আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

হাতিকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করলো কামাল

প্রকাশিত:রবিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ জানুয়ারী ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

 বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে হাতি মার্কার লোকজন ও সমর্থকদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হাতি মার্কার প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মহানগর বিএনপির সেক্রেটারি এটিএম কামাল এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, বন্দরের সোনাকান্দায় যুবদল নেতা মনোয়ার হোসেন শোখনকে পুলিশ নিয়ে গেছে। সে ওই কেন্দ্রের বাইরে নিরাপদ দূরত্বে থেকেই হাতি মার্কার জন্য ভোট চাচ্ছিল ও ভোটাদের উৎসাহিত করছিল। শোখনকে নিয়ে গেলেও নৌকার লোকজনদের কোনও ডিস্টার্ব করা হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, হাজীগঞ্জে আইটি স্কুলের সামনে থেকে হাতির ব্যাচ পড়া জামাল ও শাহ আলমকে নিয়ে গেছে পুলিশ। সেখানে নৌকার লোকজন প্রভাব বিস্তার করছে। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার হাউজ কেন্দ্রে হাতির এজেন্টকে বের করে দিয়েছে। শহরের মর্গ্যান ও শিশুবাগ স্কুলে হাতির লোকজনদের থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রায় বেশিরভাগ কেন্দ্রে এ সমস্যা হচ্ছে। কোনও ভোট কেন্দ্রের বাইরেই হাতি মার্কার কর্মীদের দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। হাতি মার্কার কর্মীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করতে এমনটা করা হচ্ছে; যা কেউ কোনও কেন্দ্রের কাছে না যায়।

এদিকে তৈমূর আলম খন্দকার অভিযোগ করেন, বন্দরে সুফিয়ান নামের একজন ঠিকাদারের নির্দেশে যুবদল নেতা শোখনকে আটকে রেখেছে পুলিশ।

রবিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে টানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে মেয়রসহ ৩৭টি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ১৮৯ প্রার্থী। এর মধ্যে মেয়র পদে ৭জন, ২৭টি ওয়ার্ডে ১৪৮ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৯টি সংরক্ষিত নারী আসনে ৩৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। মোট ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন ভোটার ১৯২টি ভোটকেন্দ্রের ১৩৯৬টি ভোটকক্ষে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৪ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৯। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৪ জন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগ মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আলী আহাম্মদ চুনকা কন্যা ডা. সেলিনা হায়াত আইভী। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা হাতি প্রতীকের অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার।

অবশ্য মেয়র পদে আরও  পাঁচ প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।


আরও খবর



বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে সংগীত শিল্পী পাগল হাসানসহ নিহত ২

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সুনামগঞ্জে বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে গীতিকার ও সংগীত শিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসান (৩৫) ও তার প্রতিবেশী ছাত্তার মিয়া (৪৫) নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ভোরে সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের সুরমা সেতু টোলপ্লাজার পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শিল্পী পাগল হাসান ও ছাত্তার মিয়ার বাড়ি ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মুক্তিরগাঁও-শিমুলতলা গ্রামে। পাগল হাসানের দুই ছেলে রয়েছে।

আহতরা হলেন- মুক্তিরগাঁও-শিমুলতলা গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে লায়েছ মিয়া (৩০), ননদু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৪) ও সিএনজি অটোরিকশার চালক সিরাজ আলীর ছেলে রুপন মিয়া (৩০)।

পুলিশ জানায়, আজ সকালে সংগীত শিল্পী পাগল হাসানসহ একই গ্রামের পাঁজন সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে দোয়ারাবাজার থেকে ছাতকে ফিরছিলেন। অপরদিকে, ছাতক থেকে একটি বাস দোয়ারাবাজারে যাচ্ছিল। পথে সুরমা সেতুর টোলপ্লাজার কাছে বাস ও অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই সংগীত শিল্পী পাগল হাসান ও ছাত্তার মিয়া মারা যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি (মৌলভীবাজার–জ- ১১-০০৪০) জব্দ করেছে। তবে ঘটনার পরপরই বাসের চালক ও সহযোগীরা পালিয়ে যায়।

কালারুকা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সামছু মিয়া বলেন, শিল্পী পাগল হাসান ও ছাত্তার মিয়া একই গ্রামের বাসিন্দা। যারা আহত হয়েছেন তাদের দুইজন হাসানের বন্ধু ও একজন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক।’

ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, পাগল হাসানসহ দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটের এমএজি ওসমামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’


আরও খবর



বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আজ

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

আজ ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করে এমন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত প্রতিপাদ্যের আলোকে বাংলাদেশও এবছর দিবসটি উদযাপন করছে। এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে স্বাস্থ্যের অধিকার নিশ্চিতে : কাজ করি একসাথে

দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এ বছর দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সেমিনার আয়োজন, স্যুভেনির প্রকাশ, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদর্শনী, জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সড়কদ্বীপ সজ্জিতকরণ, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য কার্যক্রম।

১৯৪৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ অর্থনীতি ও সমাজ পরিষদ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সম্মেলন ডাকার সিদ্ধান্ত নেয়। একই বছরের জুন ও জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাংগঠনিক আইন গৃহীত হয়, ১৯৪৮ সালের ৭ এপ্রিল এই সংগঠন আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। এইদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস বলে নির্ধারিত হয়। প্রতিবছর সংস্থাটি এমন একটি স্বাস্থ্য ইস্যু বেছে নেয়, যা বিশেষ করে সারা পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এদিন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয় এ দিবসটি।


আরও খবর



মাথাপিছু ঋণ বেড়ে দেড় লাখ টাকা: সিপিডি

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

গত তিন বছরে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলেছে, তিন বছর আগে মানুষের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দেড় লাখ টাকা। শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, ফলে বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি ও এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য; মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

সিপিডির চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, আশির দশকে অনেক আফ্রিকান ও লাতিন আমেরিকান দেশ স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়েছিল। সম্প্রতি এর বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশেও স্বল্পমেয়াদি ঋণ বাড়ছে, শ্রীলঙ্কার মতোই বিপজ্জনক পথে আছে এ দেশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঋণের বড় বাধা এখন ঋণগুলোর শর্ত এবং এর সঠিক বাস্তবায়ন।

আমরা যদি আশির দশকে ওপেকের সময় ঋণের সংকটের দিকে তাকাই, সেখানে দুটি পরিস্থিতি ছিল। একটি, লাতিন আমেরিকায় খুব বেশি ঋণ নিয়ে বিপদে পড়া। তারা বিপদে পড়েছিল স্বল্পমেয়াদি ঋণে, সেগুলো তাদের খুব সস্তায় দেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা একসময় গিয়ে ঋণসংকটে পড়েছিল। একই ঘটনা শ্রীলঙ্কার ঋণ সংকটের। শ্রীলঙ্কার অনেক ঋণ স্বল্পমেয়াদি। শ্রীলঙ্কার একই সময় অনেক আফ্রিকান দেশেও একই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’

ড. রেহমান সোবহান বলেন, একইভাবে বাংলাদেশও স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে সংকটের পথেই আছে। এটা খুবই উল্লেখ করার মতো, এ ধরনের ঋণ এখন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের রপ্তানি আফ্রিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো, তাই এ জায়গায় তেমন সংকট নেই।’

মূল প্রবন্ধে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত আমাদের বিদেশি ঋণ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। আমরা এখন যদি সতর্ক না হই, তাহলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে সরকার যে সতর্ক তা আইএমএফের কাছে ৪.৭ বিলিয়নের জন্য যে গেল সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে।’

প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি বলেন, বিদেশি ঋণ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা না, ১৯৮০ সালের দিকে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো বিদেশি ঋণ নিয়ে এ ধরনের বড় সমস্যায় পড়েছিল। সাম্প্রতিক ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়া গ্রিস বড় উদাহরণ। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ও ঘানার মতো দেশের উদাহরণ তো আছেই।’

আন্তর্জাতিকভাবে এ প্রভাব পড়ার বৈশ্বিক কারণগুলো হলো—কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব, বিশ্বে মালামাল ও সেবার চাহিদা কমে যাওয়া। দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ কারণ—ঋণ ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, অনেক দেশ অদূরদর্শী ঋণ নিয়েছে। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠিন শর্তে ঋণ নেওয়া হয়েছে, মুদ্রার ওঠানামাও অনেক দেশে হয়েছে। এসব কারণ অভ্যন্তরীণ।’

গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো উন্নত দেশের তুলনায় অনেক দ্রুত ও বেশি বিদেশি ঋণ নিয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশেই এ কারণে তা উদ্বেগের কারণ হয়েছে। ঋণের চাপে অনেকে আছে, অনেকে খেলাপি হয়েছে।

উন্নয়নশীল এসব দেশের সরকারি ঋণ ২০১০ সালে জিডিপির তুলনায় ৩৫ শতাংশ ছিল, ২০২১ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশে। এর মধ্যে একই সময় দেশগুলোর বিদেশি ঋণ ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। এসব বিদেশি ঋণের মধ্যে ব্যক্তি খাতের ঋণও একইভাবে বেড়েছে। একই সময় ব্যক্তি খাতের ঋণ ৪৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই অর্থনীতিবিদ।

বিশ্বব্যাংকের গবেষণার একটি অংশ তুলে ধরে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ১০৯ শতাংশ, যেটি দেশগুলোর জিডিপির ৩৩ শতাংশ। পাবলিক অ্যান্ড পাবলিকলি গ্যারান্টেড (পিপিজি) ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

আইএমএফের সতর্কবাণী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এসব দেশকে সতর্ক করে একটি প্রতিবেদন বানিয়েছে। আমরা কি আরেকটি ঋণ সংকটের দিকে যাচ্ছি?

তার মতে, বাংলাদেশের ঋণ ও পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বাড়ছে, যা সরকারকে অপর্যাপ্ত রাজস্ব আদায়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধের জন্য ক্রমাগত নতুন ঋণ নিতে বাধ্য করছে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমরা পাকলিক ও পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণের দায়বদ্ধতার একটি বড় অংশ পরিশোধের জন্য ঋণ নিচ্ছি। তাই দ্রুত অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

সিপিডি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণ এবং ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতার হার বেড়েছে। ২০২৩ সালের জুনে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদেশি ঋণ ছিল ৯৮.৯ বিলিয়ন ডলার, যা একই বছরের সেপ্টেম্বরে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

অনুষ্ঠানে সিপিডি জানিয়েছে, ঋণ পোর্টফোলিওর গঠন দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। রেয়াতি ঋণের অনুপাত কমছে, অন্যদিকে রেয়াতি ও বাজারভিত্তিক ঋণের অংশ বাড়ছে। ঋণের শর্তাবলিও আরো কঠোর হচ্ছে।

বিশেষ করে জিডিপি, রাজস্ব আয়, রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের সঙ্গে তুলনা করলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের দায়বদ্ধতা দ্রুত বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এর সঙ্গে ঋণ বহনের সক্ষমতা ও ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা উদ্বেগ তৈরি করেছে। দিন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ, যা অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উভয় ঋণ পরিশোধের জন্য বিবেচনা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদের একটি ক্রমবর্ধমান অংশ দেশি ও বিদেশি ঋণের মূল ও সুদ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মেগাপ্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থপাচারের সম্পর্ক আছে বলে মনে করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বড় আকারের অনেক প্রকল্পই অতিমূল্যায়িত করে খরচ বাড়ানো হয়েছে। আবার প্রকল্পের ভেতরে বাস্তবায়ন পর্যায়ে কোনো না কোনো স্বার্থগোষ্ঠীকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় বলেন, অন্যান্য দেশে জনগণের প্রাথমিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিয়ে ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে জনসাধারণের টাকা লুটের মাধ্যমে পুঁজি গড়ে উঠেছে। বিদেশি ঋণ নেওয়া প্রকল্পগুলোর মাধ্যমেও ব্যক্তি খাতে পুঁজি গড়ে উঠেছে। এটা বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের জন্যই প্রযোজ্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে পুঁজি সঞ্চয়কারী অলিগার্ক তৈরি হয়েছে। এর ফলে রাজনৈতিক নেতারা যে আশায় এই প্রকল্পগুলো নিয়েছিলেন, সেটায় সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

দেশি-বিদেশি ঋণ থেকে সরকারের দায় বৃদ্ধির প্রবণতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের মাথাপিছু বিদেশি ঋণ তিন হাজার ১০ ডলার। আর অভ্যন্তরীণ উৎসর ঋণ মিলে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় আট হাজার ৫০ ডলারে। স্বাধীনতার এত বছর পরে সরকারের মাথাপিছু ঋণ এক লাখ টাকায় উঠেছিল অথচ তা পরের তিন বছরেই দেড়গুণ হয়ে গেছে।

কভিড, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার কারণে ঋণ বেড়েছে বলে অনেকে দাবি করলেও প্রকৃত কারণ ভিন্ন বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। ঋণ পরিশোধের চাপের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ সালেও সরকারের আদায় হওয়া রাজস্বের ২৬ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হতো। অথচ এই হার এখন ৩৪ শতাংশে উঠেছে, যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণ যাচ্ছে ২৮ শতাংশ আর বিদেশি ঋণ সাড়ে ৫ শতাংশ।

বিদেশি ঋণ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে অনেকেই দাবি করলেও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মোডি বা স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস হিসেবে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং কমছে বলে দাবি করেন ড. দেবপ্রিয়। সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিরতাসহ বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ফলাফলের মধ্যেও বিপুল পরিমাণ ঋণে নেওয়া মেগাপ্রকল্প প্রকৃত সুফল দিতে পারছে না বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, বিনিয়োগ না বাড়লে প্রকল্পের ফলাফল পাওয়া যাবে না।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৪ থেকে ২৩.৮ শতাংশে আটকে আছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। গত দেড় দশকের সাফল্য কেন বিনিয়োগে প্রতিফলিত হয়নি? এফডিআই কেন জিডিপির ১ শতাংশে আটকে আছে? প্রশ্ন রেখে ড. দেবপ্রিয় বলেন, ২০২৩ সালের ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির অনুপাতে সরকারের হিসেবেই কমেছে। এ ছাড়া শিক্ষা, ট্রেনিং বা কর্মে নেই এমন মানুষের হার বেড়েছে, বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাহীন পরিবারের সংখ্যাও বেড়েছে। ২৫ শতাংশের বেশি মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে ঋণ করে চলে।

বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করতে গিয়ে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের ক্ষতি হয়েছে মন্তব্য করে ড. দেবপ্রিয় বলেন, শিক্ষায় গত ১৫ বছরে কোনোভাবেই জিডিপির ২ শতাংশের বেশি এবং স্বাস্থ্যে ১ শতাংশের বেশি বরাদ্দ হয়নি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে অবহেলার প্রতিফলন এই এসভিআরএস প্রতিবেদনেও এসেছে বলে তিনি জানান। এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যথাযথ কাজ করছে না বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য তিন মাস পর আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বিবৃতি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এ ছাড়া অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কেবিনেটের সাব কমিটি ক্রয় কমিটিতে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


আরও খবর



২ বাংলাদেশিকে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল বাফেলো শহর

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
প্রবাসে বাংলা

Image

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ২ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় উত্তাল নায়াগ্রা ফলসখ্যাত বাফেলো শহর। রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিক্ষুব্ধ প্রবাসীদের তোপের মুখে পড়েন বাফেলো শহরের মেয়র ও পুলিশ কমিশনার।

স্থানীয় সময় দুপুরে নামাজের পর হাজারো মানুষ বৃষ্টি উপেক্ষা করে জড়ো হন বাফেলো মুসলিম সেন্টারে। বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

এ সময় স্থানীয় বাফেলো শহরের মেয়র বায়রন ব্রাউন ও পুলিশ কমিশনার জোসেফ গ্রামাগলিয়া জনতার তোপের মুখে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

ঘটনার একদিন পর সন্দেহভাজন বন্দুকধারী দুর্বৃত্তের ছবি প্রকাশ করলেও তার নাম পরিচয় জানাতে পারেনি বাফেলো পুলিশ। অপরাধীকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।

এদিকে নিহত বাবুল মিয়ার পাঁচ মাসের অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রীর আহাজারিতে নিউইয়র্কের বাফেলো শহরের আকাশ-বাতাস যেন ভারী হয়ে ওঠেছে। অভিবাসন নিয়ে বছর খানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন নুসরাত জাহান। স্বামীকে হারিয়ে তিনি এখন দিশেহারা। এই পৃথিবীতে নিকট আত্মীয় বলে তার আর কেউ রইল না। কিভাবে সন্তানকে মানুষ করবেন তিনি? গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যত-ই বা কী হবে?

বাবুল মিয়ার স্ত্রী নুসরাত জাহান বলেন, আজকে আমি এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি যেখানে আমি আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ দেখতে পাই না। আমার স্বামীকে যারা এই নৃশংসভাবে বিদায় করে দিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

থমথমে পরিবেশ গুলিতে নিহত অপর বাংলাদেশি আবু সালেহ ইউসূফের বাড়িতে। জনশূন্য মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশিদের সঙ্গে থাকবেন বলে মাত্র সাত মাস আগে ইউসূফও এসেছিলেন নিউইয়র্কের বাফেলোতে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হতে হলো তাকে। ইউসূফের স্ত্রী এখন সন্তানদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। স্বপ্নের যুক্তরাষ্ট্র যেন দিনদিন দু:স্বপ্ন হয়ে উঠছে অভিবাসীদের জন্য।

নিহত আবু সালে ইউসূফের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী কোনো অপরাধ করেনি। যারা আমার সন্তানদের এতিম করলো আমি তাদের বিচার চাই। আমেরিকান সরকারের কাছে আমারদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাই।


আরও খবর



বান্দরবানে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

বান্দরবানে সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফ-এর বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বান্দরবানে যান তিনি।

সফরকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। পরে দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে মতবিনিময় শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন তিনি। ঢাকা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে গিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

গত ৩ দিনে পরপর কয়েকটি হামলা, ব্যাংক ডাকাতি, অপহরণ, গোলাগুলি ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর, কুকি চিনের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে আজ থেকেই সমন্বিত অভিযান শুরুর কথা রয়েছে।

র‍্যাব জানায়, যৌথ অভিযান কেএনএফ সন্ত্রাসীদের নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চলবে। এই অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশ অংশ নিচ্ছে।

র‍্যাব আরও জানায়, বান্দরবান জেলায় বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতা, উত্তরসূরিদের অনুপ্রেরণা ও বিশ্বে তাদের সহযোগীদের সক্ষমতা জানান দিতেই এ ঘটনাটি কেএনএফ সশস্ত্র সদস্যরা ঘটিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। এর আগেও কুকি-চিন সদস্যরা টাকার বিনিময়ে জঙ্গিদের অস্ত্র পরিচালনা প্রশিক্ষণ দেয়াসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।


আরও খবর