বছর ঘুরে ত্যাগের
মহিমা নিয়ে এলো পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহর
সন্তুষ্টির জন্য এদিন মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী কুরবানি দিয়ে থাকেন। কুরবানির মাংস
সঠিক নিয়মে বিতরণের পর অতিথিদের আপ্যায়ন, নিজেদের খাওয়া-দাওয়ার পর যে মাংসটা থেকে যায়
সেটা তাজা ও টাটকা রাখাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা তখনই সম্ভব হয় যখন মাংসটা সঠিকভাবে
সংরক্ষণ করা যাবে।
তবে সঠিকভাবে
কুরবানির মাংস সংরক্ষণের জন্য মানতে হবে কিছু নিয়ম। তাহলেই ভালো থাকবে মাংস।
জ্বাল দিয়ে সংরক্ষণ
আগে যখন ঘরে
ঘরে ফ্রিজ ছিল না, তখন বড় বড় পাতিলে জ্বাল দিয়ে রাখা হতো কুরবানির মাংস। লবণ ও হলুদ
দিয়ে জ্বাল দেওয়া সেই মাংসও আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে দেড় থেকে দুইমাস ভালো থাকে। তবে
প্রতিদিন নিয়ম করে আবহাওয়া বুঝে এক থেকে দুইবার জ্বালাতে হবে সেই মাংস।
ফ্রিজারে সংরক্ষণ
অবশ্য বর্তমানে
প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল অনেকের বাসায় ফ্রিজার কিংবা রেফ্রিজারেটর আছে। তাই মাংস সংরক্ষণের
ঝক্কি এখন অনেকটাই কমেছে। তবে প্রশ্ন উঠতে পারে ফ্রিজে কতদিন ভালো থাকে মাংস?
মার্কিন খাদ্য
এবং ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) তালিকা অনুযায়ী, কাঁচা মাংস ফ্রিজারে ছয় মাস থেকে এক বছর
পর্যন্ত ভালো থাকে। এই সময়ের মধ্যে মাংসের পুষ্টিগুণে খুব একটা হেরফের হয় না। তবে এর
চেয়ে বেশি সময় মাংস সংরক্ষণ করলে পুষ্টিগুণ আর স্বাদ-দুইই কমে যেতে পারে।
তবে ফ্রিজারে
মাংস সংরক্ষণের সময় সংরক্ষণের পদ্ধতি এবং ফ্রিজারের তাপমাত্রার বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত।
সংরক্ষণের আগে মাংস ধুয়ে পানি ঝড়িয়ে জিপলক বায়ুরোধক ব্যাগে ভরে রাখা উচিত।
এছাড়া ফ্রিজের
তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি ফারেনহাইট বা মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখা উচিত
বলে জানিয়েছে এফডিএ। এই তাপমাত্রায় মাংসের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ইস্টসহ জীবাণুগুলো
নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
রান্না করে সংরক্ষণ
বর্তমানের ব্যস্ত
জীবনে অনেকেই একবারে রান্না করে ফ্রিজে মাংস রেখে দিতে চান। রান্না করা মাংস ফ্রিজে
রাখতে হলে পৃথক পৃথক পাত্রে রাখতে হবে। যখন প্রয়োজন হবে তখন একটি পাত্র বের করলেই চলবে।
শুটকি করে সংরক্ষণ
মাছের মতো কিন্তু
মাংসও শুঁটকি করে সংরক্ষণ করা যায়। গ্রামাঞ্চলে মাংস ধুয়ে হলুদ মেখে শুকিয়ে সংরক্ষণ
করা হয়। অনেকটা শুঁটকি মাছের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। রান্না করা মাংস ফ্রিজে দুই-তিন
দিন এবং ডিপ ফ্রিজে দুই-তিন মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।
মাংসের আচার
আম, জলপাই কিংবা
বড়ইয়ের মতো মাংসেও আচার তৈরি করে সংরক্ষণ করা যায়। হাড়-চর্বি ছাড়া মাংস ছোট ছোট করে
কেটে আচার বানিয়ে ফ্রিজের বাইরেও সংরক্ষণ করা যায় বছর খানেক।