আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদুল আযহা (কোরবানি ঈদ)। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রধান ইবাদত হজ্ব , ঈদের নামাজ ও কোরবানী। এ কোরবানি উপলক্ষ্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রস্তুত রয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পশু ও ১৩টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট। এরই মধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে পশুর হাট। তবে ভারতীয় পশু প্রবেশ না করায় কাঙ্খিত লাভের আশা করছেন কৃষকসহ খামারীরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও খামারী সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভায় এবার ঈদে ছোট-বড় খামারীসহ প্রায় ১২শ কৃষকের প্রায় সাড়ে ১২হাজার কোরবানী পশুর প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ৬৩৮৬টি, বলদ ২৪২টি, গাভী ১৪৯টি, মহিষ ১১২টি, ছাগল ৫২৭৩টি ও ভেড়া ২৪১টি।
এদিকে কোরবানি ঈদ ঘিরে প্রতি বছরই দৌড়ঝাঁপ করতে হয় পশুর হাট-বাজারে। এ লক্ষ্যে ঈদের ১০-১২ দিন আগেই সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুরহাট সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। কালিয়াকৈরে সফিপুর, সিনাবহ, জামালপুর চৌরাস্তা, গাছবাড়ী, বড়কাঞ্চানপুর, ফুলবাড়িয়া, বেনুপুর ও সিঙ্গাপুর বাজার ৮টি স্থায়ী পশুরহাট পুরোপুরি প্রস্তুত।
স্থায়ী পশুরহাটের পাশাপাশি মৌচাক নুরবাগ, রতনপুর, সফিপুর আনসার একাডেমি ৩নং গেইট, পূর্বচান্দরা, বোর্ডঘর ছোটকাঞ্চানপুর এলাকায় ৫টি অস্থায়ী পশুরহাটের প্রস্তুতিও শেষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব হাটে আসছে কোরবানির পশু। পশুরহাটে লোকের সমাগম হলেও এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি কেনা-বেচাও। এখন খুচরা ক্রেতা নয়, বেপারী, কসাই ও সাপ্লাই প্রতিষ্ঠানের কাছে বেশি বিক্রি হচ্ছে পশু।
বেপারীরা বলছেন, হাটগুলো প্রস্তুত থাকলেও এখনো জমেনি পশু কেনাবেচা। ক্রেতা সমাগম কম থাকায় শ্রম-মমতায় লালনপালন করা গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া এখনই হাটে তুলছেন না খামারীরা। তবে স্থায়ী পশুরহাটের বেচাকেনা চলছে কোরবানি পশু। বেপারীদের আশা, শুক্রবার থেকে পুরোদমে জমে উঠবে পশুরহাট। তখন ক্রেতাদের চাহিদা মতো নামবে কোরবানির পশু। এবার মাঝারি দামের পশু টার্গেট করে লাভের আশা করছেন বেপারীরা।
অপরদিকে খামারীরা বলছেন, কয়েকটি খামারে গরু মোটাতাজা হলেও সিংহভাগ কোরবানি পশু পালন করে কৃষক। অনেক অসহায় নিরিহ কৃষক তাদের পালিত পশু বিক্রি করে সংসারের অভাব গোছাতে চান। তবে এখনো ভারতীয় পশু প্রবেশ না করায় তাদের কাঙ্খিত লাভের আশা করছেন কৃষকসহ খামারীরা। তবে পশুর নিরাপত্তায় পশুরহাটে তাদের মেডিকেল টিম থাকবে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ দপ্তরটি কর্মকর্তারা। এছাড়াও ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তাসহ যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, আমাদের টিমের তদারকিতে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পশু প্রস্তুত হয়েছে। তবে পশুর নিরাপত্তায় প্রতিটা পশুরহাটে আমাদের মেডিকেল টিম থাকবে।
কালিয়াকৈর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল বাশার জানান, কালিয়াকৈরে ৮টি স্থায়ী ও ৫টি অস্থায়ী পশুরহাট রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের বাড়তি নজরধারীতে থাকবে হাটগুলো। তবে পশুরহাটে বলেন্টিয়াদের পাশাপাশি পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে।