প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার ইন্দেরহাট, মিয়ারহাট বন্দরের কালীবাড়ী খালে জমে উঠছে গ্রীস্মকালীন মৌসুমী ফল তরমুজের ভাসমান হাট। তরমুজের এ ভাসমান হাটটি এখন ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত।
দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরের উপকুলীয় এলাকা কলাপাড়া, খেপুপাড়া, পাথরঘাটা, বামনা, কুয়াকাটা, রাংগাবালি, কালাইয়া, বিশ্বাসের চর, চরফ্যাশন, গোলখালী, চেংরাতলা, তালতলী, গলাচিপা, গাজীপুর, সোনাখালী, ধানখালী, বাদুরা, কুকুয়া, বাংলাবাজার, নলুয়াবাগি, ও মঠবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ হয়। ওই সব এলাকা থেকে সেখানকার এবং স্বরূপকাঠি, নাজিরপুর ও বানারীপাড়া উপজেলার অনেক ব্যবসায়ী এ মৌসুমে ওই সকল অঞ্চল থেকে ক্ষেতমুলে তরমুজ কিনে এনে এ ভাসমান হাটে বিক্রি করে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা এ মোকাম থেকে তরমুজ ক্রয় করে কাভার্টভ্যান, ট্রাক, লঞ্চ, ট্রলারযোগে রাজধানী ঢাকা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান করে। অপরদিকে এ মৌসুমে এখানকার এক শ্রেণির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও এ ভাসমান হাট থেকে পাইকারি দরে তরমুজ কিনে ভ্যানে এবং নৌকায় করে স্থানীয় বিভিন্ন হাট বাজারসহ গাঁও গ্রামে বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে।
আরও
পড়ুন: বোরো আবাদে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে কৃষি কর্মকর্তাগণের মাঠ পরিদর্শন
সপ্তাহের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এই দুইদিন ওই খালে তরমুজের ভাসমান হাট বসে। ইন্দেরহাট-মিয়ারহাট বন্দরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালীবাড়ী খালে তরমুজের ভাসমান হাটে গিয়ে দেখা যায় ট্রলারে ট্রলারে বিভিন্ন জাতের ছোট বড় সাইজের তরমুজের পসরা সাজিয়ে বেচাকেনা করছেন ব্যবসায়ীরা। ট্রলারে ট্রলারে চলছে ক্রেতা বিক্রেতার দর কষাকষি। বর্তমানে ওই হাটে একশত বড় সাইজের তরমুজ ২০-২২ হাজার টাকা, মাঝারী সাইজের ১২-১৪ হাজার টাকা এরপরের সাইজ অনুযায়ী ৬-৭ হাজার টাকা থেকে ৩-৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাটে কথা হয় চাষী, ব্যবসায়ী ও পাইকারদের সাথে। ভোলার তরমুজ চাষী ইসমাইল হোসেন জানান, এ বছর ফলন ভালো হইছে সাইজও বেশ ভালো। কিন্তু অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে অনেক তরমুজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের দাম কম বলে জানান মঠবাড়িয়া এলাকার চাষী আব্দুল লতিফ। হাটে আসা দুরাগত ব্যবসায়ী সিলেটের সঞ্জয় পাল জানান এখানকার তরমুজের সুনাম রয়েছে তার এলাকায় তিনি প্রতিবছর ভাসমান এ হাট থেকে তরমুজ ক্রয় করে ট্রাকযোগে সিলেটে নিয়ে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। ব্যবসায়ী সুত্র জানায়, বর্তমানে সপ্তাহে প্রতিহাটে প্রায় কোটি টাকার তরমুজ পাইকারি ভাবে বিক্রি হয়।