আজঃ শনিবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩
শিরোনাম

খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে: আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর 20২৩ | অনলাইন সংস্করণ
Image

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার দিতে বিএনপিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শনিবার সকালে তার নির্বাচনি এলাকা আখাউড়া-কসবায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আখাউড়ায় এলে রেলওয়ে জংশন স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে এখনও আমার কাছে কাগজপত্র আসে নাই, তারা আবেদন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, তারপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চাইতে পারে।

এ সময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়া কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পরেও দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন। সেটাও কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে, এটা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায়। আবেদন করলে পরে দেখা যাবে।

বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনায় তিনি বলেন, বিএনপি যদি আইন ভঙ্গ করে রাজপথ অবরোধ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সকালে আন্তঃনগর মহানগর প্রভাতি এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছান। পরে তিনি সড়কপথে তার নির্বাচনী এলাকা কসবা উপজেলায় যান। আনিসুল হক বিকালে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে আন্তঃনগর মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারওয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনির খান, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু প্রমুখ।


আরও খবর
বাহাউদ্দিন নাছিমকে শোকজ

শনিবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩




আজ নরসিংদী যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ১২ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

১৯ বছর পর নরসিংদী যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেলে জেলার মোসলেহ উদ্দিন স্টেডিয়ামে জনসভায় যোগ দেবেন তিনি। এসময় তিনি প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে গোটা নরসিংদী। এসএসএফ, র‌্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নরসিংদীতে অবস্থান করছেন। স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকা, পলাশের ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সার খারখানা এলাকায় নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশ পথগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, জনসভাকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ পুরো জেলায়। প্রধানমন্ত্রী বেলা সাড়ে ১১টায় পলাশের ইউরিয়া সার কারখানা উদ্বোধন করবেন। পরে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে তার। দুপর আড়াইটায় নরসিংদী সার্কিট হাউজে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নিবেন। বিকেলে নরসিংদী মোসলেহ উদ্দিন স্টেডিয়ামে বসে অনলাইনে ৪৭ কোটি ১৪ লাখ ৬৯ হাজার ১২৬ টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাকি ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।

নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, নরসিংদীতে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের চিঠি পাওয়ার পরই সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঞ্চ ও হ্যালিপেড তৈরি, রাস্তাঘাটের সংস্কার কাজসহ পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জিএম তালেব হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। সকল মতভেদ ও মান-অভিমান ভুলে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নরসিংদীর সর্বস্তরের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে।


আরও খবর



চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

প্রকাশিত:শনিবার ১৮ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮তম প্রতিষ্ঠা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে শুভেচ্ছা এবং প্রাণঢালা অভিনন্দন দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার উত্তরে হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে পাহাড়ি ও সমতল প্রায় ২৩১২.৩২ একর ভূমির উপর এ বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। বাদশা মিঞা চৌধুরী ও অধ্যাপক আহমদ হোসেন চট্টগ্রামের শিক্ষা ও সংস্কৃতি জগতের অন্যতম দিকপাল। এরইমধ্যে তারা চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনেক স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। চট্টগ্রাম শহরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালানোর জন্য সর্বজন শ্রদ্ধেয় জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ কর্তৃক উৎসাহিত হয়ে বাদশা মিঞা চৌধুরী ও অধ্যাপক আহমদ হোসেন চট্টগ্রামের নেতৃস্থানীয় নাগরিক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও ছাত্রদের একটি সভা আহ্বান করেন।

১৯৬১ সালের ৭ মে রোববার অনুষ্ঠিত এই ঐতিহাসিক সভায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ঢাকা থেকে এসে যোগদান করেছিলেন বলে জানা যায়। প্রস্তাবিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দেন। এই সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠনী পরিষদ গঠিত হয়। জনাব বাদশা মিঞা চৌধুরী এই পরিষদের সভাপতি এবং অধ্যাপক আহমদ হোসেন আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। পরিষদ গঠিত হওয়ার অব্যবহিত পরে সংগঠনী পরিষদের এক জরুরি সভায় দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার কাজ ত্বরান্বিত করতে প্রেসিডেন্ট, গভর্নর ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যদের কাছে স্মারকলিপি পেশ করার বিষয় অনুমোদিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্মারকলিপি পেশ করা হলে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব অচিরেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে বলে সংগঠনী পরিষদের উপস্থিত সদস্যদের আশ্বস্ত করেন। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আন্দোলনে জনাব বাদশা মিঞা চৌধুরী ও অধ্যাপক আহমদ হোসেনের নিরলস কর্ম প্রচেষ্টা সংশ্লিষ্ট সব মহলে আশার সঞ্চার করে। এমন সময় কোনো একদিন তৎকালীন পাকিস্তানের দোর্দ-প্রতাপ সদর স্বঘোষিত ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইউব খান বেড়াতে গেলেন সিলেটে; সঙ্গে তৎকালীন পূর্বপাক প্রদেশের জনপ্রিয় গভর্নর জেনারেল (অব.) আজম খান। সিলেটের ছাত্ররা সদর-কে কাছে পেয়ে জেঁকে ধরল বিশ্ববিদ্যালয় দিতে হবে সিলেটে। জনপ্রিয় সদর আর জনপ্রিয় গভর্নরের জনপ্রিয়তা লাটে ওঠার উপক্রম। কিন্তু যায় কোথায়, গভর্নরের জনপ্রিয়তা কি এমনিতেই বাঙালির রগ চিনেছিলেন এই চতুর পাঠান। পরিস্থিতি সামলে দিতে গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন তিনি। ঘোষণা দিলেন, হজরত শাহ জালালের (রা.) দেশ সিলেটেই প্রদেশের তৃতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হবে। ধন্য ধন্য পড়ে গেল সদর আর গভর্নরের- সিলেটবাসী মহাখুশি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুলো ঝুলিয়ে রাজনীতি উঠল তুঙ্গে। যে দেশের মানুষ বাড়ির সীমা, জমির আল, খাঁচার মুরগি আর কাটা ঘুড়ি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তথাকথিত রাজনীতির আলখল্লাধারীদের যৎসামান্য উস্কানিই তাদের জন্য যথেষ্ট। কুমিল্লা স্টেশনে চট্টগ্রামগামী ট্রেন আক্রান্ত হলো। চট্টগ্রামবাসী গেল ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদের পথে। মিছিল আর সভা করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড পাহাড়ের মতো রুখে দাঁড়াল তারা। বাদশা মিঞা আর আহমদ হোসেনরা বুক চিতিয়ে সামনে এগিয়ে গেলেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠনী পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সংগ্রাম পরিষদ নামে পুনর্গঠিত হলো। ১৯৬২ সালের ৯ ডিসেম্বর লালদিঘির ময়দানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় চট্টগ্রাম কলেজকে কেন্দ্র করে পূর্বপাক প্রদেশের তৃতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সরকারের গড়িমসির তীব্র সমালোচনা করা হয় এই সভায়। সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আহমদ হোসেন আঞ্চলিকতাবাদী ও স্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদদের অপতৎপরতায় অনুমোদিত পরিকল্পনার অহেতুক ও যথেচ্ছ রদবদল দেশের অমঙ্গল ডেকে আনবে বলে সরকারকে সতর্ক করে দেন।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবির সঙ্গে কুমিল্লা ও সিলেটবাসীর দাবির কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না, চট্টগ্রামবাসী শুধু পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বিশিষ্ট ধারার বাস্তবায়ন দাবি করছে। ষড়যন্ত্রকারীরা ডুব সাঁতার দেওয়া আরম্ভ করল। এক ঢিলে অনেক পাখি মারতে হবে তাদের এবং দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনার বিশ্ববিদ্যালয়কে শিকেয় তুলতে হবে। এমন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে টঙ্গীতে নির্বাসন দেওয়ার ষড়যন্ত্রও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা আইউব-মোনায়েম চক্রকে ঢাকা শহরে সুখে শান্তিতে রাজত্ব করতে দিচ্ছে না। এখন চট্টগ্রাম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হলে ঢাকার মতো চট্টগ্রামও প্রশাসনের অশান্তির কারণ হয়ে উঠবে। এভাবে অনেক বিবেচ্য বিষয় উকিল-গভর্নর আবদুল মোনায়েম খান এবং তার যোগ্য শিক্ষামন্ত্রী মফিজউদ্দীনের মাথায় জট পাকাচ্ছে। তারা এই জট থেকে বেরিয়ে আসার এক ফন্দি আঁটলেন। দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনা মোতাবেক চট্টগ্রাম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার প্রকল্পের নথিটি ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করা হলো। এর বদলে তৃতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় করা যায় তা নির্ধারণ করার জন্য একটি স্থান নির্বাচন কমিটি গঠন করা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. এমও গণির নেতৃত্বে। চট্টগ্রামবাসী সরকারের এই অন্যায্য সিদ্ধান্তেরও প্রতিবাদ করল।

সামরিক শাসনের অধীনে তৎকালীন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অর্বাচীন মৌলিক গণতন্ত্রের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই নির্বাচনে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাউজান, হাটহাজারী ও রাঙ্গুনীয়া নিয়ে একটি বিশাল নির্বাচনি এলাকা গঠিত ছিল। জানা যায় ওই নির্বাচনে এই এলাকার জৈনিক প্রার্থী নির্বাচনি প্রচারাভিযানকালে হাটহাজারীতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সব প্রচেষ্টা নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সরকার নিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্থান নির্বাচন কমিটিও হাটহাজারীর ফতেহপুর ইউনিয়নের জঙ্গল পশ্চিম পট্টি মৌজার দুর্গম পাহাড়ি এলাকাকে প্রদেশের তৃতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হিসেবে বেছে নেয়। চট্টগ্রাম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার তথা চট্টগ্রাম শহরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বাদশা মিঞা- আহমদ হোসেনদের লালিত স্বপ্নও ভোরের শিশিরের মতো হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের উপ-কিউরেটর হিসেবে দায়িত্বপালনকারী ড. শামসুল হোসাইন অধ্যাপক আহমদ হোসেন স্মৃতি সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত বাদশা মিঞা-আহমদ হোসেনের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় কলামে এবং প্রেরণার উৎস শীর্ষক প্রকাশনায় উপরোল্লেখিত তথ্যাদির সত্যতা পাওয়া যায়।

১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করেন তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের উপ-জনশিক্ষা পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) জনাব মোহাম্মদ ফেরদাউস খান। এ পরিকল্পনার সামগ্রিক মূল্যানুমান ছিল ৬২.৬৭৫ মিলিয়ন টাকা। যথাসময়ে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন সাপেক্ষে ফেরদাউস খানের উপরোক্ত খসড়া পরিকল্পনা তৎকালীন পাকিস্তানের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির নীতিগত অনুমোদন লাভ করে ১৯৬৫ সালের জুন মাসের কোনো এক সময়ে অনুষ্ঠিত সভায়। এর আগে ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. এমও গণিকে সভাপতি ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখকে সদস্য করে একটি স্থান নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিই চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় ফতেপুর গ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের পশ্চিম পট্টি মৌজায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেন। তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব খান ১৯৬৪ সালের ২৯ আগস্ট সুপারিশকৃত স্থানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় চট্টগ্রামের জনসাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য পঁচিশ লাখ টাকার একটি তোড়া প্রেসিডেন্টকে উপহার দেয়। ষাটের দশকের প্রথম ভাগে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল মাত্র দুটি ঢাকা এবং রাজশাহীতে। অথচ তুলনামূলক কম জনসংখ্যা নিয়ে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল চারটি এবং পঞ্চমটি চালু হতে যাচ্ছিল ইসলামাবাদে, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯২১ সালে এবং রাজশাহীতে ১৯৫৩ সালে। আলোচ্য সময়ে ঢাকার ছাত্র সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার এবং রাজশাহীতে আড়াই হাজার। এ অবস্থায় ঢাকার ছাত্র সংখ্যাকে মনে করা হচ্ছিল অতিমাত্রায় ভিড়াক্রান্ত। এই সমস্যার সমাধান করে শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং আরো বেশি সংখ্যায় উৎসাহী ও যোগ্য শিক্ষার্র্থীর জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষা কমিশন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে দ্বিতীয় পাঁচশালা পরিকল্পনাকালে আরো একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে। সে সময় চট্টগ্রাম বিভাগের ভৌগোলিক আওতায় দেড় কোটি লোকের জন্য উচ্চ শিক্ষার কোনো সুযোগ ছিল না। এই সমস্যা সমাধানকল্পে চট্টগ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

প্রসঙ্গক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রাচীন প্রত্ন-আবহ সম্পর্ক এখানে কিছুটা আলোকপাত করা যেতে পারে। ধারণা করা হয়, ফতেপুর গ্রামের নামকরণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চট্টগ্রামে প্রথম মুসলিম বিজয়ের স্মৃতি। তার পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামের আলাওল দীঘির উত্তর পাড়ে একটি প্রাচীন মসজিদের ভগ্ন দেয়ালে পাথরে উৎকীর্ণ একখানা শিলালিপি পাঠে বাংলার স্বাধীন সুলতান রুকনুদ্দীন বারবক শাহের আমলের মজলিস আলা রাস্তি খানের নাম পাওয়া যায়। অদুরবর্তী হাটহাজারী বাজারের সংলগ্ন পশ্চিম পার্শ্বে আবিষ্কৃত হয়েছে আরো একখানি সুলতানী মসজিদ ও শিলালিপি। বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন পাহাড়ে এক সময় মঘ রাজার বাড়ি ছিল বলে জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। এছাড়াও উপচার্যের বাসভবন নির্মাণের জন্য ভিত খোঁড়ার সময় মাটির অনেক গভীরে পাওয়া যায় ধাতু নির্মিত দুইখানা প্রাচীন থালা। সম্প্রতি শামসুন্নাহার হলের সামনে পাওয়া গেছে একখণ্ড অশীভূত কাঠ। এসব নিদর্শন ও তথ্য অনুশীলনে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রত্ন-আবহ সম্পর্কে ধারণা করা চলে।

১৯৬৫ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রফেসর আজিজুর রহমান মল্লিক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পের পরিচালক নিযুক্ত হন। নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রাস্তার কাকাসান ভবনে প্রকল্প কার্যালয় স্থাপন করা হয়। পরিচালক একই ভবনের দোতলায় থাকতেন। তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের শিক্ষা পরিদপ্তরের বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত শাখার সব কর্মচারীকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পে বদলি করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৫ তারিখের একটি সরকারি নির্দেশে সর্বজনাব মোহাম্মদ হোসেন মোল্লা, মমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং মোহাম্মদ বদিউল আলম প্রকল্প অফিসে রিপোর্ট করেন। ঢাকা থেকে তারা সঙ্গে নিয়ে আসেন একটি রেক্স রোটারি ডুপ্লিকেটিং মেশিন এবং একটি আন্ডারউড টাইপ রাইটার। আসবাবপত্রের তাৎক্ষণিক অভাবে প্রফেসর মল্লিকের খাওয়ার টেবিলেই অফিসের কাজ শুরু করতে হয়।

অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রফেসর মল্লিক বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি ভবন নির্মাণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ সময় একটি গ্রন্থাগার ভবন (পূর্বের কাউন্সিল, একাডেমিক, উন্নয়ন ও ফটোগ্রাফী অফিস এবং ডাকঘর), ফ্যাকাল্টি সদস্যদের জন্য একটি অফিস (পূর্বের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর), ক্লাস ভবন (পূর্বের হিসাব নিয়ামকের অফিস), দোতলা প্রশাসনিক ভবন (পূর্বের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের দপ্তর), শিক্ষকদের বসবাসের জন্য তিনটি একতলা বিল্ডিং, প্রত্যেকটিতে চারটি করে মোট বারোটি ফ্ল্যাট, ছাত্রদের হোস্টেলের জন্য এসবেস্টসের চালা দেওয়া তিনটি শেড (বর্তমানে প্রেস, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও প্রকৌশল দপ্তর) নির্মাণ করা হয়। বলা হয়েছিল অস্থায়ী গ্রন্থাগার ভবন, ফ্যাকাটি অফিস এবং ক্লাস ভবন প্রকৃতপক্ষে ব্যবহৃত হবে মেডিকেল সেন্টার, মেনটেন্যান্স অফিস এবং কিন্ডারগার্টেন স্কুল হিসেবে। দোতলা প্রশাসনিক ভবনে স্থাপিত হবে ইউওটিসি সদর দপ্তর। ছাত্রদের হোস্টেল হবে ছাপাখানা। শিক্ষকদের আবাসিক ফ্ল্যাটগুলো অবিবাহিত শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য চিহ্নিত করার পরিকল্পনা ছিল। ১৯৬৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ওই দিনেই প্রফেসর মল্লিক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। তিনি উপাচার্য পদে কাজে যোগ দেন ১৯৬৬ সালের ৯ অক্টোবর। ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের প্রাদেশিক গভর্নর আবদুল মোনায়েম খান। উদ্বোধনের ১০ দিন পর ১৯৬৬ সালের ২৮ নভেম্বর বাংলা, ইংরেজি ইতিহাস ও অর্থনীতি এই চারটি বিভাগে ২০২ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে এমএ প্রথম পর্বে (প্রিলিমিনারি) ক্লাস চালুর মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এসব বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন বাংলা বিভাগে জনাব আবুল কালাম মনজুর মোর্শেদ, ইংরেজি বিভাগে জনাব মোহাম্মদ আলী ও জনাব আজিজুল হাকিম, ইতিহাস বিভাগে ড. আবদুল করিম ও ড. জাকিউদ্দীন আহমদ এবং অর্থনীতি বিভাগে ড. এসএ আতহার। রেজিস্ট্রার নিযুক্ত হন জনাব মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জনাব মহিউদ্দীন আহমদ খান, সহকারী প্রকৌশলী বাবু প্রফুল্ল কুমার সোম এবং সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে জনাব আতাউর রহমান। চমৎকার বিষয় হচ্ছে ২০২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক যাত্রা যে দিন শুরু হয়েছিল ঐদিন চারটি বিভাগের ক্লাস একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উক্ত ক্লাসে উপস্থিত শিক্ষার্থীর তালিকা ও সংখ্যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরে এখনো সংরক্ষিত রয়েছে।

প্রাথমিক বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উন্নয়নের ধারা যখন পূর্ণবেগে বহমান তখনই শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীরা এই যুদ্ধে এক অগ্রণী ভূমিকা নেয়। ২৪ মার্চ ১৯৭১ প্যারেড ময়দানে (চট্টগ্রাম কলেজ ময়দান) একটি জমায়েতের আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতি। এদিনের অনুষ্ঠান সূচিতে ছিল গণমিছিল, সভা, গণসঙ্গীতের আসর ও গণআন্দোলন ভিত্তিক নাট্যাভিনয়। মুসলিম ইনস্টিটিউট থেকে প্যারেড ময়দান পর্যন্ত মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপাচার্য এআর মল্লিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের সঙ্গে মিছিলে আরো যোগ দেন বিশ্ববিদালয় ও কলেজের অনেক শিক্ষক। মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে সংঘর্ষে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক জনাব আবদুর রব নিহত হন। ১৯৭০ সালে তিনি ছিলেন ইতিহাস বিভাগে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থী। এ যুদ্ধে আরো শহীদ হন ইতিহাস বিভাগের ছাত্র ফরহাদ, রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র নাজিম উদ্দীন, ইফতেখার, খন্ডকালীন শিক্ষক অবনী মোহন দত্ত, প্রকৌশল দপ্তরের প্রভাষ কুমার বড়ুয়া, চেইনম্যান মোহাম্মদ হোসেন (বীরপ্রতীক)। নৌ কমান্ডো মোহাম্মদ হোসেনের বীরত্বগাঁথা স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে আছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে। ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৯ জন মুক্তিপাগল সৈনিক ডুবুরি ঝাঁপিয়ে পড়ল কর্ণফুলীর উত্তাল তরঙ্গে। লক্ষ্য তাদের শত্রুর জাহাজ। অভিযান সফল হল, কিন্তু ফিরলোনা একজন। ২৪ সেপ্টেম্বর বহির্নোঙ্গরে ভেসে ওঠে মোহাম্মদ হোসেনের লাশ। কোমরে তখনও বাঁধা জাহাজ বিধ্বংসী লিম্পেট মাইন।

