প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেছিলেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তাতেও লাভ হয়নি। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম বিপ্লব তার আপিল খারিজ করে দেন। এ অবস্থায় উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাবেক এই মেয়র। তার এই সিদ্ধান্তে আবারও আশার আলো দেখছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। জাহাঙ্গীর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাবেন, এমনটাই আশা করছেন তারা।
প্রার্থিতা বাতিল ও ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা আমার মনোনয়নপত্র ঋণখেলাপি দেখিয়ে বাতিল করেছেন। বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আপিল করেছিলাম, সেটিও একতরফাভাবে শুনানির পর খারিজ করে দেওয়া হয়। যে কোম্পানির ঋণখেলাপি দেখিয়ে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে, তার সব বৈধ কাগজপত্র দেওয়ার পরও বিভাগীয় কমিশনার সেই কোম্পানির কাগজপত্র খতিয়ে না দেখেই অন্যায়ভাবে আপিল খারিজ করেন। এজন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।
এদিকে, জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিলের খবর কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ। দোকানপাট, বাজার-মহল্লায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে একই আক্ষেপ, ‘জাহাঙ্গীর গাজীপুরের জন্য অনেক করেছেন।’ সাধারণ মানুষও গন্ধ খুঁজছেন ষড়যন্ত্রের। তারা মনে করেন, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণেই তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। তারা বলছেন, জাহাঙ্গীর গাজীপুরবাসীকে ৫০ বছর এগিয়ে দিয়েছেন রাস্তাঘাট করে। জাহাঙ্গীরের অবদান তারা কখনোই ভুলবেন না।
গত ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী জাহাঙ্গীর আলম যে প্রতিষ্ঠানের জন্য জামিনদার হয়েছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানটি ঋণখেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ সময় সেখানে ব্যাংকের প্রতিনিধি ও জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করার কথা জানিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। পরে তিনি বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবেদন করেন। সেখানে গত বৃহস্পতিবার আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় নির্বাচন কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম তার আপিল আবেদন খারিজ করে দেন।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল, স্বতন্ত্র হারুন অর রশিদ, স্বতন্ত্র সরকার শাহানুর ইসলাম রনি, আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, স্বতন্ত্র জায়েদা খাতুন ও জাকের পার্টির রাজু আহমেদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল ২৭ এপ্রিল; বাছাই ৩০ এপ্রিল; প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মে। ২৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।