আজঃ শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

কবিদের চোখে ‘বঙ্গবন্ধু’

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

শরীফ মাহমুদ চিশতী

কবি শামসুর রাহমানকে দিয়ে শুরু করা যাক। অভিশাপ কবিতায় তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের অভিশাপ দিয়েছেন। হত্যাকারীদের নেকড়ের চেয়েও অধিক হিংস্র হিসেবে উল্লেখ করে তাদেরকে বুলেট-বৃষ্টিতে একবারে হত্যা করতে চান না। তিনি চান ঘাতকরা চিরদিন গলিত মৃতদেহ নিয়ে বয়ে বেড়াবে। তারা যখন রুটি চাইবে তখন তাদের থাবা থেকে রুটি দশ হাত দূরে থাকবে, ওদের পানপাত্র কানায় কানায় ভরে উঠবে রক্তে। ওরা আকণ্ঠ বিষ্ঠায় ডুবে থাকবে; নিজের সন্তানও মুখ ফিরিয়ে নেবে; আশ্রয়ের আশায় ওরা যখন ঘুরবে, পৃথিবীর প্রতিটি কপাট ওদের জন্য বন্ধ থাকবে। এভাবে তিনি তাদেরকে তিলে তিলে দগ্ধ করে হত্যা করতে চান। কারণ, ওরা কবিকে জনক-জননীর রক্তে পা ডুবিয়ে এগিয়ে যেতে বাধ্য করেছে

আমাকে করেছে বাধ্য যারা

আমার জনক জননীর রক্তে পা ডুবিয়ে দ্রুত সিঁড়ি ভেঙে যেতে

ভাসতে নদীতে আর বনবাদাড়ে শয্যা পেতে নিতে

অভিশাপ দিচ্ছি আজ সেইখানে দজ্জালদের।

জসীমউদ্দীন বঙ্গবন্ধু কবিতায় মুজিবুর রহমান নামটিকে বিসুভিয়াসের অগ্নি উগারী বান-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন। বিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের কারণে যেভাবে রোমান শহর পম্পেই এবং হারকিউলানিয়াম লাভার নিচে চাপা পড়ে ধ্বংস হয়েছে; তেমনি মুজিবুর রহমান নামটিও জ¦লন্ত-শিখা রূপ ধারণ করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে অন্যায়-অত্যাচারকে বিনাশ করার জন্য। পীড়িত মানুষের নিশ্বাস তাঁকে দিয়েছে চলার গতি, বুলেটে নিহত শহিদেরা তাঁর অঙ্গে দিয়েছে জ্যোতি, দুর্ভিক্ষের দানব তাঁর দেহে দিয়েছে শক্তি। তাঁর হুকুম পালন করার জন্য লাখ লাখ সেনা তাঁর সঙ্গে চলছে। বঙ্গবন্ধুর হুকুমে জীবনকে তুচ্ছ করে বাঙালী চলছে জয় ছিনিয়ে আনতে-

তোমার হুকুমে তুচ্ছ করিয়া শাসন ত্রাসন ভয়

আবারো বাঙালি মৃত্যুর পথে চলিছে আনিতে জয়।

আধুনিক বাংলা কাব্যে কবি সুফিয়া কামাল একটি উজ্জ্বল ও উচ্চকিত উচ্চারণ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর কবি রচনা করেন ডাকিছে তোমারে কবিতা। জীবন-যৌবন কারাবাসে কাটিয়ে বাংলার মানুষকে তিনি মুক্ত করেছেন। অথচ মুষ্টিমেয় কিছু ঘাতকের হাতে তাঁকে প্রাণ দিতে হয়েছে। কিন্তু বাংলার মানুষের হৃদয়ে তাঁর আসন এখনও অম্লান। বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছে। অসহায় মানুষ দেখছে বঙ্গবন্ধুর দেশে কারা যেন ঝেঁকে বসেছে। বঙ্গবন্ধু নেই বলে মূষিকের দল আবার বাংলায় হানা দিয়েছে। বেইমানগুলো বাংলাকে ছারখার করে ফেলেছে। বঙ্গবন্ধুর রক্তে রঞ্জিত এ মাটি তাঁকে আবার কেঁদে কেঁদে ডাকছে-

তোমার শোণিতে রাঙানো এ মাটি কাঁদিতেছে নিরবধি।

তাইত তোমারে ডাকে বাংলার কানন, গিরি ও নদী।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। জান্তা-সরকার বিচার করে বঙ্গবন্ধুকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিলে বিশ^ নেতৃবৃন্দ তার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে হানাদার দখলদাররা পরাজিত হয়ে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির সংবাদে সারাদেশ আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভেসে যায়। নতুন দেশের নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে যে অনিশ্চয়তার কালোমেঘ জমে তা দূর হয় বঙ্গবন্ধুর মুক্তিতে। উচ্ছ্বসিত জনগণ অপেক্ষায় থাকেন বঙ্গবন্ধুর ফেরার প্রহর গুণে। বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার সংবাদে কবি সিকান্দার আবু জাফর রচনা করেন ফিরে আসছেন শেখ মুজিব কবিতা।

সাড়ে সাত কোটি বাঙালির কান্নার পাথরে গড়া

সুমসৃণ পথে ফিরে আসছেন তিনি

ফিরে আসছেন বঙ্গ-ভারতের

সম্মিলিত রক্তস্রোত মহাপুণ্য পথে

বাংলাদেশের মরণ-বিজয়ী মুক্তিসেনানী।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু লন্ডন হয়ে বিজয়ীর বেশে মুক্ত স্বদেশে ফিরে আসেন। সর্বস্তরের জনতা বঙ্গবন্ধুকে বীরোচিত অর্ভ্যথনা জানায়। ১০ জানুয়ারি গার্ডিয়ান পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছিল, শেখ মুজিব ঢাকা বিমানবন্দরে পদার্পণ করা মাত্র নতুন প্রজাতন্ত্র এক সুদৃঢ় বাস্তবতা লাভ করে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যুগে-যুগে অনেক বিপ্লব হয়েছে। জাতির কান্ডারি রূপে নেতৃত্ব দিয়ে তাঁরা স্মরণীয় হয়ে আছেন। বাঙালীর বুকে স্বাধীনতার বীজমন্ত্র পুঁতে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। একটি নিরস্ত্র জাতির মধ্যে যে গণঅভ্যুত্থান তিনি সৃষ্টি করলেন, তা তুলনারহিত। রণেশ দাশগুপ্ত জাগরূক কবিতায় বাঙালী জাতির কা-ারি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কীভাবে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে মুক্ত করেছেন সে বিষয়ে তুলে ধরেছেন

সে তাগিদই নিয়ে জাগরূক কান্ডারিরা দেশে-দেশান্তরে

একান্তভাবে সাম্প্রতিক শহিদেরা লুমুম্বারা জাগরূক

যেমন জাগরূক সালভাদর আলেন্দে চিলিতে

ওলাফ পালমে সুইডেনে

সামোয়া মাচেল মোজাম্বিকে

বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর।

বাঙালীর কান্না-হাসি, দুঃখ-বিলাস সবকিছুতেই বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণের আগেই তাঁকে হারাতে হয়েছে। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। কবি আবুল হোসেন বিশ্বাস করেন- আমাদের নায়ক আমাদের ছেড়ে চলে যেতে পারেন না। কারণ, তিনি চলে গেলে আমাদেরতো আর কিছুই থাকবে না। আমরা কার ডাকে মিছিলে স্লোগান দিব; হাসতে হাসতে জেলে আস্তানা গাঁড়ব; কে আমাদের দুস্তর রাতে পথ দেখাবে; কার হাত ধরে আমরা পাহাড়ের চূড়ায় উঠব? তাই কবি থাকো, আরো কিছুদিন থাকো কবিতায় আকুতি জানিয়েছেন-