উপাচার্য প্রফেসর এআর মল্লিক মুক্তিযুদ্ধে যোগ দান করায় বিশ্ববিদ্যালয় কোষাধ্যক্ষ জনাব ইউএন সিদ্দিকীকে ২২ মে ১৯৭১ সাল উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নতুন বিভাগ খোলা হয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ। মুক্তিযুদ্ধ শেষে প্রফেসর মল্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং ৩১ জানুয়ারি ১৯৭২ পর্যন্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ৭৩ এর বাস্তবায়ন। গবেষণার নূতন ক্ষেত্র চয়ন, সুন্দর ও সত্যের অন্বেষণে আত্মনিয়োগ ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে লুকায়িত বৃত্তিগুলোর বিকাশ সাধন এবং বৈষয়িক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে রুজি-রোজগারের জন্য যোগ্য করে গড়ে তোলা এই দ্বিবিধ উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম রচিত হয়। এর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন মুক্ত পরিবেশ ও স্বাধীনতা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ৭৩ এ পর্যাপ্ত স্বাধীনতার বিধান রয়েছে। প্রফেসর মোহাম্মদ আলী ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ৭৩ অনুযায়ী নিযুক্তি প্রথম উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় রজতজয়ন্তীতে প্রকাশিত স্মরণিকা স্মৃতি শীর্ষক প্রকাশনায় ড. শামসুল হোসাইন লিখিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে উপরোক্ত তথ্যাদি পাওয়া যায়। ১৯৬৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত উপাচার্যগণের নাম ও মেয়াদকাল:

(১) প্রফেসর ড. এআর মল্লিক ০১-১০-১৯৬৬ থেকে ৩১- ০১- ১৯৭২ (২) জনাব ইউএন সিদ্দিকী (ভারপ্রাপ্ত) ২১-০৪-১৯৭১ থেকে ৩০-০১-১৯৭২ (৩) প্রফেসর ড. এম ইন্নাছ আলী ০১-০২-১৯৭২ থেকে ১৮-০৪-১৯৭৩ (৪) প্রফেসর আবুল ফজল ১৯-৪-১৯৭৩ থেকে ২৭-১১-১৯৭৫ (৫) প্রফেসর ড. আবদুর করিম ২৮-১১-১৯৭৫ থেকে ১৮-৪-১৯৮১ (৬) প্রফেসর ড. এমএ আজিজ খান ১৯-০৪-১৯৮১ থেকে ১৮-০৪-১৯৮৫ (৭) প্রফেসর মোহাম্মদ আলী ১৯-৪-১৯৮৫ থেকে ২২-৫-১৯৮৮ (৮) প্রফেসর ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন ২৩-০৫-১৯৮৮ থেকে ২৯-১২-১৯৯১ (৯) প্রফেসর ড রফিকুল ইসলাম চৌধুরী ৩০-১২-১৯৯১ থেকে ০৬-১১-১৯৯৬ (১০) প্রফেসর আবদুল মান্নান ০৬-১১-১৯৯৬ থেকে ১৩-০২-২০০১ (১১) প্রফেসর মোহাম্মদ ফজলী হোসেন ১৪-০৪-২০০১ থেকে ০২-০২-২০০২ (১২) প্রফেসর এজেএম নূরুদ্দীন চৌধুরী ০২-০২-২০০২ থেকে ০২-০২-২০০৬ (১৩) প্রফেসর ড. এম বদিউল আলম ০৮-০২-২০০৬ থেকে ২৪-০২-২০০৯ (১৪) প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ ২৫-০২-২০০৯ থেকে ২৮-১১- ২০১০ (১৫) প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন (ভারপ্রাপ্ত) ০৯-১২-২০১০ থেকে ১৪-০৬-২০১১ (১৬) প্রফেসর ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ ১৫-০৬-২০১১ থেকে ১৫-০৬-২০১৫ (১৭) প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ১৫-০৬-২০১৫ থেকে ১৩-০৬-২০১৯ (১৮) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। ১৩-০৬-২০১৯ থেকে উপ-উপাচার্যগণের নাম ও মেয়াদকাল: (১) প্রফেসর মো. আলী ইমদাদ খান ০১-১১-১৯৮৭ থেকে ১৪-১১-১৯৮৯ (২) প্রফেসর ড. এম বদিউল আলম ৩০-১২-১৯৯১ থেকে ২৬-০৮-১৯৯৬ (৩) প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ ২৬-০৮-১৯৯৬ থেকে ১৩-০২-২০০১ (৪) প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম আরিফ ১০-০৭-২০০১ থেকে ১৩-১১-২০০১ (৫) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শামসুদ্দিন ১৩-১১-২০০১ থেকে ১৩-১১-২০০৫ (৬) প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন ২৫-০২-২০০৯ থেকে ২৪-০২-২০১৩ (৭) প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী ২৫-০২-২০১৩ থেকে ১৪-০৬-২০১৫ (৮) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ২৮-০৩-২০১৬ থেকে ০৩-১২-২০১৯ (৯) প্রফেসর বেনু কুমার দে (একাডেমিক) ০৫-০৫-২০২১ থেকে আছেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জনাব আবুল কাসেম (সাবজাজ) ২২-২-৭২ থেকে ৩১-৩-৭৪ পর্যন্ত তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. এম ইন্নাছ আলীর অনুপস্থিতিতে দুইবার অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাছাড়া ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তৎকালীন কোষাধ্যক্ষ জনাব ইউএন সিদ্দিকী ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে ২২-৫-১৯৭১ থেকে ১৫-১২-১৯৭১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ৭৩-এর আওতায় কোষাধ্যক্ষের পদটি বিলুপ্ত করা হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবার পাঁচ বছরের মধ্যেই আমাদের স্বাধীকার আন্দোলন শুরু হয়। ফলে প্রাথমিক পর্যায়েই এর উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়। একাত্তরে মহান স্বাধীনতা লাভের পর সদ্য স্বাধীন দেশের আর্থিক অভাব অনটন এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এই সংকটকে আরো বাড়িয়ে তোলে। পরবর্তীকালের সরকারগুলো বিকাশমুখী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সুবিবেচনার পরিচয় দেয়নি। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে পড়া-লেখার মান উন্নয়নে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বর্তমানে বিশ্বের অনেক নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা (MOU) চুক্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা কাজের সুযোগ অবারিত হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্যও এ সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি অনুষদের (১টি অধিভুক্ত) অধীনে ৪৮টি বিভাগ, ৭টি ইনস্টিটিউট (১টি অধিভুক্ত), ৫টি গবেষণা কেন্দ্র, শিক্ষার্থীদের জন্য ১৪টি আবাসিক হল ও ১টি হোস্টেল এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২৫টি অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় ৯৮৩ জন সম্মানিত শিক্ষক, ৪৩২ জন সম্মানিত কর্মকর্তা, ৫৫৯ জন সম্মানিত ৩য় শ্রেণির কর্মচারী, ৯৭৮ জন সম্মানিত ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণরত ২৭,১৩৯ জন শিক্ষার্থীকে তাদের পাঠদানে এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে কাজ করছেন। এছাড়াও আধুনিক বিশ্বে যুগের চাহিদা পূরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪৪তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি অনুষদের অধীনে (প্রতিটি অনুষদে ২টি করে) ১৪টি নতুন বিভাগ খোলার সুপারিশ করা হয়। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স, মাস্টার্স ও অন্যান্য ডিগ্রির পাশাপাশি উচ্চতর ডিগ্রি হিসেবে এমফিল, পিএইচডি. ও এমডি ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে জ্ঞান-গবেষণায় একটি সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক-গবেষকবৃন্দ নব নব জ্ঞানের উদ্ভাবন করছেন এবং তা দেশ-জাতির কল্যাণে প্রতিনিয়তই ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সম্মানিত শিক্ষকদের পাশাপাশি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জ্ঞান-গবেষণা, প্রশাসনিক দক্ষতা ও পারদর্শিতা এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক নিয়মিত কর্মশালার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ সম্মানিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করে দেশ-বিদেশে অ্যাওয়ার্ড/সম্মাননাপ্রাপ্ত অনেক আন্তর্জাতিকমানের গুণী শিক্ষক-গবেষক রয়েছে, যাদের মধ্যে বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদও নোবেল বিজয়ী রয়েছে; এর মধ্যে প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম, নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস, প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান, প্রফেসর ড. এ আর মল্লিক, প্রফেসর আবুল ফজল, প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, প্রফেসর ড. আবদুল করিম, প্রফেসর ড. আবু হেনা মোস্তাফা, প্রফেসর ড রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, প্রফেসর ড. এমএ আজিজ খান, শিল্পি রশিদ চৌধুরী, প্রফেসর মর্তুজা বশির, প্রফেসর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ, প্রফেসর ড. অনুপম সেন, প্রফেসর জিয়া হায়দার, প্রফেসর আবদুল মান্নান, প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, প্রফেসর ড. মইনুল ইসলাম, প্রফেসর ড. এম শাহআলম প্রমুখ। এছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করে সরকারী-বেসরকারী তথা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন উচু পদে অধিষ্ঠিত থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব-মর্যাদা যারা বৃদ্ধি করেছেন তাদের মধ্যে ড. আবদুল করিম, জনাব মুসলিম উদ্দিন চৌধুরৗ, জনাব সম্পদ বড়ুয়া, জনাব ফজলুল কবীর, জনাব আহম্মদ কায়কাউস, জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন, জনাব আবুল মোমেন, জনাব মাহবুবুল আলম তালুকদার প্রমুখ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বই, সাময়িকী, থিসিস, দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহ, সিডি, উর্দু, আরবি, ফার্সি সংগ্রহ, ব্রেইন বই ও পান্ডলিপির সংখ্যা প্রায় ৩, ১৭, ৭৭৫ লক্ষ এবং চবিজাদুঘরের প্রত্ন-সম্পদের সংখ্যাপ্রায় ২২৫৫। এছাড়া জাদুঘরে সংগৃহীত বই, পাণ্ডুলিপি, সাময়িকী, জার্নাল, ছাপা পুঁথি, প্রাচীন পত্রপত্রিকা, গেজেটিয়ার্স, আবদুল হক চৌধুরীর বিশেষ সংগ্রহ, রমেশশীল সংগ্রহ, আর্কাইভস সামগ্রী ও অন্যান্য প্রকাশনার সংখ্যা প্রায় ৮৬৭৩। হাঁটি হাঁটি পা-পা করে দেশের অন্যতম উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স এখন ৫৮ বছর। আগামী দিনে এ পৃথিবীর জন্য দক্ষ ও যোগ্য মানব সম্পদ তৈরিত আলোর দিশারী হয়ে জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে চলেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। তাছাড়া উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার উৎকর্ষের পাশাপাশি ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে, ৭০-এর নির্বাচন, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ দেশ ও জাতির প্রতিটি ক্রান্তিকালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা।

