আজঃ বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

ইসলামে নারীদের মর্যাদা ও অধিকার

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৫ জুলাই ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

বিশ্বমানবতার কল্যাণের অনন্য জীবন ব্যবস্থার নাম ইসলাম। নারী ও পুরুষসহ কোনো সৃষ্টির অধিকার ও স্বাধীনতা ইসলাম খর্ব করেনি। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় আলোচিত সামাজিক মহামারী নারী নির্যাতন’। এই নারী নির্যাতন রোধে করে নারীকে পূর্ণ স্বাধীনতা ও অধিকার দিয়েছে ইসলাম। শুধু ইসলামি জীবনদর্শনই নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম।

বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও অহরহ ঘটে চলেছে নারীর প্রতি নির্যাতন। যারা নারী অধিকারের ব্যাপারে সরব, তারা দিতে পারছে না নারীকে যথাযথ সম্মান, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও কাঙ্ক্ষিত অধিকার। ইসলামই একমাত্র জীবন ব্যবস্থা; যা নারীকে দিয়েছে যথাযথ মর্যাদা, সম্মান, স্বাধীনতা ও কাঙ্ক্ষিত অধিকার।

নারীর মর্যাদা:

নারী হবে পারস্পরিক সাহায্যকারী বন্ধু, সৎকাজের প্রতি উৎসাহ দানকারী, অসৎকাজে বাধা প্রদানকারী, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পথে আহ্বানকারী, হজ, জাকাত, ইবাদত-বন্দেগি পালনকারী এবং সামাজিক প্রায় সব কাজেই পুরুষের মতো নারীদের অংশগ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনাকারী। ইসলাম এর কোনোটিতেই বাধা দেয় না বরং এসব কাজে অংশগ্রহণে নারীকে ইসলাম উৎসাহ দেয়।

কোরআনুল কারিমে এসেছে-

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِذَا جَاءكَ الْمُؤْمِنَاتُ يُبَايِعْنَكَ عَلَى أَن لَّا يُشْرِكْنَ بِاللَّهِ شَيْئًا وَلَا يَسْرِقْنَ وَلَا يَزْنِينَ وَلَا يَقْتُلْنَ أَوْلَادَهُنَّ وَلَا يَأْتِينَ بِبُهْتَانٍ يَفْتَرِينَهُ بَيْنَ أَيْدِيهِنَّ وَأَرْجُلِهِنَّ وَلَا يَعْصِينَكَ فِي مَعْرُوفٍ فَبَايِعْهُنَّ وَاسْتَغْفِرْ لَهُنَّ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

‘হে নবি! ঈমানদার নারীরা যখন আপনার কাছে এসে আনুগত্যের শপথ করে যে, তারা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, জারজ সন্তানকে স্বামীর ঔরস থেকে আপন গর্ভজাত সন্তান বলে মিথ্যা দাবি করবে না এবং ভাল কাজে আপনার অবাধ্যতা করবে না, তখন তাদের আনুগত্য গ্রহণ করুন এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল অত্যন্ত দয়ালু।’ (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ১২)

ইসলামের দৃষ্টিতে নারী

ইসলাম পূর্ব যুগে যখন নারীর অবস্থান ছিল অমানবিক; তখন থেকেই ইসলাম নারীর অধিকার ও মর্যাদা উন্নয়নের জন্য নজীরবিহীন সব ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ইসলাম দিয়েছে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা-

* শ্রেষ্ঠত্বে নারী:

নারীকে মানুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছে ইসলাম। বিধান পালনে নারী-পুরুষের প্রতি সমান নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। তুলে ধরেছেন নারীর নিরাপত্তার বিধানও। মহান আল্লাহ বলেন-

وَلَقَدۡ كَرَّمۡنَا بَنِيٓ ءَادَمَ

‘আর নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তানদেরকে সম্মানিত করেছি।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৭০)

এ আয়াত থেকে প্রমাণিত মানবিক সম্মান ও মর্যাদার বিচারে নারী ও পুরুষের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো নারীকে শুধু নারী হয়ে জন্মানোর কারণে পুরুষের তুলনায় হীন ও নীচ মনে করা সম্পূর্ণ অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছুই নয়। ইসলামের দৃষ্টিতে নারীরাও মহান আল্লাহর সম্মানিত সৃষ্টি।

* মর্যাদায় নারী:

ইসলামের দৃষ্টিতে ঈমান-আমল ও ইবাদতে নারী-পুরুষের মর্যাদাগত কোনো পার্থক্য নেই। পার্থক্য আছে বলে মনে করাও অজ্ঞতা। ইসলাম সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, মর্যাদা-লাঞ্ছনা এবং মহত্ত্ব-নীচতার মাপকাঠি হচ্ছে- তাকওয়া তথা পরহেজগারী এবং নৈতিক চরিত্র। তাকওয়া ও চরিত্রের মাপকাঠীতে যে যতটা খাঁটি প্রমাণিত হবে আল্লাহর কাছে সে ততটাই সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

১. مَنۡ عَمِلَ صَٰلِحا مِّن ذَكَرٍ أَوۡ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤۡمِن فَلَنُحۡيِيَنَّهُۥ حَيَوٰةٗ طَيِّبَة وَلَنَجۡزِيَنَّهُمۡ أَجۡرَهُم بِأَحۡسَنِ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ

‘যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমানদার পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক; আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব; যা তারা করত।’ (সুরা নাহল : আয়াত ৯৭)

২. فَاسْتَجَابَ لَهُمْ رَبُّهُمْ أَنِّي لاَ أُضِيعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنكُم مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى بَعْضُكُم مِّن بَعْضٍ

‘এরপর তাদের পালনকর্তা তাদের দোয়া (এই বলে) কবুল করে নিলেন যে, আমি তোমাদের কোনো পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে পুরুষ * সামাজিক কাজে নারী:

কর্ম তৎপরতা ও উত্থান-পতনের সব ক্ষেত্রেই নারী-পুরুষ সব সময় একে অপরকে সহযোগিতাকারী। আল্লাহ তাআলা এক্ষেত্রেও উভয়কে সম মর্যাদা দান করেছেন। নারী-পুরুষের পারস্পরিক মিলে জীবনের কঠিন কাজগুলো সহজ হয়ে যায়। উভয়ের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সভ্যতা ও তামাদ্দুনের ক্রমবিকাশ ঘটে। আল্লাহ বলেন-

وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاء بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللّهَ وَرَسُولَهُ أُوْلَـئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللّهُ إِنَّ اللّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ

‘আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভালো কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ (কথা ও কাজ) থেকে বিরত রাখে। নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তাআলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।’ (সুরা তাওবাহ : আয়াত ৭১)

* দোষারোপ থেকে নারীর মুক্তি:

দাম্পত্য জীবনে নারীকে কোনোভাবেই অকল্যাণকর মনে করার সুযোগ নেই। আবার সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীকে দোষারোপ করারও কোনো সুযোগ নেই। বরং সন্তান জন্মদান ও কল্যান-অকল্যান সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশনা এমন-

لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاء يَهَبُ لِمَنْ يَشَاء إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَن يَشَاء الذُّكُورَ - أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَن يَشَاء عَقِيمًا إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِيرٌ

‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তাআলার জন্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।’ (সুরা শুরা : আয়াত ৪৯-৫০)

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহ আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমরা আমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে এবং প্রাণ খুলে মেলামেশা করতেও ভয় পেতাম; এই ভেবে যে- আমাদের সম্পর্কে কোনো আয়াত যেন  নাজিল না হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তিকালের পর আমরা প্রাণ খুলে তাদের (স্ত্রীদের) সঙ্গে মিশতে শুরু করলাম।’ (বুখারি)

* নারীর প্রতি জুলুমরোধে পুরস্কারের ঘোষণা

অন্ধকার যুগে নারীর বেঁচে থাকার অধিকার পর্যন্ত ছিল না। ইসলামের ঘোষণা এলো এভাবে- না’, তারাও জীবিত থাকবে এবং যে ব্যক্তিই তার অধিকারে হস্তক্ষেপ করবে; মহান আল্লাহর কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَإِذَا الْمَوْؤُودَةُ سُئِلَتْ - بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ

‘যখন জীবন্ত কবর দেওয়া কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হবে- কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল? (সুরা তাকভির : আয়াত ৮-৯)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেয়ে সন্তানদের হত্যা প্রতিরোধে বিশেষ ঘোষণা দেন এভাবে-

১. হজরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তির মেয়ে সন্তান আছে, আর যে তাকে জীবন্ত কবর দেয়নি কিংবা তার সঙ্গে লাঞ্ছনাকর আচরণ করেনি এবং পুত্র সন্তানকে তার উপর অগ্রাধিকার দেয়নি; আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (আবু দাউদ)

২. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি কন্যা সন্তান লালন-পালন করেছে, তাদেরকে উত্তম আচরণ শিখিয়েছে, বিয়ে দিয়েছে এবং তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করেছে; সে জান্নাত লাভ করবে।’ (আবু দাউদ)

* নারীর প্রতি আচরণ:

নারীর প্রতি কোমল ও সদয় ব্যবহারের নির্দেশ এসেছে কোরআনে। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার পুরুষদেরকে দাম্পত্য জীবন পরিচালনায় এভাবে উপদেশ দিয়েছেন-

وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ

‘নারীদের সঙ্গে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৯)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের কাঁচের সঙ্গে তুলনা করতেন। তাদের প্রতি সদয় হওয়ার তাগিদ দিতেন এভাবে-

’কাঁচগুলোকে (স্ত্রীদেরকে) একটু দেখে শুনে যত্নের সঙ্গে নিয়ে যাও।’ (মুসলিম)

আধুনিকতার নামে নারীর প্রতিবন্ধকতা:

আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীকে অগ্রসর করে নেওয়া, স্বাধীনতা দেওয়া এবং নারীর ক্ষমতায়নের নামে বরং নারীকে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত এবং বহু ক্ষেত্রে তারা নির্যাতিত। যেসব ক্ষেত্রে আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা এখনো নারীর পাশে দাঁড়াতে পারেনি,

তাহলো-

১. ঘরের বাইরে নারীর চলাফেরায় নিরাপত্তা।

২. পাচারের শিকার হওয়া থেকে নিরাপত্তা।

৩. জোরপূর্বক বেশ্যাবৃত্তিতে বাধ্য করা থেকে নিরাপত্তা।

৪. যৌন হয়রানির শিকার থেকে নিরাপত্তা।

৫. স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও ননদ কর্তৃক নববিবাহিতা, গর্ভবতী নারী কিংবা সাধারণ নারীকে নির্যাতন থেকে মুক্তির নিরাপত্তা।

৬. যৌতুকের বলি হয়ে মৃত্যুবরণ করাও রোধ হয়নি।

৭. স্বামী ও পিতার সম্পত্তির অধিকার থেকে এখনো বঞ্চিত নারীরা।

৮. অধিকাংশ নারীই পায় না মোহরানার অধিকার। এমনকি আধুনিক সমাজ মোহরানা ছাড়াই কিংবা প্রতীকী এক টাকা/সামান্য গিফট ইত্যাদি নজির গড়ে নারীকে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা হওয়া থেকে বঞ্চিত করছে।

৯. মেয়ে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ গৃহপরিচারিকার কাজ থেকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা। বরং অনেকক্ষেত্রে যারা আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় নারীর স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়নে আওয়াজ তুলছে, তারাই এ মেয়ে শিশু শ্রমিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

১০. আজও নারীদের শ্রমের সঠিক মূল্যয়ন করা হয় না।

১১. আধুনিক সভ্যতায় এ যুগে নারীর ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতার উচ্চ আওয়াজের এ সময়েও নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

১২. এমনকি ধর্মীয় অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয় নারীকে।

১৩. অহরহ ঘটে চলেছে ইসলামের সবচেয়ে নিকৃষ্ট হালাল কাজ তালাকের অপব্যবহার।

নারীর অধিকার, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতায় করণীয়

সুতরাং নারী এসব নির্যাতন রোধে ইসলাম দিয়েছে সঠিক ও সুন্দর দিকনির্দেশনা। ইসলাম নারীর শিক্ষা অর্জনের অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, স্বাধীন চিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার ইত্যাদির নিশ্চয়তা বিধান করেছে। এমনকি ইসলামি শরিয়াতের সীমার মধ্যে থেকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ব্যাপারে পুরুষের মতো শ্রম-সাধনা করায় নারীর সমান অংশগ্রহণের অনুমতিও রয়েছে।

ইসলামে নারীরা তাদের মান মর্যাদা ও ইজ্জত-আব্রু হেফাজরে নিশ্চয়তাই পায় না বরং নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে পায় সঠিক দিকনির্দেশনা। নিরাপত্তা, অধিকার ও স্বাধীনতায় কোরআনুল কারিমের নির্দেশনাগুলো এমন-

* নারীর নিরাপত্তায় উপদেশ

নারীর সার্বিক নিরাপত্তার বিধান দিয়েছে ইসলাম। রাস্তায়, কর্মস্থলে ও যত্রতত্র নারীদের হয়রানি করা তো দূরের কথা বরং ইসলাম নারীদের সৌন্দর্যের প্রতি দৃষ্টি দিতেও কঠোর নির্দেশ দেয়। আল্লাহ বলেন-

قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ

’হে রাসুল! আপনি) মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।‘ (সুরা নুর : আয়াত ৩০)

আর কেউ যেন নারীকে হয়রানি না করে সে জন্য নারীকে বোনের দৃষ্টিতে দেখার ঘোষণা দেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেছেন-

إِنَّمَا النِّسَاءُ شَقَائِقُ الرِّجَال

’নারীরা পুরুষদের সহোদরা (বোন)।’ (আবু দাউদ)

* ব্যভিচার-ধর্ষণ-অপবাদ প্রতিরোধ

ইসলাম ব্যভিচার, দেহব্যবসা, নগ্নতা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও দেহপ্রদর্শনীকে নিষিদ্ধ করেছে। শুধু তাই নয়, ইসলামে নারীকে ধর্ষণ করা কিংবা ধর্ষণের চেষ্টা করা এবং নারীকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার অত্যন্ত ভয়াবহ শাস্তি ঘোষণা করেছে। যাতে খারাপ চিত্তের পুরুষগণ এসব অবাঞ্ছিত কাজ থেকে বিরত থাকে। একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-

১. وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاء سَبِيلاً

আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৩২)

২. وَلاَ تَقْرَبُواْ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ

’আর তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতার কাছাকাছি যেও না।।’ (সুরা আল-আনআম : আয়াত ১৫১)

৩. إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَن تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ

’যারা পছন্দ করে যে, ঈমানদারদের মধ্যে ব্যভিচার প্রসার লাভ করুক, তাদের জন্যে ইহাকাল ও পরকালে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। আল্লাহ জানেন, তোমরা জান না।’ (সুরা নুর : আয়াত ১৯)

৪. إِنَّ الَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ الْغَافِلَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ لُعِنُوا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ

’যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি।’ (সুরা নুর : আয়াত ২৩)

* নারীর অধিকার বাস্তবায়নে ইসলাম

নারী অধিকার বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম। এ অধিকার সম্পদের, সম্মানের, নেতৃত্বের, দাম্পত্য জীবনের, সমাজের। এ অধিকার আল্লাহ তাআলা কর্তৃক নির্ধারিত। চাইলে যে কেউ নারীকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। নারীর অধিকারের বিষয়ে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন-

يُوصِيكُمُ اللّهُ فِي أَوْلاَدِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنثَيَيْنِ فَإِن كُنَّ نِسَاء فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِن كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ وَلأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُ وَلَدٌ فَإِن لَّمْ يَكُن لَّهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلأُمِّهِ الثُّلُثُ فَإِن كَانَ لَهُ إِخْوَةٌ فَلأُمِّهِ السُّدُسُ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِي بِهَا أَوْ دَيْنٍ آبَآؤُكُمْ وَأَبناؤُكُمْ لاَ تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعاً فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيما حَكِيمًا

’আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন, একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দুই-এর অধিক, তবে তাদের জন্য ওই মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের বাবা-মার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে রেখে যাওয়া সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের ছেলে থাকে। যদি ছেলে না থাকে এবং বাবা-মা ওয়ারিস হয়, তবে মা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ। ওসিয়ত পূরণ করার পর; যা (ওসিয়ত) করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের বাবা ও ছেলের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১১)

এ আয়াতে নারী ক্ষেত্র বিশেষ যেমন পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি পাবে; আবার বিশেষ ক্ষেত্রে নারীর সমান অর্ধেক সম্পত্তিও পাবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আর নারীকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার ঘোষণা করেছে ইসলাম।

* মোহরের অধিকার

 নারীর মোহরানার অধিকার সম্পর্কেও ইসলাম সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

১. يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللَّاتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ

হে নবি! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদের আপনি মোহরানা প্রদান করেন।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৫০)

২. وَآتُواْ النَّسَاء صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا

’আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪)

৩. يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَحْلَلْنَا لَكَ أَزْوَاجَكَ اللَّاتِي آتَيْتَ أُجُورَهُنَّ وَمَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ مِمَّا أَفَاء اللَّهُ عَلَيْكَ وَبَنَاتِ عَمِّكَ وَبَنَاتِ عَمَّاتِكَ وَبَنَاتِ خَالِكَ وَبَنَاتِ خَالَاتِكَ اللَّاتِي هَاجَرْنَ مَعَكَ وَامْرَأَةً مُّؤْمِنَةً إِن وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَن يَسْتَنكِحَهَا خَالِصَةً لَّكَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ قَدْ عَلِمْنَا مَا فَرَضْنَا عَلَيْهِمْ فِي أَزْوَاجِهِمْ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ لِكَيْلَا يَكُونَ عَلَيْكَ حَرَجٌ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

’হে নবি! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা (মোহর) ফরজ করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা আহজাব : ৫০)

* নারীর নির্যাতনের প্রতিরোধ:

নারীকে যে কোন ছুঁতোয় দৈহিকভাবে কিংবা মানসিকভাবে নির্যাতন করা ইসলামি শরীয়তে বৈধ নয়। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের জীবনে তার কোনো স্ত্রী  কিংবা কন্যার গায়ে হাত তোলেননি।

আবার বাসা-বাড়িতে কর্মরত কাজের মেয়ে কিংবা বুয়ারাও ক্রীতদাসী নয়। ইসলামে ক্রীতদাস প্রথাবিলোপ করা হয়েছে। বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাস-দাসীদের ব্যাপারে বিশেষ নসিহত পেশ করেছেন-

’তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে সাবধান! তোমাদের দাস-দাসীদের ব্যাপারে সাবধান! তোমাদের দাসদাসীদের ব্যাপারে সাবধান! তোমরা যা খাবে তাদেরকে তা খেতে দেবে এবং তোমরা যা পরবে তাদেরকে তা পরতে দেবে।’ (মুসনাদ আহমাদ, আত-তাবাকাত আল-কুবরা)

* নারীর প্রতি অপবাদ দেওয়ার শাস্তি:

ইসলামে নারীকে অপবাদ দেওয়া নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এভাবে-

وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاء فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا وَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ

’যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই নাফারমান।’ (সুরা নুর : আয়াত ৪)

* তালাকের অপব্যবহার প্রতিরোধ

স্বামী-স্ত্রীর অস্বস্তিকর জীবনের সুন্দর সমাধানের জন্য ইসলাম তালাকের বিধান রেখেছে। স্বামীর হাতে যদিও তালাকে প্রাথমিক অধিকার ন্যস্ত হয়েছে, কিন্তু সে অধিকার অন্যায়ভাবে প্রয়োগ করাও ইসলামি শরিয়তে আরেকটি অন্যায় ও গোনাহের কাজ হিসেবে বিবেচিত।

মনে রাখা জরুরি:

বিয়ে যেভাবে সামাজিক সমঝোতার ভিত্তিতে হয়ে থাকে ঠিক তেমনি তালাকও উভয়ের বোঝাপড়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয় ইসলাম। এ ব্যাপারে ইসলামের দিকনির্দেশনা হলো এমন-

وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُواْ حَكَمًا مِّنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِّنْ أَهْلِهَا إِن يُرِيدَا إِصْلاَحًا يُوَفِّقِ اللّهُ بَيْنَهُمَا إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا

’যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৩৫)

অতঃপর করণীয় কী হবে? এ সম্পর্কেও আল্লাহ তাআলা বলেন-

الطَّلاَقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلاَ يَحِلُّ لَكُمْ أَن تَأْخُذُواْ مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلاَّ أَن يَخَافَا أَلاَّ يُقِيمَا حُدُودَ اللّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلاَّ يُقِيمَا حُدُودَ اللّهِ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللّهِ فَلاَ تَعْتَدُوهَا وَمَن يَتَعَدَّ حُدُودَ اللّهِ فَأُوْلَـئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

