আজঃ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

কুষ্টিয়ায় শুরু হলো দুই দিনব্যাপী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২2 | হালনাগাদ:শুক্রবার ০২ সেপ্টেম্বর 2০২2 | অনলাইন সংস্করণ
Image

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদে দুই দিনব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পর আয়োজিত এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে গড়াই নদের তীরে লাখো মানুষের ঢল নামে। শুধু কুষ্টিয়া শহরই নয় দূরদূরান্ত থেকেও দল বেধে শিশু নারী পুরুষসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই  প্রতিযোগিতা দেখতে গড়াই নদের তীরে ভিড় জমান।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুমারখালী উপজেলার কয়া এবং শহরের ঘোড়া ঘাট এলাকায় গড়াই নদে এই বাইচ প্রতিযোগীতার উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রশাসক হাজী রবিউল ইসলাম। কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এ খেলায় ঢাক-ঢোলের তালে তালে নদীতে নামানো হয় বেশকিছু নৌকা আর লাল, নীল, হলুদ পোষাকে রঙ্গিন হয়ে ওঠে নৌকা চালকরা। প্রতিযোগিতার মূহূর্তে নদীরে দুই ধারে লাখো নারী পুরুষ বিভিন্ন স্লোগান আর হাতে তালি দিয়ে আনন্দ উল্লাসে নৌকা চালকদের উৎসাহ প্রদান করে।

প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মাঝিসহ ১২টি দল অংশগ্রহণ করেন। শুক্রবার বিকেলে থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা শেষ হবে শনিবার। প্রতিযোগিতায় ১ম, ২য় এবং ৩য় স্থান অধিকারীদের জন্য পুরস্কার হিসেবে তিনটি আলাদা ব্যান্ডের মোটরসাইকেল দেওয়া হবে।

দুই দিন ব্যাপী এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপলক্ষে গড়াই নদীর তীরবর্তী দুই পাড়ে বসেছে গ্রামীন মেলা। অসংখ্য দোকান পাট ও শিশুদের বিনোদন জন্য নাগর দোলা, মিনি রেল, ডিজিটাল নৌকা ভ্রমন থেকে শুরু করে হরেক রকমের পন্যের সমাহার সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা । দুই পাড়ের মানুষের মনে যেন বইছে অন্য রকম এক আনন্দের বন্যা। নৌকা বাইচের উৎসব মুখর পরিবেশ নিশ্চিতসহ বাইচকে কেন্দ্র করে যে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।

এ বিষয়ে কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মোঃ আলী হোসেন বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ নৌকা বাইচ উপভোগ করতে গড়াই পাড়ে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটেছে। বিজয়ের লক্ষে বাইচের নৌকার মাঝি মাল্লাদের দুর্বার গতিতে ছন্দময় বৈঠা চালনায় মেতে ওঠবে গড়াই ও তার দু-কুলের মানুষ। অভূতপূর্ব এই দৃশ্যপট পুলকিত করছে হাজারো দর্শকদের।


আরও খবর



শাহবাগ থানার ভেতরে পরিত্যক্ত গাড়িতে আগুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর শাহবাগ থানার ডাম্পিং স্টেশনে পরিত্যক্ত গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডাম্পিং স্টেশনের পেছন সাইডে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে তিনটি ইউনিট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।


আরও খবর



বেইলি রোডের ভবনে ফায়ার এক্সিট না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ

প্রকাশিত:শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বেইলি রোডের ভবনে ফায়ার এক্সিট না থাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, সেখানে কোন ফায়ার এক্সিট নেই। আমাদের যারা আর্কিটেক্ট তাদের সব সময় অনুরোধ করি, আপনারা যখন ঘরবাড়ি তৈরি করেন, একটু খোলা বারান্দা, ফায়ার এক্সিট বা ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু আর্কিটেক্টরা ওরকম ডিজাইন ঠিক মতো করে না। আবার মালিকরাও এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে চায় না।

আজ ১ মার্চ শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবস ২০২৪ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন। এসময় তিনি রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে?

