মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে
পালিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে ভারত। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়
রাজ্য মনিপুর থেকে গত শুক্রবার প্রথম দফায় কয়েকজনকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর
করে রাজ্য সরকার। এদিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা মিয়ানমারের
নাগরিকদের প্রথম দলকে আজ (শুক্রবার) ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
মিয়ানমারের সঙ্গে ভিসামুক্ত সীমান্ত নীতি
থেকে সরে আসার কয়েক সপ্তাহ পর আশ্রয়প্রার্থীদের প্রত্যাবাসন শুরু করল ভারত। সামনের
দিনগুলোতে এমন আরও অনেককে ফেরত পাঠাবে দেশটি।
প্রথম দফায় কতজনকে পাঠানো হয়েছে, সেই সংখ্যা
জানাননি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। যতটুকু জানা গেছে, অন্তত ৭৭ শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর
পরিকল্পনা নিয়েছে মনিপুর সরকার, যার কার্যক্রম শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে।
২০২১ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান
এবং সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সেখান থেকে পালিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নেয় দেশটির
হাজারো নাগরিক। বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের আক্রমণের মুখে শত শত সেনাসদস্যও পালিয়ে ভারতে আশ্রয়
নিয়েছেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের তিন বছর পর মিয়ানমারে
পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তুমুল লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের
সরকারি বাহিনী। যুদ্ধবিধ্বস্ত এমন পরিস্থিতিতেই আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত
পাঠাচ্ছে ভারত।
মনিপুরের সঙ্গে সীমান্ত সংযোগ রয়েছে মিয়ানমারের।
সীমান্তের দুই পাশের মানুষের মধ্যে জাতিগত মিলও রয়েছে। ফলে বিভিন্ন সময়ে সংঘাতে উত্তপ্ত
হওয়া মনিপুরে মিয়ানমারের শরণার্থীদের কারণে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও বাড়ার ঝুঁকি
দেখছে দিল্লি। গত বছরের মে মাস থেকে জাতিগত সহিংসতায় মণিপুরে প্রায় ২০০ জনের প্রাণ
গেছে।
নাম প্রকাশ না করে ভারতের এক নিরাপত্তা
কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, শরণার্থীদের প্রথম দলটিকে ভারতের সীমান্ত শহর মোরেহ-তে নেওয়ার
পর তাদের হস্তান্তর করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং এক্সে একটি ভিডিও
ক্লিপ শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন নারী শরণার্থীকে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের
ভ্যানে তুলে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।