গাজীপুরের কালিয়াকৈরে শনিবার সকালে একদিনে
দুই যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়াও ঘরের দরজা ভেঙ্গে অচেতন অবস্থায়
অপর এক নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু একজনের মৃত্যু অভিমানে আত্নহত্যা মনে হলেও
অপজনের মৃত্যু রহস্যজনক বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নিহত যুবকরা হলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ
থানার সড়কপাড়া গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে সোহেল মিয়া (৩০) ও দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর
থানার বোয়ালদা গ্রামের মৃত ইনতাজ আলীর ছেলে ইয়ানূর হোসেন (২৩)। এছাড়া অচেতন নারীর নাম
আমেনা আক্তার (২৫)। তবে তার ঠিকানা জানা যায়নি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোহেল
গত ১১ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জেরে তাদের পাশের মোল্লাপাড়া এলাকার আনোরুলের মেয়ে
অনজুকে বিয়ে করে। এরপর তারা স্বামী-স্ত্রী জীবিকার খোঁজে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আসেন।
পরে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলার আহম্মদ নগর চৌরাস্তা এলাকার ফারুক হোসেনের বাসা
ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। স্বামী রিকশা চালাতেন ও স্ত্রী স্থানীয় যমুনা স্পিনিং কারখানায়
কাজ করে আসছে। স্থানীয় অভিযোগ, কারখানায় কাজের সুযোগে সোহেলের স্ত্রী আনজুর সঙ্গে অন্য
একজনের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর জেরে গত রোববার তার স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়েকে
রেখে ওই ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে যায়। মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশের এসআই মফিকুল ইসলাম জানান,
প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্ত্রী চলে যাওয়ার অভিমানে সোহেল ভাড়া বাসার পাশে একটি
সাজনা গাছের ডালের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করে।
এছাড়াও একই দিন সকালে উপজেলার সফিপুর কাঁঠালতলা
এলাকার নাসির উদ্দিনের বাসা থেকে ইয়ানুর নামে অপর এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে
মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশ। ওই ফাঁড়ি পুলিশের এসআই শাহ আলম জানান, ওই ভাড়া বাসার গ্রীলের সঙ্গে
গলায় রশি পেছানো ফাসিতে ঝুলন্ত নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে অসুস্থ হয়ে স্থানীয়
কারখানায় চাকুরি ছেড়ে দেন ইয়ানুর। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে মনমরা ও অস্বাভাবিক আচরন করে। মৃত্যু আধা ঘন্টা আগেও তার
চাচার সঙ্গে কথা বলে ইয়ানুর। যেখানে তার লাশ ঝুলে ছিল, সেটাও মনে হচ্ছে সন্দেহজনক।
ময়নাতদন্তের পর তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
অপরদিকে একই দিন সকালে উপজেলার তেলিরচালা
এলাকা থেকে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভাড়া বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় আমেনা নামে এক নারীকে উদ্ধার
করে মৌচাক ফাঁড়ি পুলিশ। ওই ফাঁড়ি পুলিশের এসআই রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, সপ্তাহ খানেক
আগে তার স্বামী আতিক হোসেন তাকে তালাক দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর জেরেই তিনি কিছু খেয়ে
অচেতন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির
ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, নিহত সোহেলের লাশ উদ্ধার করে তার পরিবারকে খবর দেওয়া
হয়েছে। আর ইয়ানুরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। তবে দু’টি লাশের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এছাড়াও অচেতন অবস্থায় যে নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন।