পাবনার আটঘরিয়ায় জমি থেকে ধান, পাট, তিল, গমসহ বিভিন্ন পণ্যের পরিবহনের জন্য ঘোড়ার গাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের কৃষকরা কোন উপায় না পেয়ে জমি থেকে ধান, পাট, গম, কেটে ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে বাড়িতে আনছে। এলাকায় শ্রমিক সংকট থাকার কারনে এই ঘোড়ার গাড়ি একমাত্র বাহন। শুধু ধান পরিবহনের ক্ষেত্রে নয় উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকাতেই মানুষ পণ্যও পরিবহন করছে।
উপজেলার বাসিন্দা নাজিমউদ্দীন জানান, অতীতে আমরা দেখেছি গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি দিয়ে এসব পরিবহন করতো। আর মানুষের বিয়েতে এই ঘোড়ার গাড়ি করে বর নিয়ে যাওয়া ছিল ঐতিহ্য। কিন্তু বর্তমানে এই ঘোড়ার গাড়ি কৃষি পণ্যসহ সকল ধরনের মালামাল বাহনের একমাত্র উপায়। তাই গরুর গাড়ি, মহিষের গাড়ি কালের বিবর্তনে প্রায় বিলুপ্তির পথে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিলাঞ্চলের মানুষের মালামাল পরিবহনসহ ব্যবসায়ীদের পণ্য আনা নেওয়ার জন্য বর্তমানে একমাত্র মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি।
বিলাঞ্চলে উৎপাদিত ফসল এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে। ছোট ছোট মোটরের টায়ারের চাকায় চলে এসব ঘোড়ার গাড়ি। এ অঞ্চলে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য অন্যান্য যানবাহনে কিছু কিছু জায়গা থেকে অনায়াসে চলতে পারলেও অনেক স্থানে যাতায়াতের অবস্থা ভাল না থাকায় ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তাই ঘোড়ার গাড়ির চাহিদাও আছে। এ ঘোড়ার গাড়িতে ৩০০ থেকে ৫০০ ধানের আটি পরিবহন করা যায়।
ঘোড়ার গাড়ি চালকরা জানান, সাধারণত মাইক্রোবাসের পুরনো চাকা দিয়ে ঘোড়ার গাড়ি তৈরি করেন তারা। প্রতিটি গাড়ি তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫-১৭ হাজার টাকা। একটি ঘোড়া কিনতে লাগে আরও ৩০-৩৫ হাজার টাকা। সারাদিনে আয় হয় ১৫০০-২০০০ টাকা। তা দিয়ে সংসারের খরচ বহন করেন তারা।
ঘোড়ার মালিক আব্দুস সালাম বলেন, আমার ঘোড়াকে প্রতিদিন ছোলার বুট, ভূষি, চাউলের কুড়া, পর্যাপ্ত পরিমান সবুজ ঘাস খাওয়াই। সেই কারণেই আমার ঘোড়া সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত কাজ করতে পারে।