চিরকাল যদি না-ই থাকো, আরও

কিছুদিন থাকো আমাদের সঙ্গে,

দিয়ে যাও আলো আর কিছু গান,

হাসিখুশিহীন এ স্বাধীন বঙ্গে।

বাংলাদেশের মুক্তিআন্দেলন এবং স্বাধীনতা-সংগ্রামে শক্তির প্রধান উৎস বঙ্গবন্ধু। ঔপনিবেশিক শাসন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি কখনো কর্মীর ভূমিকায়, কখনো নেতার ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করেছেন। অধিকার বিষয়টা যে আদায় করে নিতে হয়- এই বোধ তাঁর স্কুল জীবনেই হয়েছিল। তাই দেখা যায় গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী এ কে ফজলুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাঙালীর প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু নামটি মিশে আছে। তাঁর ঘোষিত ছয় দফা ছিল বাঙালীর মুক্তির সনদ এবং স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান হাতিয়ার ও মূলমন্ত্র। এ দাবিকে কেন্দ্র করে দানা বেঁধে উঠে দুর্বার আন্দোলন। এই আন্দোলনের সূত্র ধরেই ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন এবং ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও চূড়ান্ত পরিণতি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষায়Ñ ৬ দফা বাংলার শ্রমিক-কৃষক, মজুরÑমধ্যবিত্ত তথা আপামর মানুষের মুক্তির সনদ। ৬ দফা শোষকের হাত থেকে শোষিতের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ছিনিয়ে আনার হাতিয়ার, ৬ দফা মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের নিয়ে গঠিত বাঙালি জাতির স্বকীয় মহিমায় আত্মপ্রকাশ আর আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের চাবিকাঠি...৬ দফার সংগ্রাম আমাদের জীবন মরণের সংগ্রাম। কবিদের কবিতায়ও উঠে এসেছে তার বিবরণ।

কবি রুবী রহমান তাঁর পঁচাত্তরে বিরান বাংলাদেশ কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে প্রমিথিউস বলে সম্বোধন করেছেন। প্রমিথিউস মানুষকে সৃষ্টিশীল গুণাবলী দিয়ে সৃষ্টি করেন। মানুষের প্রতি দুর্বল প্রমিথিউসের মনে হলো মানব জাতির জন্য পৃথিবীকে উপযোগী করতে হলে আগুনের প্রয়োজন। তিনি দেবতার কাছে আগুন উপহার চাইলেন কিন্তু দেবতার প্রত্যাখ্যানের পর তিনি স্বর্গ থেকে আগুন চুরি করেন। ফলে, তিনি দেবতাদের রোষানলে পড়েছিলেন। দেবতার নির্দেশে তাঁর দেহ পাহাড়ের গায়ে বেঁধে রাখা হয় এবং একটি ঈগল প্রতিদিন এসে তাঁর কলিজা ঠোক্রে ঠোক্রে খেতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর ক্ষেত্রেও দেখা যায় তিনি বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় শোষক শ্রেণীর সঙ্গে সংগ্রাম করে অধিকার আদায় করছেন; পরবর্তীতে স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়ে বিশ^াসঘাতকদের কোপানলে পড়েছিলেন। প্রমিথিউসকে দেবতার রোষ থেকে রক্ষা করে হারকিউলিস কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে কেউ রক্ষা করতে পারেনি। কবি বিশ^াস করেন- বঙ্গবন্ধু যে আগুন ছিনিয়ে এনেছেন তার স্ফুলিঙ্গ থেকে আবার আগুন জ্বলে উঠবে

যে অগ্নি একদিন তুমি ছিনিয়ে এনেছ

প্রতিটি স্ফুলিঙ্গ তার জ¦লে উঠবার গূঢ় মন্ত্রগুলি দাও।

কৃপণ হৃদয় নিয়ে ঘাড় গুঁজে বসে আছে বামন সময়।

সত্য ও ন্যায় পথের সারথি বঙ্গবন্ধু। শত অত্যাচার ও ভীতির মুখেও তিনি তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হননি। মানুষের অধিকার আদায়ে ছিলেন সোচ্চার। ফলে, শোষক শ্রেণীকে সবসময় তটস্থ থাকতে হতো। তাঁর বাক্রুদ্ধ করতে না পারলেও তারা বঙ্গবন্ধুকে শারীরিকভাবে রুদ্ধ করে রাখে। কিন্তু মুজিব এমন একটি শব্দ- যা উচ্চারণে বাঙালীর প্রাণে তোলে ঢেউ, মৃতপ্রাণে জাগে সাড়া। কবি আবদুস সাত্তার তার একটি অমিয় নাম কবিতায় বঙ্গবন্ধুকে এভাবে তুলে ধরেছেন-

