জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পুরস্কৃত করেছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যার পর সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছিল জিয়াউর রহমান। আমার ছোট বোনের পাসপোর্টটাও রিনিউ করতে দেয়নি সে। আমরা ১৯৮০ সালে লন্ডনে জাতির পিতার হত্যার বিচার চেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। সেই কমিটি ঢাকা আসতে চেয়েছিল, জিয়াউর রহমান ভিসাও দেয়নি।
রোববার (৮ অক্টোবর) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিসিএস কর্মকর্তাদের ৭৫তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সনদ প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৫টি প্রকল্প/কর্মসূচির আওতায় নির্মিত ভবন ও জিইএমএস (GEMS) সফটওয়্যার উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের আপনজন হারিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশ হারিয়েছিল তাদের ভবিষ্যৎ, ক্ষুধা, দারিদ্র্য থেকে মুক্তির পাওয়ার পথ। সবই হারিয়েছে। তখন ক্ষমতা দখল শুরু হয় হত্যা এবং ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে। একের পর এক, সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে এই ধরনের শাসন চলতে থাকে।
তিনি বলেন, ছয় বছর পর আমার অবর্তমানে আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করে। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর আমি ছোট বোনের সঙ্গে আলোচনা করে দেশে ফিরে আসা সিদ্ধান্ত নেই। আমার মেয়ে তখন বয়স ৮ বছর, ছেলের বয়স ১০ বছর। আমি এমন একটা দেশে আসছি যেখানে আমার মা-বাবার হত্যার বিচার হয়নি। ইনডেমনিটি অর্ডিনেস জারি করে তাদের বিচার হাত থেকে রক্ষা করে, তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল।
তার সরকার জনগণের প্রতিটি সংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের পথ বেয়ে আজকের এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বহু আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা। এটা কখনো বৃথা হতে দেবো না। সংবিধানে জনগণের যে অধিকার দেওয়া আছে তা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর একটি বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। যুদ্ধের সময় কোনো ফসল হয়নি। একটি টাকাও নেই। তারপরও স্কুল, কলেজ, রেল, ব্রিজ নির্মাণ করে দেশকে সাজাতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু সবকিছু সাজিয়ে যেতে পারেননি তিনি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, শেখ মুজিবের বাংলাদেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। আমারা প্রতিটি গ্রামকে সুন্দর কর সাজাবো। বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে। আজ বাংলাদেশকে কারও কাছে হাত পাততে হয় না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।