পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া ও হত্যার হুমকির অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের ছোট মাছুয়া গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. ছগির মিয়া এ জিডি করেন।
পুলিশ ও জিডি সূত্রে জানা গেছে, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ছগির মিয়া একটি সড়কের কাজের ব্যয়ের হিসাব দেখাতে উপজেলা প্রকৌশলীর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন সেখানে এসে ছগির মিয়ার নাম ধরে গালি দেন। একপর্যায়ে তিনি ছগির মিয়াকে মারধর করতে তেড়ে আসেন এবং হত্যার হুমকি দেন। এ সময় ছগির মিয়া সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে রিয়াজ উদ্দিন তাঁর লোকজন নিয়ে ছগির মিয়ার আবার আক্রমণ করেন। পরে তাঁরা ছগির মিয়ার বাড়ি পুড়িয়ে দেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ছগির মিয়া বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আমাকে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। আমি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন বলেন, তাঁর এক কর্মীর মোটরসাইকেল ছগির মিয়া দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখেছেন বলে তিনি দাবি করেন। ওই মোটরসাইকেলের বিষয়ে গতকাল ছগির মিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে তাঁকে কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি জিডি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
রিয়াজ উদ্দিন ও ছগির মিয়া দুজনেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে তাঁদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল আছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যেও বিভক্তি রয়েছে। রিয়াজ উদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিউদ্দিন আহমেদের অনুসারী। অন্যদিকে ছগির মিয়া সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মাতুব্বরের অনুসারী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছগির মিয়া উপজেলার তুষখালী ইউপির সাবেক সদস্য। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে ছগির মিয়া বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তুষখালী ইউপির চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে হেরে যান। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছু দিন আগে তিনি দল পাল্টে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।