ইউরোপের দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে ভয়াবহ এক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর এই ঘটনায় নিহত হয়েছে অন্তত ১৪ জন। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও অন্তত ২৫ জন। নিহতদের মধ্যে হামলাকারী ও তার বাবাও রয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে দেশটিতে একক বন্দুকধারীর হামলায় এত হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তাই এটিকে আধুনিক চেক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর একদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট পিতর পাভেল।
দেশটির পুলিশ প্রধান মার্টিন ভন্ড্রাসেক জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয় ব্যাপক অভিযান।
পরে ইউনিভার্সিটির ভেতরে অস্ত্রের একটি বড় মজুত আবিষ্কার করে পুলিশ। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে বন্দুকধারীর হোস্টউন এলাকার বাড়ি থেকে তার বাবাকেও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
এদিকে, হামলাকারী চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের একজন শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে আত্মহত্যা করার উদ্দেশ্য নিয়ে রাজধানীর বাইরে থেকে প্রাগে এসেছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের চতুর্থ তলা থেকে গুলিবর্ষণ শুরু করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকধারী সম্ভবত ওই ১৪ জনকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। তবে তিনি পুলিশের পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভন্ড্রাসেক জানিয়েছেন, বন্দুকধারী ওই শিক্ষার্থী খুবই মেধাবী ছিলেন ও তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। কিন্তু ঠিক কী কারণে তিনি এমন কাজ করেছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
এদিকে, পুলিশ প্রধান ভন্ড্রাসেক জানিয়েছেন, বন্দুকধারী শিক্ষার্থীর কাছে বেশ কয়েকটি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। হত্যাকাণ্ডটি পূর্ব পরিকল্পিত বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে, এ ঘটনার পরে এর আগে ঘটে যাওয়া আরেকটি হত্যাকাণ্ডের জন্য এই শিক্ষার্থীকেই সন্দেহ করছে পুলিশ। পুলিশ প্রধান ভন্ড্রাসেক জানান, সপ্তাহ খানিক আগে প্রাগের বাইরের একটি অঞ্চলে এক নারী ও তার দুই মাস বয়সী সন্তানকে একটি জঙ্গলে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় একই শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।