলো এ নিয়ে উদাসীন থাকায় তাদের কর্মকর্তারা সম্পদের হিসাব দেন না।

একাধিক সাবেক সচিব বলেন, আগে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া ছাড়াও নিজ নিজ দপ্তরে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সরকার গুরুত্ব দিয়েছিল। সরকারের এবারের লক্ষ্য, তাদের নিজ নিজ দপ্তরে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া। যেসব সরকারি কর্মচারী আয়কর বিবরণী জমা দেবেন, তাদের নিজ নিজ দপ্তরে তথা সরকারের কাছে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়া কতটা যৌক্তিক হবে, তা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। তারা জানান, সম্পদের হিসাব দাখিলের নিয়ম শিথিল করে আচরণ বিধিমালায় সংশোধনী আনা অযৌক্তিক। আয়কর অফিসে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া এবং সরকারি কর্মচারীর নিজ দপ্তরে সম্পদের হিসাব বিবরণী জমার উদ্দেশ্য এক নয়। আয়কর অফিসের লক্ষ্য কর আদায় করা। দুর্নীতি দমন কমিশন বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থা কোনো সরকারি কর্মচারীর সম্পদের হিসাব না চাইলে আয়কর অফিসের রিটার্নদাতার সম্পদের উত্থানের বিষয়ে তেমন উদ্বেগ থাকে না।

এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, লাখ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর আয়কর রিটার্ন খতিয়ে দেখার মতো সক্ষমতা সরকারের কোথায়? তাই নিজ কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পদের হিসাব দেওয়ার দায় কোনোভাবেই এড়ানো যায় না। তিনি বলেন, কেউ বিবেকহীন হলে আসলে কোনো বিধিবিধান দিয়ে তাকে আটকানো যায় না। সম্পদের হিসাব দেওয়ার জন্য সরকারি চাকুরের মধ্যে তদারকি ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার মতো কোনো বিধান না থাকলে সরকারি কর্মচারীর মধ্যে নির্ভয়ে দুর্নীতি ও এর মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুযোগ বাড়বে। একই সঙ্গে প্রাপ্য সেবা পেতে সরকারি দপ্তরে জনগণের ভোগান্তি এবং অবৈধ অর্থ লেনদেনও বাড়বে বহু গুণ। সর্বোপরি সুশাসিত সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিতের স্বপ্ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।


আরও খবর



অনুপস্থিত থাকা উপজেলা চেয়ারম্যানের জায়গায় ক্ষমতা পেলেন ইউএনও

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৫ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৫ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদে অনেক চেয়ারম্যান ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং যোগাযোগ করেও তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় সেসব উপজেলা পরিষদে সব ধরনের জনসেবা অব্যাহত রাখা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।

বুধবার (১৪ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে।

এতে জানানো হয়, সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদে অনেক চেয়ারম্যান ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং যোগাযোগ করেও তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না মর্মে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়। উপজেলা পরিষদের অনেক প্যানেল চেয়ারম্যানও কর্মস্থলে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

এজন্য উপজেলা পরিষদগুলোর অনেক ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে উল্লেখ করে আদেশে বলা হয়, যেসব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্যানেল চেয়ারম্যান অনুপস্থিত রয়েছেন সেসব উপজেলা পরিষদে সব ধরনের জনসেবা অব্যাহত রাখা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে।

১৪ আগস্ট থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে বলেও আদেশে জানানো হয়।


আরও খবর



নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নজরুলের প্রয়াণ দিবস পালিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোমিন তালুকদার, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)

Image

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম প্রয়ান দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম হাফিজুর রহমান এক প্রেস বিজ্ঞতির মাধ্যমে জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ হতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

পরে একটি শোকর‌্যালি ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন  সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদীয় ডিনগণ, বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান, দপ্তর প্রধান, ইন্সস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ যোহর দোয়া মাহফিল ও সন্ধ্যায় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।


আরও খবর
ইউজিসিতে দুই সদস্য নিয়োগ

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪




আলোচিত সেই হারুন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।

রোববার তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

বিএফআইইউ এর চিঠিতে বলা হয়েছে, হারুন ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তার এবং তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব থাকলে তাও স্থগিত করতে হবে। অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের ফলে এখন থেকে তারা আর কোনো টাকা তুলতে পারবেন না।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এক মাসের জন্য অ্যাকাউন্ট স্থগিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া হারুন, তার স্ত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের (মা, বাবা, ভাই ও বোন) নামে পরিচালিত সব ধরনের হিসাব সংক্রান্ত তথ্য/দলিলাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি দালিলাদি, লেনদেন বিবরণী প্রভৃতি) এবং প্রদত্ত এক্সেল সিট মোতাবেক তথ্যাদি পত্র ইস্যুর তারিখ থেকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



ঢাবির সেই ডিনকে কোরআন তেলাওয়াত শোনালেন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত:সোমবার ১৯ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৯ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

পবিত্র রমজানকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণে শোকজ পাঠানো শিক্ষক কলা অনুষদের ডিন ড. আবদুল বাছিরের কার্যালয়ে গিয়ে কোরআন তেলাওয়াত শুনিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে দোয়াও করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষক বাছিরও মোনাজাতে অংশ নেন।

সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলাভবনের দ্বিতীয় তলায় ডিন অফিসে এমন ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের জন্য জড়ো হচ্ছিলেন। তিনি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলাভবনের সামনে এলে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তিনি কলাভবনের তিন তলায় অবস্থান নেন। শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়েও বিক্ষোভ করলে তিনি দ্বিতীয় তলায় ডিন অফিসে প্রবেশ করে দ্রুত পদত্যাগ করেন।

পদত্যাগের পর শিক্ষার্থীরা তার অনুমতি নিয়ে তাকে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত শোনান। পাশাপাশি তার মঙ্গল কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন শিক্ষার্থীরা।

পদত্যাগের পর অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির বলেন, আমি আগেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীরা আজ এখানে না এলেও আমি আজ পদত্যাগ করে চলে যেতাম।

গত ১৬ মার্চ ঢাবিতে কোরআন পাঠের ঘটনায় আরবি বিভাগের চেয়ারম্যানকে শোকজ করে কলা অনুষদের তৎকালীন ডিন। এর আগে গত ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বটতলায় মাহে রমজান স্বাগত জানিয়ে কোরআন তেলাওয়াত আসরের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।


আরও খবর
ইউজিসিতে দুই সদস্য নিয়োগ

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