শেষ বিকেলে শ্রীলংকার দুই গুরুত্বপূর্ণ
উইকেট তুলে নিল বাংলাদেশ। এই লাইনটুকু পড়ে অবশ্য খুশি হওয়ার কিছু নেই। কেননা দিনব্যাপী
স্বাগতিক বোলাররা হতাশাতেই ছিল। ফলে চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টর প্রথম
দিন নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০০ পেরিয়ে গেছে লংকানরা। নির্ধারিত ৯০ ওভার শেষে ৪ উইকেট
হারিয়ে ৩১৪ রান করেছে তারা।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ
এই লড়াইয়ে টস জিতে বাংলাদেশকে ফিল্ডিংয়ে পাঠান শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি
সিলভা। বাংলাদেশ তাদের একাদশে দুইটি পরিবর্তন এনেছে। দলে ঢুকেছেন সাকিব আল হাসান ও
হাসান মাহমুদ। এই ম্যাচই হাসান মাহমুদের অভিষেক টেস্ট। সিলেট টেস্ট থেকে বাদ পড়েছেন
তরুণ নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম। শ্রীলংকা তাদের একাদশে একটি পরিবর্তনই এনেছে। সিলেট
টেস্টে ৮ উইকেট পাওয়া কাসুন রাজিথা ইনজুরির কারণে আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন। তার জায়গায়
সুযোগ পেয়েছেন আরেক পেসার কাসুন রাজিথা।
অভিষিক্ত হাসান দলীয় ষষ্ঠ ওভারেই উইকেট
পেতে পারতেন তিনি। তবে তার বলে স্লিপে মাদুশকার সহজ ক্যাচ ফেলে দেন মাহমুদুল হাসান
জয়। অভিষেক ম্যাচে আরও দুর্ভাগ্য তাড়া করে বেরিয়েছে হাসানের। ২২তম ওভারে হাসানের
বাউন্সারে ফাইন লেগে ক্যাচ তোলেন করুনারত্নে। তবে বাউন্ডারি লাইন থেকে কিছুটা এগিয়ে
থাকায় ক্যাচ মিস করেন সাকিব আল হাসান। তার হাতে লেগে হয় ছক্কা। উইকেটশূন্য অবস্থায়ই
প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনের প্রথমেই উইকেট পায় বাংলাদেশ।
সেটি হাসান মাহমুদের কৃতিত্বে। তবে বলে নয়, ফিল্ডিংয়ে। ২৯তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয়
৯৬ রানের মাথায় তার দুর্দান্ত থ্রোয়ে ফেরেন মাদুশকা। তিনি ১০৫ বলে ৬টি চারে ৫৭ রান
করেন।
এরপর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে
নিতে থাকেন করুনারত্নে ও কুশল। বল হাতে প্রথম সাফল্য আসে সেই হাসানের হাত ধরেই। ৫৬তম
ওভারের প্রথম বলে হাসান মাহমুদের বলে করুনারত্নে সরাসরি বোল্ড হলে ভাঙে ‘লংকান ওয়াল’। করুনারত্নে ফিরেছেন ৮৬ রান
করে। ১২৯ বলে ৮টি চার ও ১ ছক্কায় এই রান করেন করুনারত্নে।
তবে এই টেস্টও বাংলাদেশের বোলারদের সকল
প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রথম দুই সেশনেই তুলে নিয়েছে রানের ডাবল সেঞ্চুরি। ওভারপ্রতি
সাড়ে তিনের বেশি হারে রান তুলে করেছে ২১৪।
এরপর সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে সাকিব আল
হাসানে কাঁটা পড়েন কুসল মেন্ডিস। ৭২তম ওভারের তৃতীয় বলে এই টেস্টে ফেরা সাকিবের বলে
মেহেদী হাসান মিরাজকে ক্যাচ দেন মেন্ডিস। লংকান ব্যাটার ১৫০ বলে ১১টি চার ও একটি ছক্কায়
৯৩ রানে ফেরেন। ম্যাথিউস বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। হাসান মাহমুদের দ্বিতীয় শিকার হন
তিনি। ৭১ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রানে মিরাজকে ক্যাচ দেন তিনি।
দিনের বাকিটা সময় দীনেশ চান্দিমাল ও অধিনায়ক
ধনাঞ্জয়া ডি সিলাভা দেখেশুনে খেলে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। চান্দিমাল ৩৪ ও ডি সিলভা
১৫ রানে প্যালিভিয়নে যান।
এর আগে সিলেটে প্রথম টেস্টে অসহায় আত্মসমর্পণ
করেছে বাংলাদেশ। লংকানদের বিপক্ষে ৩২৮ রানে হারের ম্যাচে বাংলাদেশ দুই ইনিংসে অলআউট
হয়েছে মাত্র ১৮৮ ও ১৮২ রানে।