চলমান করোনা মহামারিতে
বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত
রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় দুই
হাজার মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৬ লাখে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির
তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্য। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে জার্মানি, কানাডা,
ব্রাজিল, ফিনল্যান্ড, ইতালি ও রাশিয়া। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে
৫১ কোটি ৯৬ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬২ লাখ ৮৪ হাজার।
শুক্রভার (১৩
মে) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস
থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা
গেছেন ১ হাজার ৯৩৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে চার শতাধিক।
এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬২ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৪ জনে।
একই সময়ের মধ্যে
ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯২ হাজার ৯৫৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায়
নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২২ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত
ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ কোটি ৯৬ লাখ ৪৩ হাজার ২৮২ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে
নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৬৫২ জন এবং মারা গেছেন ১৭৯ জন। করোনা
মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৫৬ লাখ ৬৫ হাজার ৯১০ জন
করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬২৮ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক
প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্য। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে দেশটিতে করোনায়
আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮৪ জন এবং নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার
৪৫৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ২১ লাখ ৫৯ হাজার ৬১৫
জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৬ হাজার ৭০৮ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ৯০০ জন এবং মারা গেছেন
২০৭ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮ কোটি ৪০ লাখ ৫৪
হাজার ৬৩৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৪ জন মারা গেছেন।
ফ্রান্সে নতুন
করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ হাজার ৪৭ জন এবং মারা গেছেন ৮৪ জন। করোনা মহামারির
শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন
এবং ১ লাখ ৪৭ হাজার ১৫৯ জন মারা গেছেন। একইসময়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় নতুন করে করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৯২০ জন এবং মারা গেছেন ২১ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪
ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১১ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন
৪ হাজার ৬৫ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
১ কোটি ৮২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩৫৯ জনের। একইসময়ে
থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ১৯ জন এবং মারা গেছেন ৫৯
জন।
গত ২৪ ঘণ্টায়
দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৮৮৩ জন এবং মারা গেছেন
৬৩ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৬ লাখ
৯৪ হাজার ৬৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ২৩ হাজার ৫৫৪ জন মারা গেছেন। গত একদিনে
ফিনল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৯৭৩ জন এবং মারা গেছেন
১৩৪ জন।
ইতালিতে নতুন
করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ হাজার ৩১৭ জন এবং মারা গেছেন ১৩০ জন। করোনা মহামারির
শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮৪ জন করোনায় আক্রান্ত
হয়েছেন এবং ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৭৬ জন মারা গেছেন। একইসময়ে জাপানে নতুন করে করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৪০ জন এবং মারা গেছেন ৪১ জন।
লাতিন আমেরিকার
দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে
রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩৬ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত
হয়েছেন ২১ হাজার ৩৪৪ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত
রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬ লাখ ৩৯ হাজার ১২৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৭০০ জনের।
করোনায় আক্রান্তের
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের
সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত
হয়েছেন ৩ হাজার ১৮৭ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন
৪ কোটি ৩১ লাখ ১৬ হাজার ৬০০ জন এবং মারা গেছেন ৫ লাখ ২৪ হাজার ১৮১ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায়
অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৩১৪ জন এবং মারা গেছেন
৫৫ জন। একই সময়ে কানাডায় নতুন করে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৮৬৫ জন এবং মারা
গেছেন ১৭৭ জন। গ্রিসে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৭৮২ জন এবং মারা গেছেন
২০ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯
সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০
সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর
আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।