অমিয় একটি নাম চেতনায় ঢেউ তোলে, রুধিরে জাগায় আলোড়ন

সে নামে প্রাণের সাড়া, মৃত ঘাসে জেগে ওঠে উদ্দাম সজীব যৌবন

সে নামে সতত ভীত মদমত্ত স্বৈরাচার, গর্বোদ্ধত আস্ফালনকারী

ধুলায় লুটায়ে পড়ে রাইফেল, স্টেন আর এজিদের তীক্ষ তরবারি

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাঙালী জাতি নিশ্চুপ ছিল। প্রতিবাদ করতে পারেনি এই অকৃতজ্ঞ জাতি। কবি অন্নদা শঙ্কর রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে কবিতায় লিখেছেন- নরহত্যা মহাপাপ। কিন্তু সন্তান হয়ে পিতাকে হত্যা আরো বড়ো পাপ। আর সেটা যদি হয় সবংশে নিহত- তার মতো গুরুতর পাপ আর কিছু হতে পারে না। আবার সন্তান পিতাকে হত্যা করে যদি ক্ষমা পেয়ে যায় এবং সঙ্গে পায় সাধুবাদ, তবে একসময় পিতা হত্যার এই পাপ তার উপর অভিশাপ হয়ে বর্ষিত হয়। তাই কবি হত্যাকারীদের শাস্তি দানে নীরব না থেকে প্রতিবাদে মুখর হতে বলেছেন।

বাংলাদেশ! বাংলাদেশ! থেকো নাকো নীরব দর্শক

ধিক্কারে মুখর হও। হাত ধুয়ে এড়াও নরক।

কবি হিমেল বরকত লিখেছেন বিস্মরণের পাপ। আজকের বাঙালী জাতিসত্তার রয়েছে এক গৌরবম-িত ঐতিহ্য। সংগ্রাম করেই টিকে থাকতে হয়েছে এই জাতিকে। কিন্তু আজ আমাদের স্মৃতি বিস্মরণের মোহে আত্মবিনাশী ব্যাধিতে আক্রান্ত। তাই চিনতে পারছি না প্রিয় মাতৃভূমি; ভুলেছি পাখিদের স্বরলিপি, মেধাবীদের রক্তদান, একাত্তরের স্মৃতি। আমাদের মগজের নিচে প্রতারকরা ঘুণপোকার চাষ করছে। তাই-

আমরা চিনি না পিতার হত্যাকারী

আমরা ভুলেছি হত্যার প্রতিশোধ

অক্ষমতার পাপেরা বাড়ায় বাহু

আমাদের ঘৃণা নিষ্প্রভ নিরাকার

বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি সমগ্র বিশে^ই একজন অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্বীকৃত। কারণ, তিনি শোষিত মানুষের পক্ষে সারাজীবন লড়াই করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাষায়- বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত, এক পক্ষে শোষক, আরেক পক্ষে শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে। কবি বিমল গুহ বঙ্গবন্ধুকে শতাব্দীর বরপুত্র বলে অভিহিত করেছেন। শতাব্দীর বরপুত্র কবিতায়

শতাব্দীর বরপুত্র শেখ মুজিবুর-

আঙ্গুলি হেলনে যাঁর দুলে ওঠে আকাশ বাতাস

কেঁপে ওঠে নক্ষত্রমন্ডল-দশদিক;

তর্জনী উঁচিয়ে সেই শতাব্দী পুরুষ

জাগিয়ে তোলেন এই বাংলার তৃণ মাটি এবং মানুষ।

কবি ফারুক নওয়াজ বঙ্গবন্ধুকে মহাশিশু বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ, বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। সেই ইতিহাসে মিশে আছে ক্ষোভ আর পরাধীনতার যন্ত্রণা। মুঘল, পাঠান আর ইংরেজদের মালিকানায় ছিল বাংলা। তিতুমীর, ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, সুভাষ বোসসহ অসংখ্য স্বাধীনতাকামী প্রাণপুরুষরা স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অধিকার আদায়ে তাঁরা কেউই সফল হতে পারেননি। বাঙালীকে শোষক শ্রেণীর হাত থেকে মুক্ত করে স্বাধিকার দিয়েছেন মহাশিশু বঙ্গবন্ধু। সেই মহাশিশু কবিতায়-

