বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট বাড়িয়ে তুলছে ক্ষুধা, মৃত্যু ও রোগের প্রাদুর্ভাব। উন্নত দেশে সরকার এখনো জীবাশ্ম জ্বালানির পেছনেই ভর্তুকি দিয়ে চলছে। আর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলাফল ভোগ করছে দরিদ্র দেশগুলো। সম্প্রতি 'হেলথ অ্যাট দ্য মার্সি অব ফসিল ফুয়েলস' শিরোনামে ৫১টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০০ গবেষকের সম্মিলিত রিপোর্টে এমন মন্তব্য করা হয়। আগামী নভেম্বরে মিশরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কপ-২৭ সম্মেলনের আগে এই প্রকাশনা।
গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য ও বিদ্যুতের পাশাপাশি জীবন যাপনেও সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। শুধু ২০২১ সালেই অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে এক লাখ কোটি কর্মঘণ্টা হারিয়ে গিয়েছে। আর এই ক্ষতি সবচেয়ে বেশি পড়েছে কৃষি নির্ভর অঞ্চলে। কমে গেছে খাদ্য সরবরাহ ও আয়। তবে এই মুহূর্তে জলবায়ু সংকট নিরসন করতে পারলে পরিচ্ছন্ন বাতাস আর নিরাপদ খাবার সরবরাহের মাধ্যমে লাখো মানুষকে বাঁচানো যাবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, জলবায়ু সংকট আমাদের মেরে ফেলছে। কেবল আমাদের গ্রহই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণ, খাদ্য সংকট, ঝুঁকিপূর্ণ সংক্রামক ব্যাধি, অত্যাধিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খরা, বন্যা ও অন্যান্য কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সারা দুনিয়ার মানুষ। জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি এই নির্ভরতা চলতে থাকলে বিধ্বস্ত হয়ে পড়বে মানুষের স্বাস্থ্য, জীবিকা, গৃহায়ণ ও জাতীয় অর্থনীতি। নবায়নযোগ্য শক্তির প্রতি বিনিয়োগই কেবল নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর জীবনের নিশ্চয়তা দেবে বলেও জানান তিনি।
তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত ঝুঁকি একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এক বছরের কম এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ঝুঁকি ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে মানুষ কাজ করতে পারছে না। ফলে অর্থনীতির ওপর আঘাত আসছে। গত বছরেই এই ক্ষতি সাকুল্যে ৭০ হাজার কোটি ডলার। দেখা গেছে ১৯৫০ এর দশকের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি জমি এখন খরার কারণে আবাদ অযোগ্য। এই মুহূর্তে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া না হলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাবে। সবাইকে বিপুল মাশুল গুণতে হবে।