গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ‘টাইমড আউট’ হয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান
অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তাকে আউট দেওয়া আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস এবার আন্তর্জাতিক
ক্রিকেটে আম্পায়ারিংকে বিদায় বললেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ওয়েলিংটনে
শুরু হওয়া নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া টেস্টই হবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আইসিসির এলিট
প্যানেলের এই দক্ষিণ আফ্রিকানের শেষ ম্যাচ।
ক্রিকেট–বিষয়ক ওয়েবসাইট
ক্রিকবাজে অবসর বিষয়ে ৬০ বছর বয়সী এরাসমাস বলেন, ‘সিদ্ধান্তটা আমি
গত বছরের অক্টোবরে নিয়েছি। আইসিসিকে সেটা জানিয়েও দিয়েছি যে এপ্রিলে আমার চুক্তির
মেয়াদ শেষ হলে আর থাকছি না।’
এরাসমাস তার ১৮ বছরের আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারে
দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল পরিচালনার দায়িত্ব সামলেছেন। এছাড়া মেলবোর্নে ২০১৫
ফাইনালে ছিলেন টিভি আম্পায়ার। আর চার বছর পর লর্ডসে ‘বেয়ারেস্ট অব
অল মার্জিনস’-এর ফাইনালে ছিলেন মাঠেই। ভালো আম্পায়ারিংয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ
২০১৬, ২০১৭ ও ২০২১ সালে আইসিসি বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার (ডেভিড শেফার্ড ট্রফি)
জেতেন তিনি।
এরাসমাস অবশ্য একটি জায়গায় সব আম্পয়ার
থেকে আলাদা হয়ে আছেন। ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচে
সাকিব আল হাসানের আবেদনে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে টাইমড আউট দিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছেন
তিনি। কেননা ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবার এমন আউটের ঘটনা ঘটে।
অবসর প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এ কাজ করতে গিয়ে
সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় সঠিক সিদ্ধান্ত জানানোর মুহূর্তে। এটা সব সময়
কঠিন এবং বিশেষ ব্যাপার। কাজটা ঠিকভাবে করতে পারলে আনন্দ লাগে।’
এর আগে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জোহানেসবার্গে
অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের
অভিষেক হয় এরাসমাসের। তিন সংস্করণে সব মিলিয়ে তিনি ৩৭৮ ম্যাচ (১২৫ টেস্ট, ১৯২ ওয়ানডে,
৬১ টি-টোয়েন্টি) পরিচালনা করেছেন। এছাড়া মেয়েদের ম্যাচ পরিচালনা করেছেন ৭৯টি। ২০১০
সালে স্বদেশি আম্পায়ার রুডি কোয়ের্টজেন অবসর নিলে তার জায়গায় আইসিসির এলিট প্যানেলভুক্ত
হন। তবে তার অবসরে আইসিসি এলিট প্যানেলে আম্পায়ারের সংখ্যা কমে হলো ১১। একমাত্র দক্ষিণ
আফ্রিকান হিসেবে রয়ে গেলেন অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টক।
অবশ্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আম্পায়ারিং
ছেড়ে দিলেও কিছুদিন বিরতির পর ঘরোয়া ক্রিকেটে চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন এরাসমাস,
‘প্রথম দুই মাস
আমি শীতকালীন ছুটি কাটাব। আমরা দেশের মধ্যেই ভ্রমণের পরিকল্পনা করে রেখেছি। সেপ্টেম্বর
থেকে আমি ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার (সিএসএ) অধীন চলে যাব। তারা আমাকে কীভাবে ব্যবহার
করবে, সেটা চূড়ান্ত করতে হবে। পরবর্তী মৌসুমে আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করব
এবং একই সঙ্গে পরামর্শকের ভূমিকা পালন করব। আমি খায়া মাজোলা উইকে (সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত
একটি স্কুলের অনুষ্ঠান) অথবা ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে যেতে পারি। সেখানে আমি খেলা দেখব
এবং আম্পায়ারদের পরামর্শ দেব।’
আম্পায়ারিং শুরুর আগে পুরোদস্তুর খেলোয়াড়
ছিলেন এরাসমাস। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাদেশিক দল বোল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ৫৩টি প্রথম
শ্রেণির ও ৫৪টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ।