আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভেতরে-বাইরে বহুমুখী চাপে ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগ।
হাইকমান্ডের মতে, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। ঐক্যবদ্ধ থাকলে
আওয়ামী লীগকে কেউ হারাতে পারবে না। কিন্তু গত পনেরো বছরে ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় বিভিন্ন
নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য, নিজের অবস্থান শক্ত করতে অন্য দলের লোক ভিড়ানো এবং তাদের
দলীয় পদ-পদবি পাইয়ে দেয়ার মতো ছোটখাটো অনেক ঘটনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত এমপি ও স্থানীয়
নেতাদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং তৈরি হয়েছে তাতে শতাধিক নির্বাচনী আসনে ঝুঁকি তৈরি
হয়েছে।
এমন পেক্ষাপটে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে গেলে আওয়ামী লীগকে কঠিন পরীক্ষার
মুখোমুখি হতে হবে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডকে এটিই ভাবাচ্ছে। তাই আগামী জাতীয়
নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীদেরই মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ। সম্ভাব্য সব চ্যালেঞ্জকে সামনে
রেখেই যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে ক্ষমতাসীন দলটি। এরইমধ্যে বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে জরিপ
কাজও শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন<< বিদেশিরা বিএনপিকে সায় দেয়নি: সালমান এফ রহমান
বর্তমান সংসদ সদস্যদের পারফরম্যান্স ও তাদের কৃতকর্মের আমলনামা যুক্ত
করে জরিপের রিপোর্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দিয়েছে একাধিক
গোয়েন্দা সংস্থা। আরো একটি জরিপের কাজ চলমান রয়েছে।
সম্পন্ন হওয়া জরিপের অনেকের বিষয়ে খুব ভালো ফল আসেনি বলে দায়িত্বশীল
সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে দলের মধ্যে গ্রুপিং ও কোন্দল সৃষ্টিকারী, নিজ দলের নেতাকর্মীদের
হয়রানি, নানা ধরনের অপকর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বেশ কিছু এমপি ও মন্ত্রী ঝুঁকির
তালিকাতে পড়ে গেছেন। জরিপে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যসহ প্রায় এক-তৃৃতীয়াংশ এমপির রিপোর্ট
সন্তোষজনক নয় বলে জানা গেছে। এদের অনেকের কপালে দলীয় মনোনয়ন না-ও জুটতে পারে। এলাকার
মানুষের মধ্যে ভালো অবস্থান না থাকা ও দলীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করার কারণে সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েছেন এক প্রভাবশালী প্রার্থী। এই ধারাবাহিকতা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যাবে বলে দলটির একাধিক
সূত্রে জানা গেছে।
আরও পড়ুন<< বিএনপি সংঘাত তৈরি করার অজুহাত খুঁজছে: তথ্যমন্ত্রী
গত ৫ জুন গণভবনে কয়েকটি জেলা ও উপজেলার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আওয়ামী
লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়নের প্রসঙ্গে বলেছেন, জরিপে যাদের
রিপোর্ট ভালো আসবে কেবল তাদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে।
এছাড়া, বিগত যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং
হবে- এমন কথা দলীয় ফোরাম ও সংসদীয় দলের সভায় এমপি ও শীর্ষনেতাদের জানিয়েছেন আওয়ামী
লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিও
রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির পক্ষ থেকে। সে জন্য অনেক আগেই দলীয় এমপিদের এলাকামুখী হওয়ার
নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় প্রধান। সেই সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কাজ ও সাফল্য প্রচারে জোর
দেয়া হয়েছে। তবে অধিকাংশ এমপি এই নির্দেশনা মানছেন না। উল্টো নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে
দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করছেন। এ অবস্থায় আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রাথী মনোনয়ন দিতে বেশ
কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতি ছয়
মাস পর পর বিভিন্ন সংস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব টিম জরিপ করছে। এসব জরিপের ভিত্তিতেই
প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে আগামী সংসদ নির্বাচনে। বর্তমান সংসদে থাকা অনেক হেভিওয়েট
মন্ত্রী-এমপি এ তালিকায় আছেন বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া ৫ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের মধ্যে দিয়ে
দলের ভেতর এক ধরনের মেরুকরণকে ইঙ্গিত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা।
আরও পড়ুন<< রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার নিয়ে রাষ্ট্রদূতদের সতর্ক থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এবারের মনোনয়নের লক্ষণীয় বিষয় হল যে, যারা দলের পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন
রকম অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। নতুন মুখের প্রতি আগ্রহ দেখা
দিয়েছে।
৫ সিটিতে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ মূলত দলীয় নেতাকর্মীদের চার ধরনের
বার্তা দিলো, বলে মনে করছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। তারা বলছেন, প্রথম বার্তা
হলো-দল থেকে বহিষ্কারের পর আবার দলে নেয়া হলেও তাদের মনোনয়ন অনিশ্চিত। দ্বিতীয় বার্তা
হলো- নতুন প্রার্থীদের বিষয়েও আওয়ামী লীগের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। তাই মনোনয়ন আমিই পাবো
এই ধারণা থেকে সবাইকে সরে আসতে হবে। তৃতীয় বার্তা হলো- যারা দলের জন্য ত্যাগ স্বীকারের
পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিজের জনপ্রিয়তা অটুট রাখতে পারছেন তাদের আবারো মূল্যায়ন
করা হবে। সর্বশেষ বার্তা হলো- যারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে ও বিতর্কিত কাজ করে দলকে
প্রশ্নের মুখে ফেলবেন তারা মনোনয়ন পাবেন না। আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, ৫ সিটি করপোরেশন
নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বিশ্লেষণ করলে খুব সহজেই এই বার্তাগুলো পাওয়া যায়। এই বার্তা
শুধু সিটি করপোরেশন নির্বাচনেই নয় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্যও প্রযোজ্য।
আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ সিটির নির্বাচন
নিয়ে তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ চলছে কেন্দ্রে।
দলীয় প্রধানের নির্দেশে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পাশাপাশি দলের বর্তমান এমপিদের আমলনামা
নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যেসব জনপ্রতিনিধি এলাকাবিচ্ছিন্ন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
আছে, ত্যাগী নেতাদের দূরে রেখে যারা ব্যক্তিবলয় তৈরি করেছে- তাদের তালিকা তৈরি কাজও
শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য এমপিরা আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন
থেকে বাদ পড়তে পারেন। এ ছাড়া যারা নানা ইস্যুতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন, তারাও
মনোনয়নবঞ্চিত হতে পারেন। নির্বাচনের আট মাস বাকি থাকতে এসব বিষয় ঠিক করতে ব্যস্ত সময়
পার করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা।
সূত্রমতে, কোনো কোনো সংসদ সদস্য এলাকায় গেলেও দলীয় নেতাকর্মী বাদ দিয়ে
নিজস্ব বলয় নিয়ে চলাফেরা করেন। আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে নিজের পছন্দের লোকদের নিয়ে
ব্যস্ত থাকেন। দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন। এসব এমপির বিরুদ্ধে
মুখ খোলা শুরু করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কোনো কোনো এমপির বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীরা
সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। কেউ কেউ লিখিত অভিযোগ করছেন দলীয় প্রধানের কাছে। অনেকে গণভবনে
এসে সরাসরি নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে অভিযোগ তুলে ধরেছেন। এ ছাড়া জলমহাল, সরকারি খাস
পুকুর, বাড়িঘর দখলসহ নানা অভিযোগ উঠছে কোনো কোনো এমপির বিরুদ্ধে। আবার নির্বাচনী এলাকায়
স্কুল, কলেজসহ হাটবাজারের নিয়ন্ত্রণ এমপিদের আত্মীয়স্বজনের কব্জায় চলে গেছে- এমন অভিযোগ
রয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগবাণিজ্যসহ নানা অভিযোগের স্তূপ জমা পড়ছে কেন্দ্রে। দ্বাদশ জাতীয়
সংসদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই এমন অভিযোগ বাড়ছে।
সর্বশেষ গত ২২ জুন অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে
দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত
করার আগে আরেকটি অর্থাৎ শেষ জরিপ চালানো হচ্ছে। এই জরিপের ফলাফল মনোনয়নের ক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বৈঠকে শেখ হাসিনা জানান, ইতোমধ্যে ১৭টির মতো জরিপ চালানো
হয়েছে।
ওই বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের এক সদস্য নাম প্রকাশ
না করার শর্তে বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের সুখে-দুঃখে
পাশে দাঁড়ানো নেতাদের পাশে আমিও থাকব। জনবিচ্ছিন্ন কাউকে টেনে তোলার কোনো সুযোগ আর
নেই। বর্তমান সংসদ সদস্যদের (এমপি) মধ্যে যাদের আমলনামা ভালো, তারা উত্তীর্ণ হবেন।
যাদের খারাপ, তারা বাদ পড়বেন।’
‘দলের সভাপতি আগামী
নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য জরিপ করেছেন। তার কাছে জরিপ রিপোর্ট রয়েছে। রিপোর্ট
অনুযায়ী যারা ভালো কাজ করেছেন, যারা জনগণের কাছে যান, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথা বলেন,
ভোট চান, জনগণের সুযোগ-সুবিধা দেখেন এবং জনগণ যাদের চায় তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে।’
গণভবন সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারা আওয়ামী লীগের
প্রার্থী হবেন, তা নিশ্চিত করতে ৩০০ আসনেই বাছাইয়ের কাজ চলছে। সরকারের বিশেষ কয়েকটি
সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে চালানো হয়েছে জরিপ কার্যক্রম।
আগামী নির্বাচনে প্রতিপক্ষের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা যাদের দিয়ে
হতে পারে, পৃথকভাবে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। যারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত,
তাদের তালিকাও তৈরি করছে দলটি। বিএনপি নির্বাচনে এলে একরকম আবার না এলে আরেক ধরনের
প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ।
এ কারণে শাসক দলটি এখনই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা করবে না। তবে পৃথকভাবে
গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয়দের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানান আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক।
তার মতে, প্রার্থী তালিকার ব্যাপারে চূড়ান্ত মতামত দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, দলের বেশকিছু
এমপির বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। অনেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার
করেন। অনেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছেন। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো
বিবেচনায় নেয়া হবে। আগামী নির্বাচনে যাতে ভালো মানুষ দলীয় মনোনয়ন পান, সেই চেষ্টা থাকবে।
যোগ্যতার বিচারে যারা টিকবেন না, তারা বাদ পড়বেন। যারা ভালো প্রার্থী, তারা মনোনয়ন
পাবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দলের সভানেত্রী
ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছেন। তার নেতৃত্বে
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দলীয় কোনো এমপি যদি কোনো ধরনের অনিয়ম বা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত
হয়ে থাকেন, তাহলে দলীয় প্রধান হিসাবে অবশ্যই তিনি (শেখ হাসিনা) ব্যবস্থা নেবেন।
জরিপ পরিচালনা কাজে যুক্ত এমন একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে
প্রতিপক্ষের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা যাদের দিয়ে হতে পারে, পৃথকভাবে তাদের তালিকা
করা হচ্ছে। যারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের তালিকাও তৈরি করছে দলটি। বিএনপি
নির্বাচনে এলে একরকম আবার না এলে আরেক ধরনের প্রার্থী চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ। এ কারণে
শাসক দলটি এখনই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা করবে না। তবে পৃথকভাবে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয়দের
তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানান আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক। তার মতে, প্রার্থী
তালিকার ব্যাপারে চূড়ান্ত মতামত দেবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন<< দ্রব্যমূল্যের কারণে মানুষ কিছুটা দুঃখ-কষ্টে আছে : কাদের
এই টিমের একটি সূত্র জানিয়েছে, দলীয় প্রধানের নির্দেশে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের
পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপিদের আমলনামা নিয়ে তারা কাজ করছেন। তারা যে তথ্য
পাবেন, তা-ই দলের হাইকমান্ডে পাঠানো হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবন সূত্র জানিয়েছে, বিতর্কিত মন্ত্রী,
প্রতিমন্ত্রী এবং জনবিচ্ছিন্ন এমপিদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড
দলীয় কার্যালয়ে জমা হওয়া অভিযোগ এবং ইতোপূর্বে পরিচালিত জরিপ টিমগুলোর প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই
করছে। অক্টোবর নাগাদ এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রস্তুত হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘আমাদের দলীয় সভাপতি জরিপের যে কথা বলেছেন, তা চলমান রয়েছে। প্রতিবারই দলীয় প্রার্থীদের ওপর এই জরিপ করা হয়। এই জরিপের মাধ্যমে যে বিষয়গুলো দেখা হয় তা হচ্ছে- দলীয় এমপিদের এলাকায় জনপ্রিয়তার অবস্থা কেমন। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেমন। দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা। কোনো ধরনের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত কি না, বা এলাকায় কোনো ধরনের বদনাম আছে কি না। কোভিডের সময় কীভাবে জনগণের পাশে ছিল, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিল কি না। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থাকলে জরিপের রিপোর্টে তা উল্লেখ করা থাকে। অতীতের স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ বিভিন্ন সময় দলীয় এমপিদের কার কী ভূমিকা ছিল, সেটা রিপোর্টের মধ্যে উল্লেখ করা থাকে।’