রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে। ফলে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করেছে ব্রিটিশ জ্বালানি প্রতিষ্ঠান শেল। লন্ডনভিত্তিক শেল জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় প্রান্তিকের সামঞ্জস্যপূর্ণ মুনাফা গত বছরের একই ত্রৈমাসিকের ৫৫০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ১৫০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এপ্রিল-জুন সময়ের এ মুনাফা আগের প্রান্তিকের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আগের বারে সামঞ্জস্যপূর্ণ আয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি ৯১০ কোটি ডলার আয়ের রেকর্ড করেছিল। শেল জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় নিজেদের ৬০০ কোটি ডলারের শেয়ার কিনবে।
ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর ফলে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গাসের দাম অনেকাংশে বেড়ে যায়। কেননা হামলার কারণে বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার জ্বালানি প্রত্যাখ্যান করে এবং সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় বাজারে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি দেখা দেয়, সেই সঙ্গে জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফাও বেড়ে যায়।
শেলের সিইও বেন ভান বেউরডেন এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিকে নাড়িয়ে দেয়া একটি প্রান্তিক ছিল এটি। ইউক্রেনে যুদ্ধ এখনো চলছে, তাতে অনেক জীবন ধ্বংস হচ্ছে, খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহে বাধা তৈরি হচ্ছে, জ্বালানির উচ্চমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটের মধ্যে তা অনেকের জীবনকে আরো খারাপ করে তুলছে। গত মে মাসে ব্রিটিশ সরকার নতুন একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করে। সেই সময়ে সরকার জ্বালানি তেল ও গ্যাস প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার ওপর অস্থায়ী ২৫ শতাংশ কর আরোপের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ অর্থ দিয়ে যেন অতিরিক্ত জ্বালানির দামের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থসহায়তা দেয়া যায়। তবে চলতি মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পদত্যাগ করায় সেটার ভবিষ্যৎ অনেকটাই অপরিষ্কার হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে আলোচনা চলছে, তার পরিকল্পনা সফল করে তুলবেন কে?
চলতি সপ্তাহেও ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে। রাশিয়া জার্মানিতে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তথ্য বলছে, এক বছর আগের তুলনায় দাম বেড়েছে ৫ গুণ।