সৈকত শহর কক্সবাজারে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী
পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালের আয়োজন করছে জেলা প্রশাসন। তাই ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩
অক্টোবর পর্যন্ত এই উৎসব ঘিরে থাকছে নানা আয়োজন।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই উৎসবে মাতোয়ারা থাকবে কক্সবাজার। এরই মধ্যে হোটেল-মোটেল-রিসোর্টে
৬০ থেকে ৫০ শতাংশ এবং রেস্তোঁরায় ১৫ শতাংশ ও কক্সবাজারগামী বিমান ও দূরপাল্লার বাস
কর্তৃপক্ষ মূল্যছাড়সহ বিশেষ সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে।
পর্যটকদের আনন্দ দিতে এবং কক্সবাজারের পরিচিতি বিশ্বের কাছে বাড়াতে এই পর্যটন মেলা
ও বীচ কার্নিভালের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তাদের দেয়া তথ্য মতে, সপ্তাহব্যাপী
আয়োজনের আগে আগামী বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় উন্মোচন হবে থিম সং।
আরও জানা যায়, ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিনই সকাল ১০টায়
থেকে ঘন্টাব্যাপী চলবে সৈকত এলাকা পরিচ্ছন্নতার অভিযান। ২৫ সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত
হবে শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা। ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় সৈকতের লাবনী
পয়েন্ট হতে শুরু হয়ে সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে পুনরায় লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত থাকছে বর্ণাঢ্য
র্যালি। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করা হবে পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল। সকাল ৯টা
৪০ মিনিটে থাকছে বৃক্ষরোপণ ও আলোচনা সভা। আর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ ঘাট
হতে মহেশখালী জেটি পর্যন্ত চলবে নৌ র্যালি।
এ ছাড়া প্রতিদিনই থাকবে নানা আয়োজন। এসবের মধ্যে রয়েছে সার্কাস প্রদর্শনী, বীচ
বাইক র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে শো, আতশবাজি, রোড শো, সেমিনার, ঘুড়ি উৎসব,
ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, ফানুস উৎসব, সার্ফিং প্রদর্শনী,
বীচ ম্যারাথন, বীচ ভলিবল, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান, কনসার্ট ইত্যাদি।
সরেজমিনে সৈকতের লাবনীর পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, জোরেশোরে চলছে পর্যটন মেলা আয়োজনের
প্রস্তুতি। লাবণী পয়েন্টের হোটেল কল্লোল প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে ট্যুরিস্ট পুলিশের
গেইট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে তৈরি করা হচ্ছে স্টল। পর্যটন মেলাকে দর্শনার্থীদের কাছে
আকর্ষণীয় করতে ২০০টির মতো স্টল স্থাপন করা হচ্ছে।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, মেলায় পর্যটন বিষয়ক
রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন, ক্ষুদ্র-নৃ-তাত্ত্বিক উৎসবসহ নানা আয়োজন থাকছে। বিভিন্ন
অনুষ্ঠানে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় মানের তারকা শিল্পীরা অংশ নেবেন।
হোটেল কক্স-টুডে’র ব্যবস্থাপক আবুল তালেব শাহ বলেন, পর্যটন মেলা
ও বীচ কার্নিভাল উপলক্ষে ৫০ শতাংশ বিশেষ ছাড়ে রুমে পাবেন পর্যটকরা। আর রেস্তোঁরায় ১০
শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে। এই বিশেষ ছাড় আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত থাকবে।
কক্সবাজার জেলা রেস্তোঁরা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন,
জেলা রেস্তোঁরা মালিক সমিতির আওতাধীন ১১০টি রেস্তোঁরা রয়েছে। মেলা উপলক্ষে এসব রেস্তোঁরা
১৫ শতাংশ বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কোন ব্যবসায়ী যদি ঘোষিত ১৫ শতাংশ না দেন, তাহলে
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বিশ্ব
পর্যটন দিবসকে উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনের জন্য প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, বিশ্বের বুকে দীর্ঘতম
সমুদ্র সৈকতকে তুলে ধরতে ও কক্সবাজারকে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে
গড়ে তুলতে এই আয়োজন করা হচ্ছে।