কেউ বলেন, বিয়ের
বয়স হয়ে গেল। এর পরে দেরি হয়ে যাবে। কেউ আবার বলেন, বিয়ের কোনও বয়স হয় না। আর এ সব
নিয়েই চলতে থাকে তর্ক। কেউ বিয়ে করেন ২৫ বছর বয়সে, কেউ আবার বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেও অপেক্ষা
করেন মনের মতো সঙ্গীর জন্য। কিন্তু অপেক্ষা করলেই যেন বিপদ। বয়স যত বাড়তে থাকে, সমাজের
মাথাব্যথাও বাড়ে। মহিলাদের নিয়ে সমাজের মাথাব্যথাটা বোধ হয় একটু হলেও বেশি।
ইদানীং অনেক মেয়েই
পড়াশোনা ও পেশাগত কারণে একটু বেশি বয়সে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তবে হয়তো কিছু
কিছু সমস্যা দেখা যায়। জানেন সেগুলি কী।
১) সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়ার সমস্যা
দীর্ঘ সময়ে স্বনির্ভর
এবং নিজের মতো জীবন কাটানোর পর মেয়েরা যখন বেশি বয়সে দাম্পত্য জীবনে প্রবেশ করছেন,
তখন অনেকের ক্ষেত্রেই মানিয়ে নিতে বেশ সমস্যা হয়। সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়ার অভাবে দাম্পত্য-কলহ
লেগেই থাকে। তবে যাঁরা এটা সমস্যা বলে মনে করতে চান, তাঁদের জন্য অবশ্যই সমস্যা। আবার
যাঁরা মনে করেন, নিজের কথা স্পষ্ট করে বলা, যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খোলাখুলি মত
প্রকাশ করে মেয়েদের অধিকার, তা হলে হয়তো নারীর ব্যক্তি-স্বাধীনতা ততটা সমস্যার নয়।
স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে যদি যথেষ্ট ভালবাসা এবং সম্মান থাকে, তা হলে এই সমস্যা খুব
একটা হওয়ার কথা নয়।
২) অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা
বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়। তার উপর কর্মব্যস্ত জীবনে বেড়ে চলা মানসিক
চাপ, জীবনযাত্রায় অনিয়ম, শরীরে বিভিন্ন রোগের হানা— ইত্যাদি নানা
কারণে সন্তানধারণের ক্ষমতা আরও কমতে যায়। তাই ইদানীং আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানধারণের
চল বেশ বেড়েছে। তবে এই পদ্ধতি বেশ খরচসাপেক্ষ। আর আইভিএফ পদ্ধতি আপনার শরীরে সফল না-ও
হতে পারে। এই পদ্ধতিতে মহিলাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, ফলে শরীর বেশ দুর্বল
হয় পড়ে। তবে বলে রাখা ভাল, আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে অনেক কিছুই সম্ভব। অনেক মেয়ে
এখন নিজেদের ডিম্বাণু সংরক্ষণের পথেও হাঁটেন।
৩) শারীরিক মিলনের ক্ষেত্রে সমস্যা
দাম্পত্য জীবনে
যৌনসুখ কিন্তু ভীষণ জরুরি। বয়স বাড়লে যৌনতার প্রতি ঝোঁক কমে। অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রেই
৪০-৪৫ বছরেই ঋতুবন্ধ হয়ে যায়। তার পর শারীরিক মিলনের প্রতি অনীহাও জাগে। তবে ঋতুবন্ধ
হওয়া মানেই যৌনজীবনের ইতি নয়। প্রয়োজন পড়লে কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে ঋতুবন্ধের পরও যথেষ্ট
সক্রিয় এবং উপভোগ্য যৌনজীবন হতে পারে যে কোনও নারীরই।
সমাজের চোখরাঙানিতে
নয়, নিজের ভাল-মন্দ বুঝেই বিয়ের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাড়াহুড়ো করে পারিপার্শ্বিক
চাপে পড়ে নয়, নিজের বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে বিয়ে করার কথা ভাবুন। একটু দেরিতে বিয়ে
করার সমস্যা যেমন রয়েছে, রয়েছে অনেক সুবিধাও। তাই মন থেকে সায় পেলে তবেই বিয়ের কথা
ভাবুন।