একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সংগঠন হিসেবে জামায়াত ইসলামীর বিচারের জন্য আইন সংশোধন এবং সেজন্য কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন।’
শনিবার (৬ মে) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (জাঠি) সিনিয়র সহকারী জজ/সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ১৪৮তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিচারকদের কর্মশালায় নিজের দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জুডিসিয়াল ডিসিশন যেগুলো হয় সেগুলো লিড করে আপিল বিভাগে দেয়। আপিল বিভাগ যে রায়গুলো দেন তাহলো জাজমেন্টাল ল’। মানে সেটিকেও আইন ধরা হয়। কারণ এ রায়কে আইনের সমমর্যাদা দেওয়া হয়। আমি যেটি বলতে চাচ্ছিলাম (কর্মশালায়) তা হলো, এ রায়গুলোকে যেন সবসময় শ্রদ্ধা করা হয় এবং এর বৈপরিত্য যেন না করা হয়, সেটাকেই বলে জুডিসিয়াল ডিসিপ্লিন। সেটাকেই রক্ষা করতে হবে। যে বিচারকরা দেশে যে পর্যায় থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন সে ক্ষেত্রে সেই বিষয়ে (প্রশিক্ষণ) পরিপক্বতা আনা এবং এ জিনিসগুলোকে মেনে চলার যে তাৎপর্য সেটিকেও আলাপ-আলোচনার মাঝে বলা উচিত বলেই এমনটি বলা (কর্মশালায়) হয়েছে।’
২০১৪ সাল থেকে দীর্ঘসময় ধরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দল হিসেবে জামায়াত ইসলামের বিচার ঝুলিয়ে রাখার বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিকদের) এটা মনে হওয়াটাও তো আমাদের (আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার) জন্য দুঃখের। কারণ এ সরকারই কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করেছে এবং তারা কিন্তু জামায়াতের হোতা ছিল, প্রতিষ্ঠাতা ছিল। সে ক্ষেত্রে আপনারা যদি মনে করেন আমরা উদ্যোগী (বিচারে) নই, তাহলে সেটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।’
তাহলে বিচার ঝুলে থাকার পেছনে কারণ কী হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা জানেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জামায়াতের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট যথেষ্ট নয়। আইনটি সংশোধন করা দরকার এবং সেই সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। আমি এতটুকুই বলবো, আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন।’
সংবিধানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিক হওয়ায় হাইকোর্টে দলটির নিবন্ধন বাতিলের পর আপিল বিভাগের থাকা মামলাটি নিষ্পত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ওই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না। কারণ এটি বিচারাধীন বিষয়। আমি বিচারাধীন বিষয়ে কখনো কথা বলি না।’