রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা
আগুন দ্রুত সময়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার অভিযোগে উত্তেজিত জনতা ঘটনার কয়েক ঘণ্টা
পর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালায়। মঙ্গলবার
(৪ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ জনতার নিক্ষেপ করা ইট-পাটকেলে
ওই কার্যালয়ের ভেতরে থাকা অন্তত ১১টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় মারধর করা হয় কয়েকজন
ফায়ারকর্মীকেও।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বঙ্গবাজারের একাধিক ব্যবসায়ী
জানান, ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে হামলার জন্য ব্যবসায়ীরা দায়ী নন। বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের
সূত্রপাত হয় ওইদিন সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৬টা ১২ মিনিটে৷
একাধিক ব্যবসায়ী বলছেন, পুরান ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডে ফায়ার সার্ভিসের প্রধান কার্যালয়টি দুর্ঘটনাস্থলের ঠিক উল্টো পাশেই অবস্থিত। কিন্তু তাদের অভিযোগ—ফায়ার সার্ভিস সময়মতো আসলেও তাদের মধ্যে দায়িত্বহীনতা লক্ষ্য করা গেছে। তারা শুরুতে এই অগ্নিকাণ্ডকে গুরুত্বের সাথে নেয়নি। তাই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের পাম্পে পানি নেই বলেও অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডের
ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণে দেরি হওয়ার কারণে এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ও ব্যবসায়ীরা ফায়ার
সার্ভিসের অফিসে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। ওই সময় ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ভাঙচুর থেকে
বিরত থাকতে মাইকিং করা হলেও বিক্ষুব্ধ জনতা তা আমলে নেয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের মূল
ফটকের সামনের ভবনের গ্লাস, অভ্যর্থনা কক্ষের গ্লাস ভেঙে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। অগ্নিনির্বাপণ
কাজে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাংচুরের শিকার হয়েছে। এসব গাড়ির উইন্ডশিল্ডসহ অন্যান্য
জানলার কাচ ভেঙে ফেলা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিক্ষুব্ধ জনতা ফায়ার সার্ভিসের ১১টি গাড়ি এবং অধিদফতরের ভেতরে প্রবেশ করে ইআরসিসি ভবন ও রিসিপশন ভবন ভাঙচুর করে। এসময় কয়েকজন ফায়ারকর্মীকেও মারধর করে তারা। বাইরে থেকেও উচ্ছৃঙ্খল লোকজন অধিদফতরের ভেতরে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। অগ্নি-নির্বাপণের সময়ও আমাদের অনেক কর্মী মারধরের শিকার হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস অধিদফতরের মহাপরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা
নিজের জীবন দিয়ে আপনাদের রক্ষা করেন, তাদেরই কেন আঘাত করা হলো? কারা এই হামলা করলো!
এই উচ্ছৃঙ্খল লোকজন কারা? কেন তারা এমন আচরণ করলো! আমাদের যেসব গাড়ি মানুষের মূল্যবান
জীবন রক্ষা করে, সেইসব গাড়ি কী উদ্দেশ্যে ভাঙচুর করা হলো?
—বলে
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ওই মহাপরিচালক।