আজঃ শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ ও জিয়ার রাষ্ট্রদ্রোহিতা

প্রকাশিত:সোমবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | হালনাগাদ:সোমবার ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
শ ম রেজাউল করিম

Image

ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ। বিশ্ব ইতিহাসে ঘৃণ্য কালো আইন নামে যেটি সমধিক পরিচিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে নিকৃষ্ট অন্তরায় হিসেবে আবর্তিত হওয়া জগদ্দল পাথর। একটি স্বাধীন দেশে জাতির পিতার নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়া পঙ্কিল অধ্যায়। একের পর সংবিধান লঙ্ঘনের কলঙ্কিত দলিল। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এমন কালো আইন নেই। প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন, ভারতের মহাত্মা গান্ধী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও রাজিব গান্ধী, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টো, শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট বন্দর নায়েকসহ বিশ্বের অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিকে হত্যার পর সেসব হত্যার বিচার বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এমন অধ্যাদেশ কোনো দেশেই জারি হয়নি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর সংবিধান লঙ্ঘন করে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি বনে যান খন্দকার মোশতাক আহমেদ। সামরিক আইন জারি করা হলেও সে সময় সংবিধান ছিল বলবৎ, যা ছিল এক অদ্ভুত ব্যবস্থা। সংবিধানের ৫৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে কিংবা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে তদস্থলে উপ-রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতিরূপে কাজ করবেন। একইভাবে রাষ্ট্রপতি ও উপ-রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে স্পিকার রাষ্ট্রপতিরূপে কাজ করবেন। সংবিধানের এ বিধান বলবৎ থাকা সত্ত্বেও উপ-রাষ্ট্রপতি এবং স্পিকার দুজনকেই বাদ দিয়ে ক্ষমতা দখল করেন বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাত্র ১ মাস ১০ দিন পর ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন অবৈধ রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক। দি বাংলাদেশ গেজেট, এক্সট্রা অর্ডিনারি পাবলিশড বাই অথরিটি লেখা অধ্যাদেশটিতে স্বাক্ষর করেন খোন্দকার মোশতাক। এ অধ্যাদেশে ছিল দুটি ভাগ। প্রথম অংশে বলা হয়েছে- ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থী যা কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টসহ কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে- রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যয়ন করবেন, তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হলো। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার পর খুনিদের যাতে বিচার করা না যায়, অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের আইনগত কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করা না যায় এবং হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্র ও নেপথ্যে জড়িতদের যাতে সুরক্ষা দেওয়া যায়, তার জন্যই এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।

অবৈধ রাষ্ট্রপতি মোশতাক কর্তৃক খুনিদের বাঁচানোর জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি ছিল দেশের সর্বোচ্চ আইন, সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে- সংসদ ভাঙ্গিয়া যাওয়া অবস্থায় অথবা উহার অধিবেশনকাল ব্যতীত, কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট আশু ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হইলে তিনি উক্ত পরিস্থিতিতে যেইরূপ প্রয়োজনীয় বলিয়া মনে করিবেন, সেইরূপ অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিতে পারিবেন এবং জারি হইবার সময় হইতে অনুরূপভাবে প্রণীত অধ্যাদেশ সংসদের আইনের ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন হইবে’।

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার অধীন কোনো অধ্যাদেশে এমন কোনো বিধান করা হইবে না, (ক) যাহা এই সংবিধানের অধীন সংসদের আইন-দ্বারা আইনসংগতভাবে করা যায় না। আইনানুগভাবে কী করা যাবে বা যাবে না, তা সংবিধানের ৭ ও ২৬ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। ৭(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোনো আইন যদি সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাহলে সে আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হবে। এ ছাড়া ২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য আইন বাতিল হবে। ২৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- রাষ্ট্র সংবিধানের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য কোনো আইন প্রণয়ন করবেন না এবং অনুরূপ কোনো আইন প্রণীত হলে তা মৌলিক অধিকারের কোনো বিধানের সঙ্গে যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সামরিক আইন জারি হলেও সংবিধানকে বাতিল করা হয়নি, বিধায় সংবিধানের বিধানাবলি বলবৎ ছিল। সংগত কারণে সংবিধানের উল্লিখিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধান অনুসারে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা একদিকে ছিল সংবিধান পরিপন্থী, অন্যদিকে যিনি জারি করেছিলেন তিনিও ছিলেন অবৈধ রাষ্ট্রপতি।

সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসেবে ৩১ নং অনুচ্ছেদে আইনের আশ্রয় লাভ এবং ৩২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না মর্মে বলা হয়েছে। একইভাবে ২৭ অনুচ্ছেদে আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারের কথা এবং ২৬ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের সঙ্গে অসামঞ্জস্য আইন বাতিল বলে গণ্য হবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে। উল্লিখিত বিধানের আলোকে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশে দুই ভাগে যেসব বিষয় উল্লেখ করে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তা কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতিকে অধ্যাদেশ জারির যে ক্ষমতা ৯৩ অনুচ্ছেদ দেওয়া হয়েছে, সেখানে ওই সুযোগ ছিল না। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী হওয়ায় তা সম্পূর্ণ বেআইনি। অপরদিকে সংবিধানের প্রস্তাবনায়, রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হিসেবে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক অধিকার এবং সুবিচার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার লাভের নিশ্চয়তার সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে সাংঘর্ষিক ছিল, বিধায় সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুরু থেকে (অধ্যাদেশ জারির মুহূর্ত থেকেই) অসাংবিধানিক ও বেআইনি ছিল। অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করায় মোশতাক ছিল আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ রাষ্ট্রপতি। একজন অবৈধ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত সংবিধানবিরোধী অধ্যাদেশ আইনের পরিভাষায় ছিল অবৈধ।

খন্দকার মোশতাকের স্বাক্ষর থাকলেও এ অধ্যাদেশ জারির নেপথ্যের কারিগর ও মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জেনারেল জিয়া, যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার ৯ দিনের মাথায় তৎকালীন সেনাপ্রধানকে হটিয়ে নিজেই সেনাপ্রধান বনে যান। সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতির পদ জবর-দখলকারী মোশতাকের প্রতি স্বঘোষিত সেনাপ্রধান জিয়ার আনুগত্য প্রকাশ, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির সঙ্গে জিয়ার সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্ট করে। সেনাপ্রধান হিসেবে সংবিধান সমুন্নত রাখা, রাষ্ট্রপতির প্রতি আনুগত্যতা দেখানো তার সাংবিধানিক ও গৃহীত শপথের কর্তব্য ছিল। কিন্তু তিনি অবৈধ রাষ্ট্রপতির প্রতি আনুগত্যতা এবং অবৈধ রাষ্ট্রপতির বেআইনি অধ্যাদেশ প্রণয়নে ভূমিকা ও সমর্থনের দ্বারা অসাংবিধানিক কাজ করেন। খন্দকার মোশতাককে ৮২ দিন পুতুল রাষ্ট্রপতি রেখে নতুন অধ্যায়ের অবতারণা করে বিচারপতি আবু সাদাত মো. সায়েমকে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করেন। আইন অনুযায়ী অসাংবিধানিক সরকারের রাষ্ট্রপতি হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না বিচারপতি সায়েমের। ৮ নভেম্বর তাকে রাষ্ট্রপতি এবং সঙ্গে চিফ মার্শাল ল’ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর করা হয়। যদিও বাংলাদেশে এরূপ কোনো পদের আইনগত অস্তিত্ব নেই। জিয়া হয়ে যান উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। বাংলাদেশের সংবিধানে বা অন্য কোনো আইনে এরূপ কোনো পদের অস্তিত্ব নেই। উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হয়ে বিচারপতি সায়েমকে দিয়ে কিছুদিন নিজের ইচ্ছা ও খেয়াল খুশিমতো সব কিছু করাতে থাকেন। একপর্যায়ে বিচারপতি সায়েম সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার উদ্যোগ নিলে তা ভুল করে রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নে বিভোর অতি উচ্চাভিলাষী জিয়া ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বিচারপতি সায়েমকে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করে নিজেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হয়ে যান। এ অবৈধ অধ্যাদেশকে জোর করে বলবৎ রাখা হলেও ১৯৭৯ সালে সামরিক আইন প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গেই অধ্যাদেশটি কার্যকারিতা হারায়। ফলে সে সময়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান চাইলেই ১৫ আগস্টের খুনিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু, বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। বঙ্গবন্ধু খুনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রের মাস্টারমাইন্ড জিয়া সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে খুনিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে পুরস্কৃত করেন। এবং স্থায়ীভাবে তাদের সুরক্ষা দিতে এবং অবৈধ ক্ষমতা দখলকে কেউ যাতে চ্যালেঞ্জ করতে না পারে তা পাকাপোক্ত করতে অবৈধ অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেন নিজ অনুগত সংসদে ১৯৭৯ সালে ৯ এপ্রিল। তখন রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি নিজেই অবৈধ আইনে স্বাক্ষর করেন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করার মধ্য দিয়ে সংবিধান পরিপন্থী কর্মকান্ডকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইতিহাসের অমোঘ সত্যের মুখোমুখি একদিন হতেই হবে, এ চিরন্তন বাস্তবতাকে ক্ষমতালোভে অন্ধ জিয়া ভুলে গিয়েছিলেন। সেনা কর্মকর্তা হিসেবে জিয়া শপথ নিয়েছিলেন জীবনের বিনিময়ে হলেও রাষ্ট্রপতি ও সংবিধানকে রক্ষা করবেন, একইরূপে সংবিধানকে সমুন্নত রাখার শপথ নিয়েছিলেন বিচারপতি সায়েম। কিন্তু করেছেন তার বিপরীত। সেনাপ্রধান অর্থাৎ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী/সার্ভেন্ট জিয়া কখনই রাষ্ট্রপতি হতে পারেন না আইনের দৃষ্টিতে। কিন্তু চাকরিরত অবস্থায়ই নিজেকে রাষ্ট্রপতি দাবি করে হ্যাঁ-না’ ভোট নামক প্রহসন করেছিলেন। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জেনারেল জিয়া, মোশতাক ও সায়েমের রাষ্ট্রপতি পদ দখলকে অবৈধভাবে জবরদখল, সম্পূর্ণরূপে বেআইনি, অবৈধ, বাতিল ও অস্তিত্বহীন মর্মে ঘোষণা করে। এ ছাড়া জিয়া, মোশতাক ও সায়েমকে রাষ্ট্রদ্রোহী, সংবিধান ধ্বংসকারী হিসেবে ঘোষণা করেন।  রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ বৈধ জনপ্রতিনিধি দ্বারা শাসিত হয়নি। ফলে এ সময় যারা ক্ষমতা দখল করেছিলেন তারা অবৈধ। সংগত কারণে তাদের কৃত সব কর্মও ছিল অবৈধ।  আদালতের এ রায়, সংবিধানের বিধান অনুসারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং অমান্য তথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।

লেখক : শ ম রেজাউল করিম এমপি। মাননীয় মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়


আরও খবর



গুজবের অভিযোগ আমলে না নিলে দেশে ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সরকারের অভিযোগ আমলে না নিলে বাংলাদেশে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

রবিবার (৩১ মার্চ) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তিনি বলেন, 'তারা (ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল) বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের সুপারিশ শোনে না। কারণ গুজব প্রতিরোধ ও সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এখানে কোনো অফিস নেই। আমরা বলব যে তারা আমাদের কথা শুনছে না। প্রয়োজন হলে কিছু সময়ের জন্য এসব সেবা বন্ধ থাকবে। আমরা প্রথমে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সঠিকভাবে জানাব যে তারা (সোশ্যাল মিডিয়া) আমাদের অভিযোগ আমলে না নিয়ে এই অপরাধ এবং গুজব চালাতে দিচ্ছে এবং এগুলো প্রতিরোধে তাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

মন্ত্রী আরও বলেন, প্রথমে কয়েকবার বলা হবে। প্রয়োজনে আমরা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেও বলব, যেন মনে না হয় যে এখানে মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আইনের বিধান হলো কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। তারা আমাদের অভিযোগের তদন্ত করছে না। আমরা এখন গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনগণকে তাদের উদাসীনতা সম্পর্কে জানাব, যেন বাধা (সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ) দেওয়া হলে দায় সরকারের ওপর না পড়ে, বরং তাদের ওপরই বর্তায়।


আরও খবর



যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ ইসরায়েলকে সাহায্যের জন্য মরিয়া: বাইডেন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ ইসরায়েলকে সাহায্যের জন্য মরিয়া বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ এক মতামত কলামে বাইডেন লিখেছেন, এই দুটি দেশ নিজেরা নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম, কিন্তু সেটা করতে তারা সমরাস্ত্র সহ আমেরিকান সাহায্যর উপর নির্ভর করে।

ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের জন্য সিনেটে পাস হওয়া সাহায্য প্রস্তাবকে বাইডেন শক্তিশালী এবং বিচক্ষণ’ বলে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, রিপাবলিকান দলের হাউস সদস্যদের ছোট একটি উগ্রবাদী গ্রুপের উচিত হবে না এই প্রস্তাবকে আটকে রাখা।

জার্নাল পত্রিকায় বাইডেন যুক্তি দেন যে এই সাহায্য ইউক্রেনের দরকার, যাদের গোলা-বারুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর গত সপ্তাহান্তে ইরানের ড্রোন আক্রমণের পর ইসরাইলের সাহায্য দরকার।

তবে তিনি বলেন, এই সাহায্য যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্যও একই গুরুত্ব বহন করে।

বাইডেন বলেন, ইউক্রেন এবং ইসরায়েল দু’দেশই নির্লজ্জ প্রতিপক্ষের আক্রমণের মুখে, যারা তাদের নিশ্চিহ্ন করতে চায়। পুতিন ইউক্রেনের জনগণকে বশে এনে নতুন রুশ সাম্রাজ্যের মধ্যে নিয়ে আসতে চান। ইরানের সরকার ইসরাইলকে চিরতরে ধ্বংস করে বিশ্বের মানচিত্র থেকে একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র মুছে ফেলতে চায়। এরকম ফলাফল আমেরিকার কখনোই মেনে নেয়া উচিত না। এটা শুধু আমাদের মিত্রদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্যই নয়। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তাও এখানে জড়িত আছে।

তিনি রিপাবলিকানদের অভিযোগ, যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের লড়াইয়ে টাকা খরচ করার সামর্থ্য আমেরিকার নেই, তার জবাবে বলেন, এই সাহায্য একটি সাদা চেক’ হিসেবে দেয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের জন্য সমরাস্ত্র কারখানা তৈরি করা হবে আমেরিকায়।


আরও খবর



ঈদে সড়ক পথে যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াতের লক্ষ্যে নতুন সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঈদে সড়ক পথে যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাতায়াতের লক্ষ্যে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সড়ক ভবনে আয়োজিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় জানানো হয়, সারা দেশে সম্ভাব্য যানজটের ১৫৫ টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। ঈদকে কেন্দ্র করে আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন মহাসড়কে ট্রাক কার্ভাডভ্যান ও লরী চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের আগে ৭ দিন ও পরের ৫ দিন সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। এছাড়া ঈদের ৭ দিন আগে মহসড়কের সব সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।


আরও খবর



অ্যাসিডিটি থেকে বাঁচতে ইফতারে যেসব খাবার খাবেন

প্রকাশিত:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ মার্চ ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। একটু সচেতন হলেই এ সমস্যা থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া সম্ভব। রমজান চলছে। এসময় অনেকেই ইফতারে একসঙ্গে ভাজাপোড়াসহ আরও অনেক খাবার খেয়ে পেটে গণ্ডগোল বাধিয়ে ফেলেন। এসময় বদহজম, অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা এড়াতে ইফতারের খাবার খেতে হবে কিছু নিয়ম মেনে।

ইফতার করার সময় কোন ধরনের খাবার খেলে অ্যাসিডিটি হবে না তা সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের ডায়েটিশিয়ান ইতি খন্দকার।

তিনি জানান, রোজা ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে লেবু, চিনিযুক্ত শরবত কিংবা ট্যাং জাতীয় শরবত পান করা যাবে না। রোজা ভাঙতে হবে খেজুর বা এ জাতীয় খাবার দিয়ে। এরপর ধীরে ধীরে নরমাল পানি পান করতে হবে।

তিনি বলেন, চিনি ছাড়া লাচ্ছি, কম লেবু দিয়ে পুদিনা পাতার জুস, টক দইয়ের সঙ্গে পুদিনা পাতা ও সামান্য লবণ দিয়েও স্মুদি করেও পান করা যেতে পারে। এ ধরনের পানীয় গ্যাস কমাতে কার্যকরী।

অ্যাসিডিটি কমাতে ইফতারে যা খাবেন, যা খাবেন না :  

ইফতারের মেন্যুতে তরল জাতীয় খাবার, সহজে হজম হয় এমন খাবার, ফাইবার জাতীয় খাবার খেতে হবে। পাতলা খিচুড়ি, স্যুপ, সাবুদানার আইটেম, সেদ্ধ ভেজিটেবল, চাইনিজ ভেজিটেবল ও মোমো খাওয়া যেতে পারে।

ইফতারের মেন্যুতে চর্বি ও ট্র্যান্সফ্যাট জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। রাখতে হবে প্রোটিন জাতীয় খাবারও। 

ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত ও মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 

একসঙ্গে অনেক ধরনের খাবার খাওয়া যাবে না। কারণ একসঙ্গে সব ধরনের খাবার হজম হতে পারে না।

যাদের টক জাতীয় খাবারে অ্যাসিডিটি হয়, তারা এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলবেন।

অ্যাসিডিটি কমাতে যা করা যেতে পারে :

ইফতার করার পর অ্যাসিডিটি হলে দুই তিনটি পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেয়ে নেয়া যেতে পারে। চাইলে এক কাপ পানিতে কয়েকটি পুদিনা পাতা দিয়ে সেদ্ধ করে সেই পানি পান করাও যেতে পারে।

অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পেতে আদা কুচি করে কেটে লবণ দিয়ে খেতে পারেন।

এ ছাড়া অ্যাসিডিটি কমাতে মৌরি চিবিয়ে খেতে পারেন। এটি পাকস্থলী ও অন্ত্রের পেশিতে প্রভাব ফেলে যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।

নিউজ ট্যাগ: ইফতার

আরও খবর



নবীগঞ্জে বাস চাপায় প্রাণ গেল দু’জনের

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মডেলবাজার নামক স্থানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেলবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আউশকান্দি ইউনিয়নের মংলাপুর গ্রামের কনা মিয়ার ছেলে হাসান আহমদ (২০) ও একই গ্রামের ওয়ারিশ মিয়ার ছেলে মো. সাদিক মিয়া (৩৫)।

আউশকান্দি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সাহেল আহমদ বলেন, বুধবার রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেল বাজার এলাকায় সিলেটগামী দ্রুতগতির আল মোবারাকা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সাদিক ও হাসানকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাদিক মিয়া ও হাসান আহমদ নিহত হন।

খবর পেয়ে শেরপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তা লাশ উদ্ধার করে।

শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল চন্দ্র দেব দুর্ঘটনায় নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।


আরও খবর