কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে 'শিক্ষকদের হেনস্তা ও হুমকি-ধমকির' অভিযোগে দুইজন কর্মকর্তা ও সাতজন 'সাবেক শিক্ষার্থীর' নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতি সভাপতি ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় এ অভিযোগ করেন তারা।
অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. দেলোয়ার হোসেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে চাকরির আবেদন করা ও ছাত্রলীগের পদপ্রার্থীরা হলেন মো. ইমরান হোসাইন, অনুপম দাস বাধন, রকিবুল হাসান রকি, আমিনুর রহমান, ইমাম হোসাইন মাসুম, রাকিব, জাহিদুল ইসলাম সহ অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ৩০ জনের নামে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বিকাল ৪ টায় নবনির্বাচিত শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীরা উপাচার্যের সাথে দেখা করতে গেলে জাকির হোসেন ও ইমরান হোসাইনের নেতৃত্বে কয়েকজনকে নিয়ে শিক্ষকদের কে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত ও হেনস্তা করার চেষ্টা করে। এসময় তারা আমাদের সাথে মারমুখী আচরণ শুরু করে এবং প্রাণনাশমূলক হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন শুরু করে। একপর্যায়ে জাকির উপাচার্যের উপস্থিতিতে শিক্ষকদের "থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব" বলে হুমকি দেয়। তখন উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির কাছে নিরাপত্তা চাইলে আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, উপাচার্য আমাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করেই নিজ বাসভবনে চলে যান। বর্তমানে আমি সহ আমাদের শিক্ষকগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি। ভবিষ্যতে আমাদের যেকোনো সময় ক্ষতিসাধন করার আশঙ্কা করছি। বিষয়টি উপস্থিত শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করে শিক্ষকদের স্বাক্ষর সহ থানায় সাধারণ ডায়েরি করলাম।
এসময় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক থানায় উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত শিক্ষকদের স্বাক্ষরসহ সংযুক্তি দিয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় অভিযোগের বিষয়ে ড. আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যদি আমরা নিরাপদ না থাকি, তাহলে আমরা অবশ্যই রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চাইবো। প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারে নাই। উপাচার্যের কাছে আমরা নিরাপত্তা চেয়েও আমরা নিরাপত্তা পাইনি এবং প্রক্টরিয়াল বডিও আমাদের নিরাপত্তা দেয়নি। এখন আমাদের শিক্ষকেরা নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এজন্য আমরা রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছি।
জিডির বিষয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।
এদিকে শিক্ষকদের নিরাপত্তার বিষয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলতে চাইলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৯ ফেব্রুয়াবি) বিকাল সাড়ে ৪টায় নবনির্বাচিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের সাথে দেখা করতে গেলে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল বডির সামনেই উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিপ্রার্থী সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছে লাঞ্ছনার শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।