হাজার বছর, দীর্ঘজীবন কাল মহাকাল পরে

জন্ম নিলেন মহাশিশু এক বাঙালির গেঁয়ো ঘরে।

তিনি বললেন, সবই আমাদের, সবই আমাদের, তবে

আমাদের এ অধিকার পেতে লড়াই করতে হবে।

যুগে যুগে কবিতা মানুষকে আন্দোলন-সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে। শোষক-শ্রেণী তাই কবি-সাহিত্যিকদের বাক্রুদ্ধ করতে চেয়েছেন। কিন্তু কবিদের বাক্রুদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। জেল-জুলুম সহ্য করেও কবিরা কবিতা লিখেছেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলার মানুষের কবি ও কবিতা। কবি কামাল চৌধুরী বাংলার কবি কবিতায় লিখেছেন-

একটি কবিতা রক্ত পলাশে লেখা

একটি মানুষ পতাকায় আঁকা ছবি

বুকে একতারা শ্যামা দোয়েলের গান

মুজিব আজ সারা বাংলার কবি।

বঙ্গবন্ধুকে জাদুকর বলে অভিহিত করেছেন কবি আনজীর লিটন। জাদুকর যেমন জাদুর সাহায্যে সবকিছু সম্ভব করে তোলে; বঙ্গবন্ধু তেমনি বাংলার মানুষের জন্য স্বাধীনতা নামক সোনার হরিণটিকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। কবির ভাষায়-

বলল হেসে বঙ্গবন্ধু-

আমি হলাম সেই জাদুকর

বাংলার অন্তরে

রাঙা স্বপন দেই জাগিয়ে

বাঙালিদের ঘরে।

১৫ আগস্ট বাঙালীর জন্য এক দুঃস্বপ্নের দিন। বঙ্গবন্ধু নেই- একথা কবিরা ভাবতে পারেন না। বঙ্গবন্ধু মিশে আছেন এই বাংলার অস্তিত্বের সঙ্গে। কবি শিহাব সরকারও ভাবতে পারেন না বঙ্গবন্ধু নেই। তিনি মনে করেন, বঙ্গবন্ধু জীবিত আছেন তাঁর অস্তিত্বের মায়া ছড়িয়ে কোলাহল থেকে দূরে, নিভৃত কুটিরে। পাখিরা তার হাত থেকে শস্যদানা খুটে খাচ্ছে। তিনি যখন দিঘির কিনারে এসে দাঁড়ান- তখন লাল নীল মাছেরা তাঁর কাছে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসে। তিনি আমাদের স্বপ্ন ও বাস্তবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন। তাঁকে ছাড়া আমরা অসহায়। তিনি আমাদের শক্তপায়ে দাঁড়াতে শিখিয়েছেন। তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী-পরিতৃপ্ত পিতা। কবির কাছে পনেরো আগস্ট তাই ভীষণ দুঃস্বপ্নের-

এমনও হতে পারতো নাকি-

পনেরো আগস্ট পঁচাত্তরের ভোররাতে

ভীষণ দুঃস্বপ্ন নিশ্চুপ বসে থেকে তারপর

এসে দাঁড়ালেন ব্যালকনিতে:

এ কী দেখলাম বাংলা মাগো, মানুষ আমাকে মেরেছে?

আমার এ পোড়া বুকে যে মানুষেরই ঠাঁই

অনেক দিন পর সময় নিয়ে তিনি সূর্য ওঠা দেখলেন।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন গণতন্ত্রের অতন্দ্র সৈনিক, বাঙালীর স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। পাকিস্তানী শোষক গোষ্ঠীর শোষণ-নির্যাতনে অতিষ্ঠ বাঙালীর আশ্রয়স্থল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালীকে ভাবতে শিখিয়েছেন, অধিকার আদায় করতে শিখিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু দ্বারা প্রভাবিত হননি এমন বাঙালী পাওয়া দুষ্কর। কিশোর থেকে যুবক, যুবক থেকে বৃদ্ধ সবাইকে সম্মোহিত করেছেন বঙ্গবন্ধু। কবি ইকবাল আজিজ তার কিশোর বয়সে দেখা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন বঙ্গবন্ধুকে প্রথম দেখার স্মৃতি কবিতা। ১৯৬৪ সালে বঙ্গবন্ধু ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচনী প্রচারণা সভায় ভাষণ দিয়েছেন। অধিকাংশ নেতা উর্দুতে ভাষণ দিলেও বঙ্গবন্ধু বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন। সেই স্মৃতিকে তুলে ধরেছেন কবি  

বেশিরভাগ নেতাই উর্দুতে ভাষণ দিলেন;

কিন্তু মুজিব দাঁড়ালেন বাংলা ভাষার প্রতিটি বর্ণকে সঙ্গে নিয়ে-

সারাদেহে বিদ্রোহের জয়গাথা এক সুদর্শন মহামানব।

শেখ মুজিবুর রহমান একটি মহাকাব্যের নায়ক ছিলেন। এই মহাকাব্য জাতীয়তাবাদের। আরো নির্দিষ্টার্থে এ হচ্ছে পাকিস্তানি রাষ্ট্র-কাঠামোর অধীনে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অভ্যুত্থান ও পরিণতিতে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। সবাইকে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন, ছাপিয়ে উঠেছেন। সেই নায়ককে নিয়ে সাহিত্যিকরা কবিতা-গল্প-উপন্যাস লিখবেন, গীতিকার গান তুলবেন, শিল্পী ছবি আঁকবেন সেটাই স্বাভাবিক। মননশীলের চিন্তায়, শিল্পীর ক্যানভাসে  বঙ্গবন্ধু অমলিন আছেন এবং থাকবেন চিরকাল।


আরও খবর



ছাত্ররাজনীতি নিয়ে আদালতের রায় মানতে হবে: বুয়েট উপাচার্য

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতি নিয়ে আদালতের রায় মানতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। আজ সোমবার এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, আদালত যা বলবেন, তা আমাদের মানতে হবে। আদালতের আদেশ শিরোধার্য। না হলে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে।

২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বুয়েট কর্তৃপক্ষের দেওয়া জরুরি বিজ্ঞপ্তি’র বৈধতা নিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম আজ রিট আবেদনটি করেন। ইমতিয়াজ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি বন্ধসহ ৬ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো আজ সোমবারও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস খোলা রয়েছে ও দাপ্তরিক কাজগুলো চলছে।

এদিন একেবারেই ফাঁকা ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তা প্রহরী জানান, আজ সকাল থেকে ক্লাসে কোনো শিক্ষার্থী যাননি। ক্যাম্পাস একেবারেই ফাঁকা। গত তিনদিন ধরে এ অবস্থা।

গত ২৮ মার্চ রাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের প্রবেশকে ঘিরে পরদিন ২৯ মার্চ দুপুর থেকে ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে গত শনিবার থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


আরও খবর
ফের মাউশির ডিজি হলেন অধ্যাপক নেহাল

বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪




যুদ্ধজাহাজের পাহারায় দুবাইয়ের পথে ২৩ নাবিক

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়া ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে মুক্ত করা হয়েছে। মুক্তিপণ দেওয়ার পর নাবিকসহ বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ এখন দুবাইয়ের  আল হারমিয়া বন্দরের দিকে রওনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতীয় একাধিক যুদ্ধজাহাজের পাহারায় রয়েছে মুক্তি পাওয়া জাহাজটি। দুবাই পৌঁছানোর পর জাহাজের দায়িত্ব নেবে নতুন নাবিক দল। দুবাই পৌঁছাতে নাবিকদের আরও পাঁচদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন জলদস্যুর কবল থেকে মুক্ত হওয়া নাবিক মো. শামসুদ্দিন।

শামসুদ্দিনের বোন জামাই বদরুল হক বলেন, শামসুদ্দিনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সব নাবিক সুস্থ আছে। এখন এমভি আব্দুল্লাহর পাশাপাশি একাধিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। শামসুদ্দিন জানিয়েছে, দুবাই পৌঁছাতে আরও পাঁচদিন লাগতে পারে।

