চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি
(জিডিপি) ৬ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সেই সঙ্গে দক্ষিণ
এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থানে থাকবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল
সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরে জিডিপি
অর্জনে ভয়াবহ সংকটে পড়তে যাচ্ছে শ্রীলংকা ও পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশ প্রবৃদ্ধি
অর্জনে বিপদে থাকলেও বাংলাদেশ নিরাপদ জায়গায়ই অবস্থান করছে।
সংস্থাটি জানায়, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবৃদ্ধি
অর্জনে শীর্ষে রয়েছে মালদ্বীপ। দেশটি ৮ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। এর
পরেই রয়েছে ভারত, দেশটির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরে শ্রীলংকার
প্রবৃদ্ধি হবে ঋণাত্মক। দেশটি মাইনাস ৪ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। শ্রীলংকার
থেকে ভালো অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান, দেশটির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
এ ছাড়া একই সময়ে ভুটান ৪ দশমিক ১, নেপাল ৫ দশমিক ১ এবং পাকিস্তান মাত্র ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
অর্জন করতে পারে।
করোনা মহামারী, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও
জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে বিশ্বের অনেক দেশ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে।
এসব দেশের সংকট মোকাবিলায় নতুন করে রূপরেখা তৈরি হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল
বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট
ডেভিড ম্যালপাসের মধ্যে কথোপকথনে এই বিষয় উঠে আসে।
ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বৈশ্বিক নানা সংকট
জীবন-জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলছে। এই সংকট সবচেয়ে ঝুঁঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর নেতিবাচক
প্রভাব ফেলছে। অস্থিরতার এই যুগে টেকসই উন্নয়নে নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং
বেসরকারি খাতের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একটি গভীর
পরিকল্পনা জরুরি উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রেসিডেন্ট বলেন, এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ
মোকাবিলায় আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক কাজ করছে। সংকট মোকাবিলায় ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে
কীভাবে সহায়তা করা যায় সেই বিষয়ে রূপরেখা তৈরি হবে।
এদিকে, আর মাত্র চারদিন পর বিশ্বব্যাংক
ও আইএমএফের বার্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৯ সালের পর এবারই প্রথম সশরীরে অনুষ্ঠিত হতে
যাচ্ছে এই বার্ষিক সভা। আগামী ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে এটি চলবে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত। বাংলাদেশের
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও সভায় অংশ নেবেন। মহামারী, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ,
বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও জ্বালানি সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাকে প্রাধান্য দিয়ে এবারের সভা
অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস।