আপনি যা খাবেন
তাই আপনার স্বাস্থ্যে প্রতিফলিত হবে। এবং আর যে কোনো অঙ্গের মতোই কিডনির সুরক্ষায়ও
বিশেষ কিছু খাবার দরকার হয়। স্বাস্থ্যবান হৃদপিণ্ডের মতোই একটি স্বাস্থ্যবান কিডনি
থাকাটাও জরুরি। কিডনিদের প্রধান কাজ হলো দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়া। এবং ক্ষতিকর
টক্সিন বা বিষ অপসারণের মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া। এছাড়াও কিডনি
ইলেকট্রোলাইটস এবং অন্যান্য তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গকে
সুস্থ রাখার জন্য সঠিক কিডনির জন্য উপকারী খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। এখানে রইল এমন নয় খাদ্যের
তালিকা যেগুলো কিডনির সুরক্ষায় নিয়মিত খেতে হবে।
১. সবুজ শাকসবজি
নিয়মিত সবুজ
শাকসবজি খেতে হবে। বেশিরভাগ শাকসবজিতে ভিটামিন সি, কে, ফাইবার ও ফলিক এসিড থাকে। এগুলো
রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিডনি জটিলতা কমায়।
২. ক্যানবেরি
জুস
চেরির মতো ক্যানবেরিতেও
রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা
বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রথলির সংক্রমণ
কমে যায়। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে
যায়।
৩. হলুদ
এলার্জি থেকে
ত্বককে রক্ষা করা ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কিডনির রক্ষাও করে হলুদ। নিয়মিত
হলুদ খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। সেই সঙ্গে কিডনিও পরিষ্কার হয়। এতে থাকা কারকুমিনে
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান কিডনি রোগ ও পাথর জমা হওয়া রোধ করে।
৪. আপেল
প্রচলিত আছে
'প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন'। কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল
উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদ
রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। আপেল কাঁচা বা রান্না
করে অথবা প্রতিদিন এক গ্লাস আপেলের জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৫. রসুন
রসুন ইনফ্লেমেটোরি
এবং কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকরী। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা দেহের
প্রদাহ দূর করে থাকে। তবে রান্না করে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় না। ভাল
হয় সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া, এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও ভাল
রাখে।
৬. ড্যান্ডেলিয়ন
এটি হলো একধরনের
বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এর মূল এবং পাতা শুকিয়ে চা বানিয়ে খেতে হয়। প্রস্রাবের পরিমাণ
বাড়ায় এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। এ ছাড়া পেটে স্ফীতি কমায়। এটি
প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৭. অলিভ অয়েল
একটি গবেষণায়
দেখা গিয়েছে প্রতিদিনের রান্নায় অন্যান্য তেলের চেয়ে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা বেশি
স্বাস্থ্যকর। এতে অলিক এসিড, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড আছে যা কিডনি সুস্থ
রাখার পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
৮. লেবুর শরবত
প্রতিদিন লেবু
মেশানো জল খেলেও কিডনি পরিষ্কার হয়। লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া
পাথর ভাঙ্গতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের
পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।
৯. আদা
কিডনিকে আরও
কার্যকরী করতে আদা খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কিডনিকে ভাল রাখতে আদা গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। আদা কিডনিতে রক্তের চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সচল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য
করে। এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। যদি নিয়মিত কাঁচা আদা, আদার গুড়া
কিংবা জুস করে খাওয়া যায় তাহলে তা কিডনি পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে।