জামালপুরে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নার্সদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের পর ক্ষুব্ধ নার্সরা সেবা দেওয়া বন্ধ রাখলে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যহত হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার শহরের চন্দ্রা এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী জেসমিন বেগম (৫০) হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। পরে রাতে তিনি বাড়ি চলে যান, শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রোববার সকালে আবারও তাকে হাসপাতালে আনা হয়। দুপুরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসা অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত পাঁচজন নার্সকে মারধর করে রোগীর স্বজনরা। এ সময় সিনিয়র স্টাফ নার্স লাকি খাতুন, আশরাফুন্নাহার, শিখা খানম, মারুফা আক্তার, শারমিন ইসলাম মারধরের শিকার হন।
নার্সদের মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের সব ওয়ার্ডের নার্সরা চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ রাখে এবং বিচারের দাবিতে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টা থেকে ৩ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল।
রোগীর স্বজনদের দ্বারা মারধরের শিকার সিনিয়র স্টাফ নার্স আশরাফুন্নাহার জানান, কর্তব্যরত ডাক্তার যখন যেভাবে যা যা করতে বলেছেন আমরা সেভাবেই ওই রোগীকে সেবা দিয়েছি। রোগীর মৃত্যুর পর ডাক্তার স্বজনদের বুঝিয়ে বলেন যে, রোগী মারা গেছেন। ডাক্তার চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে মৃত রোগীর স্বজনরা নার্সদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এরপর ডিউটি রুমের বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে আমাদের আটকে রাখে, তারপর তারা রুমে ঢুকে টেনে হিচরে আমাদের বাইরে বের করে মারধর করে।
তিনি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমাদের বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। বিচার না পেলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান জানান, চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। রোগীর স্বজনদের দ্বারা মারধরের শিকার নার্সরা হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেনকে অবহিত করেছেন। তিনি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই ঘটনা সমাধানের আশ্বাস দিলে নার্সরা কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন। বর্তমানে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলমান আছে।