আরেক নাবিক হোসেন মো. সাজ্জাদের ভাই মো. মোশাররফ  বলেন,  আমি শুনেছি দুবাই আসার পর নতুন নাবিকেরা জাহাজের দায়িত্ব নেবে। জিম্মি ২৩ নাবিক সেখান থেকে বাংলাদেশে ফিরবেন। সে (নাবিক সাজ্জাদ) আম্মাকে বলেছে, জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএমের জন্য দোয়া করতে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বাংলাদেশ সময় শনিবার বিকেলে জিম্মি জাহাজের ওপর চক্কর দেয়। এসময় জাহাজের ওপরে ২৩ নাবিক অক্ষত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর বিমান থেকে ডলারভর্তি তিনটি ব্যাগ সাগরে ফেলা হয়। স্পিডবোট দিয়ে এসব ব্যাগ জলদস্যুরা কুড়িয়ে নেয়। জাহাজে উঠে দাবি অনুয়ায়ী মুক্তিপণ গুনে নেয় জলদস্যুরা। তবে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটি যথাসময়ে ছেড়ে দেয়নি দস্যুরা। পরে আশপাশে কেউ আটক করছে কি না, সেটি নিশ্চিত হয়ে জাহাজ থেকে দস্যুরা নেমে যায়।

মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ সময় শনিবার মধ্যরাতে ২৩ নাবিক নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ। যদিও মুক্তিপণ কত এবং কীভাবে দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জাহাজের মালিকপক্ষের কোনো কর্মকর্তা।

কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান বলেন, সমঝোতার পর নাবিকসহ জাহাজটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। জাহাজের চারপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে।

এর আগে গত ১২ মার্চ দুপুরে কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।


আরও খবর
চাকরি ছাড়লেন দুদকের ১৫ কর্মকর্তা

শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪




টাঙ্গাইলের এমপির ভাইয়ের বিরুদ্ধে আবারও ধর্ষণের অভিযোগ

প্রকাশিত:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ৩০ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্র ধরে গত দুই মাস আগে টাঙ্গাইলের সংসদ সদস্য তানভির হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরের সাথে পরিচয় হয় ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর। গত বৃহস্পতিবার তাদের প্রথম দেখা হয় উত্তরায়। এর একদিন পর শুক্রবার রাতে আবারো সেখানকার একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করার কথা বলে তরুণীকে ডেকে নেন বড় মনির। এরপর তুরাগ থানর প্রিয়াঙ্কা সিটিতে একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যান মেয়েটিকে।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, এই বাসাটিতেই অস্ত্রের মুখে তাকে ধর্ষণ করে বড় মনির। পরে তাকে ফেলে চলে যায় বড় মনির। এরপর ভুক্তভোগী ট্রিপল নাইনে কল করলে, তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটটিতে পরিবারসহ বড় মনিরের বেশ কিছু ছবিও পাওয়া যায়। পাসওয়ার্ড না থাকায় ফ্ল্যাটের সিসিটিভি ফুটেজ তাৎক্ষনিক দেখতে পারেনি পুলিশ। তবে জব্দ করা হয় ডিবিআর মেশিন।

পুলিশ বলছে, আসামী যেই হোক তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তুরাগ থানার ওসি আবু সাঈদ মিয়া বলেন, অপরাধ যে করবে তাকে সাজা পেতেই হবে। আমরা আইনগত ভাবেই এগিয়ে যাবো। এখানে বাঁধার কিছু নেই।

এর আগেও ২০২২ সালে ধর্ষণ মামলার আসামী ছিলেন টাঙ্গাইলের এই বড় মনি।
নিউজ ট্যাগ: বড় মনির

আরও খবর



হিটস্ট্রোকে যে ফল ভুলেও খাওয়া যাবে না

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

হিটস্ট্রোক মানে হলো অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০৪ -১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে ওঠা, যা সাধারণত প্রচণ্ড জ্বরে হয়। হিটস্ট্রোকের ফলে অস্বাভাবিক মানসিক আচরণ দেখা দিতে পারে। যেমন কনফিউশান, বিড় বিড় করা, অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা, হ্যালুসিনেশন, মাথাব্যথা হওয়া, ঝিম ঝিম করা, হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেরা।

