গত মাসে অপরিশোধিত ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন কমেছে। এ নিয়ে টানা নয় মাস ধরে উৎপাদনে নিম্নমুখিতা অব্যাহত আছে। এতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে চীন। তবে ভারতের উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি এসেছে। ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী, অপরিশোধিত ইস্পাতের বৈশ্বিক উৎপাদন গত মাসে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। মোট উৎপাদন হয়েছে ১৬ কোটি ১০ লাখ টন। গত বছরের জুলাইয়ের পর থেকে ইস্পাত উৎপাদন অব্যাহতভাবে কমছে। তখন থেকেই এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে চীন। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের জুনে বৈশ্বিক উৎপাদন ১১ শতাংশ বেড়েছিল।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ধাতুটির বৈশ্বিক উৎপাদন কমেছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ টন।
ওয়ার্ল্ডস্টিলের দেয়া তথ্যে দেখা গিয়েছে, প্রথম প্রান্তিকে চীনে ইস্পাত উৎপাদন কমেছে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সময় সব মিলিয়ে ২৪ কোটি ৩৪ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়। মার্চে উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। উৎপাদন হয়েছে ৮ কোটি ৮৩ লাখ টন। তবে এক বছরের ব্যবধানে উৎপাদন কমলেও চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে। ওই দুই মাসে সব মিলিয়ে ৮ কোটি ৩০ লাখ ও ৮ কোটি ১৭ লাখ টন করে উৎপাদন হয়েছিল।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধজনিত কারণের পাশাপাশি সম্প্রতি চীনে করোনা মহামারীর ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ প্রবাহ নিম্নমুখী উৎপাদনে জ্বালানি জুগিয়েছে। দেশটিতে মহামারী দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সংক্রমণের হার দ্বিগুণ বেড়েছে।
চীনের অর্থনৈতিক হাব হিসেবে খ্যাত সাংহাই শহরে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে কঠোর বিধিনিষেধ ও লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। সাংহাই ছাড়া অন্যান্য ১৭টি প্রাদেশিক পর্যায়ে কভিড-১৯ সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করছে। তবে ভারতে গত মাসে অপরিশোধিত ইস্পাতের উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ টনে। অন্যদিকে প্রথম প্রান্তিকে উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ১৯ লাখ টনে।
শুধু তাই নয়, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির তুলনায়ও উৎপাদন বেড়েছে। ওই দুই মাসে উৎপাদন ছিল যথাক্রমে ১ কোটি ১ লাখ ও ১ কোটি ৮ লাখ টন। মার্চে ভারতের উৎপাদন ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত মাসে উৎপাদন বৃদ্ধির দিক থেকে ব্রাজিল ছিল শীর্ষস্থানে। দেশটির ইস্পাত উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ৩০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। তবে প্রথম প্রান্তিকে উৎপাদন ২ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৮৫ লাখ টনে নেমেছে।
বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক জাপান। গত মাসে দেশটি ৮০ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কম। যদিও চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে। এদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার উৎপাদন কমেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। গত মাসে দেশটি ৬৬ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন করে। বছরের প্রথম প্রান্তিকে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ টনে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ২ শতাংশ কম।