’তালাকে-‘রাজঈ' হলো- দুবার পর্যন্ত। তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর তাদের কাছ থেকে নিজের দেওয়া সম্পদ থেকে কিছু ফিরিয়ে নেওয়া তোমাদের জন্য জায়েয নয়। কিন্তু যে ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই এ ব্যাপারে ভয় করে যে, তারা আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না; অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি বিনিময় দিয়ে অব্যাহতি নিয়ে নেয়, তবে উভয়ের মধ্যে কারোরই কোনো পাপ নেই। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা। কাজেই একে অতিক্রম করো না। বস্তুতঃ যারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করবে, তারাই জালেম।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২৯)

* পরকালের জবাবদিহিতা:

সর্বোপরি পরকালের জবাবদিহিতা নারীর অধিকার, সম্মান, স্বাধীনতা ইত্যাদি সযোগ-সুবিধা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। কারণ নারী-পুরুষ প্রত্যেককেই পরকালে তার কাজের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে।

সুতরাং যে বা যারা নারী কিংবা পুরুষ নির্যাতন করে থাকে; তাদের এ কথা স্মরণ রাখা জরুরি যে, এ নির্যাতনের জন্য অবশ্যই তাকে আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে জবাবদিহি করতে হবে। আর এ জবাবদিহিতাই মানুষকে নারী/পুরুষ নির্যাতনসহ যে কোনো অন্যায় কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে। জবাবদিহিতা থাকলে নারী-পুরুষ সবাই উত্তম চরিত্রের মুসলিমে পরিণত হবে, ইন শা আল্লাহ।

সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত, নারীর নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সম্মান ও নির্যাতনরোধে ইসলামের দিকনির্দেশনা মেনে চলা জরুরি। তবেই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে নারী পাবে সম্মান, নিরাপত্তা, স্বাধীনতা।

আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার সব মানুষকে নারীর দায়িত্ববোধ, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তায় যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দিতে ইসলামের বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। সব কল্যাণের বিষয়ে নারীর ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে ইসলামের সৌন্দর্য ও দিকগুলো বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪




যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাসের পরও গাজায় বিরামহীন বোমা হামলা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাস্তবায়নেরও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এতে চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন ঘরবাড়ি হারানো লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। অর্ধহারে-অনাহারে প্রায় খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন তারা।

ইউনিসেফের মুখমাত্র জেমস এল্ডার জানিয়েছেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হওয়ার পরেও গত দুইদিন ধরে গাজায় ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে চরম হতাশ গাজাবাসী।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হওয়ার পর আশায় জেগেছিলেন ক্ষুধার্ত গাজাবাসী। কিন্তু ইসরায়েলের বিরামহীন হামলায় সবকিছু নিরাশায় রূপ নিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৩২ হাজার ৪৯০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৮৮৯ জন।

গত সোমবার (২৫ মার্চ) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। পাস হওয়া এই প্রস্তাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির শর্ত রাখা হয়।

প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৪টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয়।


আরও খবর



আজ পবিত্র শবে কদর

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ধর্ম ও জীবন

Image

আজ পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সন্ধ্যা থেকে সারাদেশে দিনটি পালিত হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য ও রহমত লাভের আশায় ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে পবিত্র লাইলাতুল কদরের রজনী পালন করবেন।

মহান আল্লাহতায়ালা লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়। পবিত্র এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় এবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

পবিত্র রমজান মাসের লাইলাতুল কদরে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিল। তাই মহান আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন। মুসলমানরা নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিলের মধ্য দিয়ে শবে কদরের রজনী কাটাবেন।

পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। শবে কদর উপলক্ষে আগামীকাল রোববার (৭ এপ্রিল) সরকারি ছুটি থাকবে।


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪

শুক্রবারের বিশেষ ৪ আমল

শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪




বিশ্ববাজারে সোনার ভরি ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
অর্থ ও বাণিজ্য ডেস্ক

Image

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনার প্রভাব পড়ছে জ্বালানি তেলের বাজারে। গত শনিবার ইসরায়েলে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব পড়েছে স্বর্ণের বাজারেও। বাজার পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, বিশ্ব বাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ভরিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

১ আউন্স = ২৮.৩৫ গ্রাম। আর ১ ভরি = ১১.৬৬ গ্রাম। সে হিসাবে, বাংলাদেশি মুদ্রায় এক ভরি খাঁটি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যেখানে বর্তমানে দেশে এক ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতার কাছাকাছি চলে গেছে। কারণ মানুষ অস্থির পরিস্থিতিতে স্বর্ণে বিনিয়োগকেও অধিকতর নিরাপদ মনে করছেন।

সোনার ফিউচার ট্রেডিংয়ের (আগাম ক্রয়বিক্রয় চুক্তি) জন্য সবচেয়ে চাঙা বাজার ছিল গত বছরের জুনে। গতকাল সোমবার সেই বাজার শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে আউন্স প্রতি ২ হাজার ৩৮৩ ডলার হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই প্রবণতা চলতে থাকবে।

মার্কিন বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিটি গতকাল (১৫ এপ্রিল) একটি নোটে লিখেছে, সাম্প্রতিক সোনার বাজারের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পেছনে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব রয়েছে। এই বাজার রেকর্ড ইক্যুইটি সূচক স্তরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।

গত শনিবার রাতে ইরান সরাসরি ইসরায়েলে ৩০০ টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। যতিও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম বেশির ভাগ হামলাই ঠেকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এ ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় ঘি ঢেলেছে। এই পরিস্থিতিতে মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগ খুঁজছে।

বাজার পর্যবেক্ষকেরা ইসরায়েলের সম্ভাব্য প্রতিশোধ প্রতিক্রিয়ার দিকে নজর রাখছে। ইসরায়েল সরকার শনিবারের পর থেকেই ইরানকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এমন কোনো পদক্ষেপকে ওয়াশিংটন সমর্থন করবে না।

এরপরও ইসরায়েল প্রতিশোধ নিতে চাইলে এই সংঘাত উপসাগরীয় অঞ্চলও ছাড়িয়ে যেতে পারে। ফলস্বরূপ সোনার বেচাকেনা আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে জ্বালানি তেলের দাম, আরও শক্তিশালী হবে মার্কিন ডলার। আর্থিক পরিষেবা সংস্থা কনোটক্সিয়া ফিনটেকের বাজার বিশ্লেষক বার্তোসজ সাউইকি এমনটিই মনে করছেন।

স্বর্ণ সব সময় মূল্যস্ফীতির বিপরীতে একটি নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বাজারে উচ্চমূল্য ধরে রাখে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে বিনিয়োগকারীরা যখন ইক্যুইটি বা শেয়ারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ এড়িয়ে চলেন তখন স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকে।

গত শুক্রবার বুলিয়নের (খাঁটি সোনা) দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ আউন্সপ্রতি ২ হাজার ৪৪৮ দশমিক ৮০ ডলারে পৌঁছায়।

বৈশ্বিক কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর নানা নিয়ন্ত্রণমূলক নীতি, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশাসহ বিভিন্ন কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

স্বর্ণের দাম সাধারণত সুদের হারের সঙ্গে বিপরীত সম্পর্ক রাখে। সুদের হার কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ডের মতো স্থায়ী মুনাফার সম্পদের তুলনায় সোনা বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। যদিও সোনায় বিনিয়োগ থেকে তুলনামূলক কম মুনাফা আসে।

গত মার্চে ধারণার চেয়েও বেশি মূল্যস্ফীতি কমে গেছে। এরপরও বিশ্লেষকেরা, স্বর্ণের বাজারে ঊর্ধ্বগতির সম্ভাবনা দেখছেন। সরাসরি স্বর্ণ কেনার চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে এটিকে বেছে নিচ্ছে মানুষ।

সিটির উত্তর আমেরিকার পণ্য গবেষণার প্রধান আকাশ দোশির নেতৃত্বে বিশ্লেষক দল বলছে, আগামী ৬ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলার হবে বলে আমাদের ধারণা। পাশাপাশি স্বর্ণের ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যও প্রায় ১ হাজার ডলার থেকে ২ হাজার ডলারে উন্নীত হয়েছে।

গত শুক্রবার, গোল্ডম্যান স্যাস সোনার বাজারকে একটি অপ্রতিরোধ্য ঊর্ধ্বমুখী বাজার হিসেবে উল্লেখ করেছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই মূল্যবান ধাতুর দাম প্রতি আউন্স ২ হাজার ৩০০ ডলার থেকে ২ হাজার ৭০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।


আরও খবর
ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে কি না জানা যাবে আজ

বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪

আলুর দাম বাড়ার কারণ জানা গেল

বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪




নিজ্জর হত্যার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে যা বললেন ট্রুডো

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

খলিস্তানপন্থি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার তদন্তে ভারত সরকারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে চাইছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বৃহস্পতিবার কানাডাভিত্তিক কেবল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স চ্যানেলকে (সিপিএসি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান। খবর এনডিটিভির।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এই হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের এজেন্টরা জড়িত ছিল তা একটি বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ। তবে বিদেশি সরকারের বেআইনি কর্মকাণ্ড থেকে কানাডার সব নাগরিককে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। তাই আমাদের দেশের মাটিতে কানাডার একজন নাগরিকের হত্যার বিষয়টিকে আমাদের সবার অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নেওয়া উচিত।'

সিপিএসিকে ট্রুডো আরও বলেন, নিজ্জর হত্যার বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হচ্ছে তা নিশ্চিত করছে কানাডার সরকার। ভারত সরকারের সঙ্গে নিজ্জর হত্যার তদন্তে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে চাইছে কানাডা। কানাডার আর কোনো নাগরিক যেন কোনো আন্তর্জাতিক শক্তির বিদেশি হস্তক্ষেপে ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে, সে কারণে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে আমরা কাজ করছি।'

গত বছরের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় একটি শিখ মন্দিরের বাইরে নিজ গাড়িতে খুন হন খালিস্তানপন্থি নেতা নিজ্জর। কানাডার এই শিখ নেতাকে দুই বন্দুকধারী গুলি করে হত্যা করেন।

নিজ্জার হত্যায় ভারত সরকারের ভূমিকা আছে বলে অভিযোগ করেছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। যদিও ভারত এ অভিযোগটি অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।


আরও খবর



দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল গ্রেফতার

প্রকাশিত:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টটরেট (ইডি)। মদনীতি কেলেঙ্কারির মামলায় বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এনডিটিভি জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইডির ১২ সদস্যের একটি দল তল্লাশির ওয়ারেন্ট নিয়ে আম আদমি পার্টি প্রধান ও মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের বাসায় যায়। গ্রেফতারের আগে সেখানেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মদনীতি কেলেঙ্কারির মামলাটি তারা মানিলন্ডারিংয়ের দিক থেকে তদন্ত করছিল।

ইডির দল বাসায় ঢুকে কেজরিওয়াল ও তার স্ত্রীর ফোন নিয়ে নেয়। এছাড়া দুটি ট্যাবলেট ও একটি ল্যাপটপ থেকে তথ্য স্থানান্তর করে।

ইডির দল যখন তাকে বাসায় জিজ্ঞাসাবাদ করছিল তখন বাইরে পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন ছিল। এসময় সেখানে দলের অনেক নেতাকর্মী জড়ো হয়ে গ্রেফতারের প্রতিবাদ করতে থাকেন।

এ সময় দিল্লির মন্ত্রী অতিশি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ইডি আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ষড়যন্ত্রের শিকার তিনি। দুই বছর আগে থেকে তদন্ত শুরু হলেও ১০ হাজার বার তল্লাশি চালিয়েও দলের নেতা এবং মন্ত্রীদের কাছ থেকে ইডি বা সিবিআই এক রুপিও উদ্ধার করতে পারেনি।

কেজরিওয়ালকে নির্দোষ দাবি করে অতিশি বলেন, তাদের লড়াই চলবে এবং মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে তারা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। আজ রাতেই এই মামলার শুনানির জন্য আমাদের আইনজীবী কোর্টে যাবেন।

স্বাধীন ভারতে কেজরিওয়ালই প্রথম যিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় গ্রেফতার হলেন। তবে গ্রেফতার হলেও কেজরিওয়ালই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।


আরও খবর