লেখক : মোহাম্মদ হোসেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর
ইবিতে উচ্চশব্দে গান-বাজনা নিষিদ্ধ

শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩




ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে অত্যাধুনিক অস্ত্র-কৌশল ব্যবহার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দ্বিতীয় ধাপের স্থল অভিযানে নেমেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। এই অভিযানের অংশ হিসেবে তারা উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণ গাজায় প্রবেশ করেছে। আর সেখানে প্রবেশ করতেই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে নেতানিয়াহু বাহিনী। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও তাদের মিত্ররা ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অত্যাধুনিক সামরিক কৌশল ও অস্ত্র ব্যবহার করছে। গত রোববার (৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ারের (আইএসডব্লিউ) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর ফ্রান্স টোয়েন্টি ফোরের।

আইএসডব্লিউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাত দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। আর হামাস ও তাদের মিত্ররাও সমরাস্ত্র উন্নত করেছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গত মাসের যুদ্ধ থেকে পাওয়া শিক্ষা থেকে নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে হামাস।

হামাসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৌশল পরিবর্তনের একটি হলো তারা ট্যাংক-বিধ্বংসী বিস্ফোরক ইএফপির ব্যবহার বাড়িয়েছে। গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এই অস্ত্র মাত্র দুবার ব্যবহার করলেও চলতি মাসেই পাঁচবার ব্যবহার করেছে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা

গত ২ ডিসেম্বর হামাসের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, হামাস যোদ্ধারা ট্যাংক-বিধ্বংসী বিস্ফোরক ছাড়াও উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে একমুখী আ্যটাক ড্রোন ব্যবহার করছে। যুদ্ধক্ষেত্রে এই ড্রোনের ব্যবহারও হামাসের জন্য কারিগরি ক্ষেত্রে বেশ বড় অগ্রগতি।

যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সামরিক দিকের বিশেষজ্ঞ ভেরোনিকা পনিসজাকোভা বলেন, কয়েক দশক ধরেই হামাস ড্রোন তৈরি করছে। তারা এরই মধ্যে এসব ড্রোন ব্যবহার করেছে। তবে এত কার্যকরভাবে নয়। তারা এতদিন মূলত প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করেছে।

তিনি বলেন, উত্তর ও দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে কৌশল ব্যবহার করেছে হামাসও তা করতে পারে। প্রত্যক্ষ সংঘাতের আগে ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে তারা কামিকাজি ড্রোন দিয়ে হামলা চালাতে পারে।

সমরাস্ত্র উন্নত করার পাশাপাশি হামাস দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে বলেও উল্লেখ করেছে মার্কিন চিন্তক প্রতিষ্ঠানটি।

ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার বলেছে, এতদিন হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন দেরিতে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে এবার তারা কৌশল পাল্টে পরিকল্পিত প্রতিরক্ষার দিকে মনোনিবেশ করেছে। উত্তর গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের গতি কমানোর লক্ষ্যই ছিল কিছুটা সময় নেওয়া যাতে হামাস নেতা ও তাদের যুদ্ধ-সরঞ্জামগুলো দক্ষিণ গাজায় সরিয়ে নেওয়া যায়।

লন্ডনের কিংস কলেজের মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আহরন ব্রেগম্যান বলেছেন, উত্তর গাজা উপত্যকায় হামাসকে একটি গেরিলা বাহিনীর মতো কাজ করতে দেখেছি। তারা বড় যুদ্ধ এড়িয়ে গেছে। তারা হামলা করে পালিয়ে গেছে। আবার হামলা করেছে আবার পালিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ইসরায়েলিরা যখন দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় অভিযান চালাবে তখন এই কৌশল বদলে যেতে পারে। সেখানে হামাসের শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে। তাই তারা আরও শক্তভাবে প্রতিরোধ করতে পারে।


আরও খবর



‘নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর করতে সবাইকে কাজ করতে হবে’

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু এবং উৎসবমুখর করতে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে হাছান মাহমুদ নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) এ নির্বাচন প্রস্তুতি উপলক্ষে দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, সবাই যেন নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দেয় তার জন্য ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে। প্রত্যেক ভোটারের কাছে ভোটার কার্ড পাঠাতে হবে। ভোটাররা যেনো ভোট কেন্দ্রে এসে উৎসবের আমেজে ভোট দিতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় হাছান মাহমুদ নিজ আসনের এই কমিটির সদস্যদের বলেন, কোনো ভোটকে হালকাভাবে নিতে নেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, ভোটের আগেই জিতে যাওয়া জেতা নয়। তাই ভোটের আগে দয়া করে কেউ জিতে যাবেন না। কারণ পিঁপড়ার শক্তিও কিন্তু শক্তি। নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতেও তাই কাউকে বাদ দিতে নাই, সবাইকে রাখতে হবে। সেভাবেই সবাইকে কাজ করতে হবে।

আরও পড়ুন>> নিষেধাজ্ঞা এলে বিএনপির ওপর আসা উচিত : কাদের

নির্বাচনকে উৎসবমূখর করতে উঠান বৈঠক, পাড়া বৈঠক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে ভোটের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি করতে হবে, না হয় মানুষ ভোট দিতে উৎসাহবোধ করবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমজনতাকে ভোটের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ আমরা একটা উৎসবমুখর ভোট করবো। মানুষ লাইন ধরে একেবারে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দেবে। ভোটার উপস্থিতির ক্ষেত্রেও যেন রেকর্ড করতে পারি, সে জন্য ভোটারদের উৎসাহ দিতে হবে। বাংলাদেশ যাতে রেকর্ড করে আমরা সেরকম একটা রেজাল্ট করতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে সবাইকে।

সভায় আরো বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইদ্রিছ আজগর, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আকতার হোসেন খাঁন, ইফতেখার হোসেন বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার, আওয়ামী লীগ নেতা খালেদ মাহমুদ, মাস্টার আসলাম খান ও উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম।


আরও খবর



১৩ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে মেট্রোরেলের আরও দুই স্টেশন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আগামী ১৩ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজয় সরণি স্টেশন। এ নিয়ে এই পথে ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিলের পর আরও দুটি মিলিয়ে মোট পাঁচটি স্টেশন চালু থাকবে।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় অংশের উদ্বোধনের সময় সময়সীমার কথা বলা হয়েছিল যে আগামী তিন মাসের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত সব স্টেশন চালু হবে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজয় সরণি স্টেশন চালু হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে স্টেশন চালু হলেও সময়ের কোনো পরিবর্তন হবে না।

আগের যে সময়সূচি সেই অনুযায়ী মতিঝিল ও আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করবে। তবে পর্যায়ক্রমে শাহবাগ ও কারওয়ান বাজার মেট্রো স্টেশন খুলে দেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবগুলো স্টেশন খুলে দেওয়ার পরই সময় পর্যায়ক্রমে বাড়বে। কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ কাজ শুরুর অনুমতি পরে পাওয়ায় সেটির লিফট ও সিঁড়ির কাজ শেষ হয়নি। তাই ওই দুইটি চালু করতে দেরি হচ্ছে। তবে লক্ষ্য আছে জানুয়ারীর মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলার। আর জানুয়ারীর শুরুর দিকেই সেটা করার চেষ্টা থাকবে।

এ নিয়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পাঁচটি স্টেশন চালু হচ্ছে। এই অংশে আছে সবমিলিয়ে সাতটি স্টেশন। এখন মতিঝিল, সচিবালয় ও ফার্মগেট স্টেশন চালু আছে। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সব স্টেশনই চালু রয়েছে।


আরও খবর