ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় এনে মারধরের ঘটনায় ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ
কমিশনার হারুন অর রশীদকে স্থায়ী বরখাস্ত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক
নেতারা।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে
‘গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’ ও ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’–এর ব্যানারে
এক মানববন্ধন ও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন সাবেক নেতা এই দাবি জানান।
ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহান খান বলেন, এডিসি হারুন পেটানোয় পটু। তিনি নিজের
সহকর্মীকেও পিটিয়েছেন। তার কাজ পুরো পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এর দায়
তো পুলিশ প্রশাসন নিতে পারে না। হারুনকে কেন প্রশ্রয় দেওয়া হবে? তিনি যেভাবে ছাত্রলীগের
নেতাদের অমানুষিক নির্যাতন করেছেন তাতে শুধু প্রত্যাহার কিংবা বদলিতে যথেষ্ট নয়। তাকে
গ্রেপ্তার করে স্থায়ী বরখাস্ত করতে হবে। তাকে আইনের আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।
ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, এডিসি হারুন একজন
শিক্ষার্থীবিদ্বেষী পুলিশ কর্মকর্তা। এর আগেও বিভিন্ন সময় তিনি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী,
মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, কোর্টের আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করেছিলেন। অতি দ্রুত
তাকে ফৌজদারি অপরাধের কারণে আইনের আওতায় না আনলে সাধারণ ছাত্র সমাজ রাজপথে নেমে আসবে।
আরেক শিক্ষার্থী নাজমুল হক বলেন, এডিসি হারুন পরকীয়া করা অবস্থায় ধরা খেয়ে তা ঢাকা
দিতে আমাদের দুই ভাইকে এভাবে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন। মানবিক বিকারগ্রস্ত এই হারুন
এর আগেও অনেক শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে হামলা করেছিলেন। আমরা তাঁর যথাযথ শাস্তি চাই।
ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি কামাল খান বলেন, এডিসি হারুন তার ব্যক্তিগত অপকর্ম ঢাকতে
পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। তিনি যে কাজ করেছেন তা ফৌজদারি অপরাধের শামিল। তাকে
ছাড় দিলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।
প্রসঙ্গত, এডিসি হারুনের মারধরের শিকার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন
নাঈম ও বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহম্মেদ মুনীমের বাড়ি গাজীপুর। তার প্রতি সমবেদনা
জানাতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি।
মানববন্ধনে বক্তারা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, অনশন কর্মসূচিও করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়ুয়া গাজীপুরের শিক্ষার্থীদের সংগঠন গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সদস্যরা। আবহাওয়া
ভালো না থাকায় আপাতত অনশন কর্মসূচি করছেন না তারা।
এই সংগঠনের সভাপতি আশিক রাব্বানী জিহান বলেন, ‘এডিসি হারুন
যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তখন তার ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল ছাত্রশিবিরের। পরে যখন
এসব ফাঁস হয়ে যায় নাঈম এসব ধরিয়ে দেবেন বলে তিনি নাঈমকে মেরে দাঁত ফেলে দেন। তিনি এপিবিএনে
প্রত্যাহারকে এখন ক্রেডিট হিসেবে নিয়েছেন। ফল তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান, নজরুল
ইসলাম, সরদার আয়নাল, সৈয়দ আরিফ হোসেন, মাজহারুল ইসলাম শামীম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
মামুন অর রশিদ, আরিফুজ্জামান আল ইমরান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক সিদ্দিকী,
সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, ছাত্রনেতা হাসান রশিদুজ্জামান বিপ্লব, ডাকসুর
সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর প্রমুখ।