জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের নার্সকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৪ জুন) সকাল সাড়ে নয়টায় এ ঘটনা ঘটে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী নার্স।
অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৪৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক ছাত্র।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সকালে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদকে ইনজেকশন দিতে যান ভুক্তভোগী নার্স। এ সময় সে ওই নার্সের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। পরে নার্সের চিৎকারে তার সহকর্মীরা ডিউটি রুমে আসেন। যদিও তখন মামুনুর রশিদ সরে দাঁড়ান। এ ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত উল্লেখ করে যৌন হয়রানির সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগী নার্স।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ইনজেকশন নেওয়ার সময় নার্সের গায়ে হাত দেই। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি সত্য।
এদিকে এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের ফটকে তালা দেন কর্মচারী ইউনিয়ন ও কর্মচারী সমিতির সদস্যরা। ফলে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে প্রশাসনের অনুরোধে এবং সেবা নিতে আসা রোগীদের কথা বিবেচনায় তালা খুলে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, আমাদের সহকর্মী চিকিৎসা কেন্দ্রে কর্মরত অবস্থায় লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছে। এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচার না পেলে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেবো।
অন্যদিকে অভিযুক্তের রুমমেট ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মামুনুর রশিদ মানসিকভাবে অসুস্থ। গত বৃহস্পতিবার হলের নিজ কক্ষে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে শহীদ সালাম-বরকত হলের ওয়ার্ডেন এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুবুল মোর্শেদ বলেন, মামুনুর রশিদ নিজের কক্ষে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বলে তার বন্ধুরা জানিয়েছে। পরে তাকে হল অফিসে ডেকে কাউন্সিলিংয়ের চেষ্টা করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলে ফরওয়ার্ড করা হবে। এ বিষয়ে সেল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।