বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিনের বাসায় সাকিবের বিএনএমের সদস্য ফরম পূরণ করে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি পর্বের ছবি প্রকাশ্যে আসা নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। এ বিষয়ে নিজের অবস্থান জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার বনানীতে নিজের বাসায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
এ সময় হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই দেশে নানা ধরনের তৎপরতা শুরু হয়। আমি সমরিক বাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পরেও অনেক অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, আমার সিনিয়র-জুনিয়র তাদের সঙ্গে আমার ওঠা বসা। তারা আমার বাসায় আসেন, আমি তাদের বাসায় যাই। এভাবে সেনাবাহিনীর পুরোনো সদস্য হিসেবে তাদের সঙ্গে আমার সখ্যতা গড়ে ওঠে। বিএনপির সঙ্গে মাঝে মাঝে আমার দ্বিমত থাকে। যা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পায়। অনেকেই মনে করেছে বিএনপি ত্যাগ করার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি। সরকারের পক্ষ থেকে যারা যোগাযোগ করেছে তাদেরকে আমি বলেছি, ৩২ বছর পর আমার পক্ষে দল ত্যাগ করা সম্ভব না। বয়স হয়েছে, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ, রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চাই।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষ থেকে অনেক কিছু করা হয়েছে। যা আপনারা সবাই জানেন। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের পক্ষ থেকে এবং কিছু অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা বিএনএম এ যোগ দিতে আমাকে অনেকবার অনুরোধ করেছেন। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত বন্ধুরা কয়েকবার আমার বাসায় এসেছেন। আমি প্রত্যেকবার বলেছি যে, না এ ধরনের কোন চিন্তা ভাবনা আমার মধ্যে নেই। আমি রাজি হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি দেশ সেরা ক্রিকেটার। বিশ্বখ্যাত অলরাউন্ডার। সাকিব আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করে। তাকে বিএনএম এর দুজন নেতা আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি বলেছি- রাজনীতি করা তোমার বিষয়। তুমি এখনো খেলাধুলা করছো, রাজনীতি করবে কিনা চিন্তাভাবনা করে দেখ। আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। এ ঘটনা নির্বাচনের চার-পাঁচ মাস আগে হবে। যা হোক, যখন ক্ষমতাসীনদের চাপ বাড়তে লাগলো, এমনকি তৎকালিন তথ্যমন্ত্রী ঘোষণাই দিয়ে দিলেন হাফিজ সাহেব শীঘ্রই নতুন দল গঠন করবেন এবং নির্বাচনে যাবেন। তার পরের দিনই নির্বাচনের দুই মাস আগে আমি একটা সংবাদ সম্মেলন করি। সেখানে সবকিছুই বলেছি।’
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সাকিব আল হাসান ও আমার একটি ছবি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এটি নিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে কয়েকটি সংবাদপত্র নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশ করছে। আমি সামান্য ব্যক্তি। তারপরও ৩৭ বছর ধরে রাজনীতি করছি। দুইবার মন্ত্রী ও ৬ বার এমপি ছিলাম। ওইসব সংবাদে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা লক্ষ্য করছি। দলের নেতাকর্মীরাও এতে বিচলিত হন। জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে এসব করা হয়েছে। আমি এমন কিছু করিনি যার জন্য লজ্জ্বিত হতে হবে।’