হিটস্ট্রোকে মূলত শরীরের কুলিং সিস্টেম ফেইল করে। এতে ঘাম কমে গিয়ে শরীর শুষ্ক হয়ে যায়, বমি বমি ভাব হয়, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়, হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, ডিহাইড্রেশনের ফলে ইলেকট্রোলাইটস ইম ব্যালেন্স হয়, মানুষ অজ্ঞান হয়ে যায়। এমনকি শুরু হতে পারে খিচুনি। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ফল কি হিটস্ট্রোকের জন্য উপকারী : ফল খাওয়া হিট স্ট্রোকের জন্য উপকারী হলেও কিছু ফল হিটস্ট্রোকে বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই হিট স্ট্রোকে কোন ফল উপকারী এবং কোন ফল অপকারী এটা না জেনে ফল খেলে হতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোকে এড়াতে উপকারী ফল : কম ক্যালরি যুক্ত এবং কম চিনিযুক্ত রসাল ফল হিটস্ট্রোকের জন্য উপকারী। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে শসা, জাম্বুরা, আনারস, তরমুজ। এ ছাড়া নাশপাতি, কাঁচাআম (সবুজ আম), কাঁচা পেঁপে (সবুজ পেঁপে) , আপেল, স্ট্রবেরি, গোলাপ, জাম্বুরা, লেবুও কম ক্যালরি যুক্ত ফল। এসব ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা শরীরের জন্য খুবই  উপকারী।

হিটস্ট্রোকের জন্য অপকারী বা ক্ষতিকর ফল : সাধারণত প্রচুর চিনিযুক্ত ফল এবং উচ্চ ক্যালরি উৎপন্নকারী ফল যেমন পাকা কাঁঠাল, পেয়ারা, পাকা আম, আঙুর, লংগান, লিচু, পাকা কলা, পাকা পেঁপে (হলুদ পেঁপে), প্যাশন ফল, লাল ডালিম, মিষ্টি তেঁতুল, পেয়ারা। মনে রাখবেন পাকা পেঁপে ও পাঁকা কাঁঠাল হিট স্ট্রোকের বিপত্তি বাড়িয়ে দেবে এবং গরম পানীয় যেমন চা ও কফি পান করা যাবে না।

হিটস্ট্রোকে করণীয় : শরীরকে ঠান্ডা করা অর্থাৎ ঠান্ডা পানি দিয়ে মুছে দেওয়া বারবার, ছায়া ও বাতাসযুক্ত স্থানে বসা, ঠান্ডা পানি দিয়ে তোয়ালে বা গামছা ভিজিয়ে ঘাড় মাথা, উরু স্পঞ্জিং করা। ঘাড়ে ঠান্ডা পানিতে ভিজানো রুমাল রাখা যেতে পারে। ডিহাইড্রেশন ও পিপাসা কমাতে নরমাল ঠান্ডা পানি, লেবুর শরবত এবং খাবার স্যালাইন খুবই উপকারী। তবে খাবার স্যালাইন নিয়মমতো বানাতে হবে।


আরও খবর



পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় ট্রাম্পের বিচার শুরু

প্রকাশিত:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

সাবেক পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার নিউ ইয়র্কের আদালতে শুরু হতে যাচ্ছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন ট্রাম্প। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

এই প্রথম কোনও ফৌজদারি মামলায় মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। বিচারের মুখোমুখি হওয়া প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট তিনি। দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ চার বছরের জেল হতে পারে ট্রাম্পের। তবে কারাদণ্ড এড়াতে জরিমানাও হতে পারে তার।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক পর্নো তারকাকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন ড্যানিয়েলসকে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন বলে দাবি করেছেন।

সোমবার জুরি নির্বাচনের মাধ্যমে বিচার শুরু হবে। ধারণা করা হচ্ছে ছয় থেকে আট সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট ৩৪ টি অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি অবশ্য সব কটি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার আগে ট্রাম্পের এই বিচারকে নজিরবিহীন হিসেবে দেখা হচ্ছে।


আরও খবর