আজঃ বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪
শিরোনাম

হাড়ক্ষয় হয়েছে কিনা বুঝবেন কীভাবে

প্রকাশিত:বুধবার ১৬ জুন ২০২১ | হালনাগাদ:বুধবার ১৬ জুন ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

অস্টিওপোরোসিস হচ্ছে ক্যালসিয়ামের ঘাটতিজনিত একটা রোগ। এ রোগ হলে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। ফলে হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

মূলত ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়ার ফলে এ রোগ হয়ে থাকে। এ ছাড়া বয়স বেশি হলে বংশগত কারণে, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডির অভাবে হাড়ক্ষয় রোগ হয়ে থাকে।  তবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও অনেকে বুঝতে পারেন না।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ইটদিস ডটকমর এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল স্কুল অব মেডিসিন-এর ডা. আনিকা কে আনাম বলেন, অস্টিওপোরোসিস হচ্ছে হাড়ের অসুখ। এই রোগে হাড় দুর্বল হওয়া এবং এর গঠনগত মান কমে যাওয়ার কারণে তা ভাঙা কিংবা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি।  ফলে সামান্য দুর্ঘটনা থেকেই হাঁড় ভেঙে যেতে পারে।  রোগের মাত্রা যখন তীব্র হয়, তখন সামান্য হাঁচি দেওয়ার কারণেও রোগীর বুকের হাড় ভেঙে যেতে পারে।  আবার দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে গিয়েও হাড় ভেঙে যেতে পারে।

বেশিরভাগ রোগী প্রথমবার হাড় ফেটে না যাওয়া পর্যন্ত কোনো লক্ষণই টের পান না।  আর এই রোগে সাধারণত মেরুদণ্ড, নিতম্ব ও হাতের কব্জির হাড়ে সবচাইতে বেশি ফাটল দেখা দেয়।  তাই শরীরের এই অংশগুলোতে বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট করার মাধ্যমে হাড়ক্ষয় হয়েছে কিনা তা জানা যাবে।

ডা. আনিকা কে. আনাম জনান, বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট পরীক্ষায় সময় কম লাগে, এটি ব্যথাহীন ও নিরাপদ।  এ পরীক্ষায় হাড়ের ঘনত্ব কম কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণে হাড়ের ক্ষয় হচ্ছে কিনা তা জানার জন্য রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করা হয়।

এ রোগ হওয়ার কারণসমূহ

ডা. আনাম এ রোগের প্রধান কারণ হিসেবে দ্বায়ী করেন বয়স বেশি হওয়া, বংশগত কারণ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাব, ধূমপান ও মদ্যপান বেশি করা ইত্যাদি।

তিনি আরও বলেন, এগুলো বাদে যকৃতের রোগ, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস, ইনফ্লামাটরি বাওয়েল ডিজিজ, দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ব্যবহার ইত্যাদিও হাড়ের ক্ষয়রোগের কারণ হতে পারে।  আবার হাইপারথাইরয়েডিজম, অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা, বৃক্কের সমস্যা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত রোগীদেরও অস্টিওপোরোসিস হবার ঝুঁকি থাকে

তবে সব সম্ভাব্য কারণের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক বিষয়টি হলো ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাব।  এটি নারীদের মাসিক বন্ধ হওয়ার পর হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এ রোগ সম্পর্কে পরিসংখ্যান করে দেখা যায়, ৫০ বা তার বেশি বয়সের প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজনের এই রোগে হাড় ফেটে থাকে।

এ রোগ প্রতিরোধে করণীয়

এ রোগ প্রতিরোধ করার বিষয়ে ডা. আনাম বলেন, হাড়ক্ষয় রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার বিকল্প নেই। এ জন্য শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ও প্রোটিন সরবরাহ করাতে হবে। এবং খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে ফল ও সবজি।

দুধ ক্যালসিয়ামের আদর্শ উৎস। তবে এটি ছাড়াও আরও অনেক খাবার থেকে ক্যালসিয়ামের চাহিদা জোগানো যেতে পারে। শরীরচর্চার গুরুত্বকেও অবহেলা করা যাবে না। নিয়মিত ভারোত্তোলন ও শক্তিবর্ধক ব্যায়াম করা ভালো। বাদ দিতে হবে ধূমপান ও মদ্যপান।

নিউজ ট্যাগ: হাড়ক্ষয়

আরও খবর



সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। যা অব্যাহত থাকতে পারে। এজন্য তিনদিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অফিস।

শুক্রবার আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এ সতর্কবার্তা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

অন্য এক পূর্বাভাসে বলা হয়, শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলা সমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।


আরও খবর



শ্যালককে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বললেন প্রতিমন্ত্রী পলক

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

Image

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লুৎফুল হাবীবকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মোবাইল ফোনে তাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেন প্রতিমন্ত্রী।

এদিকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় শুক্রবার রাতে লুৎফুল হাবীবকে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ কথা নিশ্চিত করেছেন সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস।

পৌর মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, লুৎফুল হাবীবের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশসহ একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রস্তুত করা হচ্ছে। শুক্রবার রাতের মধ্যেই লুৎফুল হাবিবকে নোটিশটি পাঠানো হবে। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়ে আগামীকাল শনিবার লুৎফুল হাবীবকে আরও একটি চিঠি পাঠানো হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন লুৎফুল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দলীয় এই নির্দেশনা অমান্য করলে লুৎফুলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হতে পারে।

এর আগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে অপহরণ করে মারধরের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রতিমন্ত্রীর শ্যালক লুৎফুল হাবীবকে তলব করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের নোটিশে ১৫ এপ্রিল জেলা নির্বাচন অফিসের সামনে থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের মনোনয়নপত্র জমাদানে বাধা, মারধর ও অপহরণের ঘটনার কথা তুলে ধরে আগামী তিন দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে লুৎফুল হাবীবকে ফোন দিলেও কল না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ দেলোয়ার হোসেনকে দেখতে যান সিংড়ার সংসদ সদস্য এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় আমি লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের সুষ্ঠু বিচার হবে।


আরও খবর



সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে কক্সবাজার

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হচ্ছে কক্সবাজারে। এবার ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে এ সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বাইনোকুলার দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে সৈকতের নানা বিষয়। এছাড়া ছিল সিসি ক্যামেরা। সেগুলো পরিচালনার জন্য ছিল বড় বড় এলইডি মনিটর।

এবার পুরো শহরটিকেও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে চায় বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ। এসব সিসি ক্যামেরায় যা ধরা পড়বে তা দেখা যাবে শহরের মোড়ে মোড়ে রাখা বড় এলইডি মনিটরে। ফলে শহরের অপরাধ কমে আসবে অন্যদিকে পর্যটকরা নিরাপদে ঘুরতে পারবেন।

শুধু তাই নয়, পর্যটকরা বিপদে পড়লে যাতে খুব সহজেই স্বজনদের ফোন করতে পারেন তার জন্য বিভিন্ন মোড়ে ইন্টারকম সার্ভিস এবং বসটন টেলিফোন রাখার চিন্তা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে প্রথমবারের মতো দুটি পর্যটন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে মনিটরিং করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক এই কাজে সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ। তবে ক্যামেরায় অপ্রীতিকর কিছু ধরা পড়েনি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেয় ট্যুরিস্ট পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে প্রথম বারের মতো কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ১২টি, পতেঙ্গা বিচে ১২টি ও কক্সবাজারে ২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এসব ক্যামেরা ঢাকায় বসে কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এছাড়াও কক্সবাজারের প্রতিটি বিচকে ইন্টারকম সিস্টেমের আওতায় আনা হয়েছিল। পর্যটকরা তাদের সমস্যা সরাসরি ইন্টারকমের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশকে অবগত করতে রাখা হয়েছিল এই সুবিধা। তার ফলও তারা পেয়েছেন। পাশাপাশি লাগনো হয়েছিল কক্সবাজারের প্রতিটি বিচ এলাকায় সিকিউরিটি এলার্মিং বাটন। পর্যটকরা কোনো সমস্যায় পড়ামাত্র বাটনে টিপ দিয়ে তা ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্সে আওয়াজ তৈরি করেছে। ফলে দ্রুত সময়ে সেই স্থানে পুলিশ পৌঁছে তাদেরকে উদ্ধার করেছে।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি।

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো।

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি।

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর
দাম কমলো সোনার

মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

হাইব্রিডে বিপ্লব এনেছে হীরা ধান

সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪




ভবন থেকে রড পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় ৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীতে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পথে নির্মাণাধীন ভবনের কলাম ভেঙে মাথায় পড়ে বায়োফার্মা লিমিটেডের এক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় ৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

রোববার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় এই মামলা করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আজিজুল হক।

তিনি বলেন, শনিবার (৬ এপ্রিল) রাতে মোহাম্মদপুরের সাত মসজিদ রোডে নির্মাণাধীন ভবনের কলাম ভেঙে মাথায় পড়ে নিহত হন এক পথচারী। সেসময় কদরের নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই ঘটনায় এই মামলা করা হয়েছে।

এসি আরও বলেন, মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিগুলো অজ্ঞাতনামা ৫০-৫৫ জন।

এদিকে রাজউক বলছে, সাত মসজিদ হাউজিং এ রাজউক এর অনুমোদনহীন এবং কোনরকম সেফটি ছাড়াই হাউজিং এর প্রধান সড়কের পাশে পাইলিং এর কাজ চলছিলো। নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নোটিশ করা হলেও ভবন মালিক নির্মাণ কাজ বন্ধ করেননি। পাইল এর রড ল্যাপিং এর স্থলে ওয়েল্ডিং না করে বোর হোলের ভিতর ছাড়ার সময় জয়েন্ট থেকে ছুটে গিয়ে রাস্তার উপর পড়ে পথচারী এস এম হাসান ঘটনাস্থলে মারা যান। নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে তাৎক্ষণিকভাবে ডিপিডিসির মাধ্যমে নির্মাণাধীন প্লটের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনের ওয়ার্কিং ড্রইং এ স্বাক্ষরকারী প্রকৌশলী সৈয়দ রেজাউল করিম।


আরও খবর