বীমার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মাসটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই মাসে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি, এই মাসেই জন্ম নেন আমাদের মহান নেতা। ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস ঘোষণা করা হয়েছে, এটি আমাদের জন্য স্বরণীয় একটি বিষয়। বীমা আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের জীবনের বিভিন্ন ঝুকি এড়াতে এই বীমা সহযোগিতা করে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী ২টি গ্রুপে রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। এবছর ২টি লাইফ ও নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বীমা ব্যবসার বিকাশে অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সম্মানসূচক ক্রেস্ট পেয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্তরা পরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ফটো সেশনেও অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ, আইডিআরএর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বীমা খাতের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

এই কর্মসূচি থেকে প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক বীমা সেবারও উদ্বোধন করেন যা সরাসরি ব্যাংক থেকে বীমার প্রিমিয়াম প্রদানের সুবিধা প্রদান করে। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। এই বছর বীমা দিবসের প্রতিপাদ্য করবো বীমা গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। তাই প্রতিবছর ১লা মার্চ জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালিত হয়। সরকার পরবর্তী সময়ে দেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মরণে জাতীয় বীমা দিবসকে বি ক্যাটাগরি থেকে ক্যাটাগরিতে উন্নীত করে।


আরও খবর



বেইলি রোডে আগুন

স্বপরিবারে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল নিহত পাঁচ জনের

প্রকাশিত:শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ রাসেল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

Image

পরিবারকে ইতালি নিয়ে যেতে বাংলাদেশে এসেছিলেন সৈয়দ আবুল মোবারক কাউছার (৫০)। ছেলের অনুরোধে কাচ্চি খেতে পরিবারকে নিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডে কাচ্ছি ভাই রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। হঠাৎ লাগা আগুনে পুড়ে পরিবারটির পাঁচ সদস্যের মৃত্যু হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে লাগা আগুনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের খন্দকার পাড়ার সৈয়দ আবুল মোবারক কাইছার তার (৫০), তার স্ত্রী স্বপ্না (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা তাসফিয়া (১৫) ও সৈয়দা নুর এবং ছেলে সৈয়দ আবদুল্লাহ (৭)।

নিহত আবুল মোবারকের প্রতিবেশী চাচাত ভাই সিপন মিয়া ও খালাত ভাই আতিকুর রহমান বাদল জানান, সৈয়দ আবুল মোবারক কাউছার ইতালি প্রবাসী। তার পরিবারের সবাইকে ইতালি নেওয়ার জন্য দেশে এসেছিলেন। গতকালই ভিসা পেয়েছিলেন। আগামী ২২ মার্চ স্বপরিবারে তাদের ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। ১ মাস আগে দেশে এসেছিলেন কাউছার। রাজধানীর হাতিরঝিলে তাদের ফ্লাট আছে। সে ফ্লাটে থেকে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করাতেন। এক সপ্তাহ আগে ছেলে আবদুল্লাহর খাতনা করানো হয়। ছেলের অনুরোধে কাচ্চি খেতে স্বপরিবারে রাজধানীর বেইলি রোডে কাচ্ছি ভাই রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন তারা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পাঁচ জনই নিহত হন। এ ঘটনায় আবুল মোবারকের মা হেলেনা বেগম (৮৫) কান্না ছাড়া কিছুই বলতে পারছে না।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর খন্দকার পাড়া নিহতদের বাড়িতে আসে লাশবাহী গাড়ি। গাড়ি বাড়িতে আসার পরই এলাকায় শুরু হয় স্বজনদের আহাজারি।

আজ আসর নামাজের পর নিহতদের জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


আরও খবর



বুয়েটে ভর্তির পরীক্ষার ফল প্রকাশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে বুয়েটের ওয়েবসাইটে ভর্তি পরীক্ষার এ ফল প্রকাশ করা হয়।

বুয়েটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কমিটির সভাপতি ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জীবন পোদ্দার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গত ৯ মার্চ বুয়েটের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মূল ভর্তি পরীক্ষা লিখিত আকারে বুয়েট ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। প্রকৌশল বিভাগগুলো ও নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মডিউল-এ এবং প্রকৌশল বিভাগ সমূহ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ ও স্থাপত্য বিভাগ এর জন্য মডিউল-বি দুই শিফটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম শিফটে মডিউল- সকাল ১০টা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এই শিফটে গ্রুপের জন্য গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় শিফটে মডিউল-বি বেলা ২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। এই শিফটে গ্রুপের জন্য উন্মুক্ত পাঠ্যসূচিতে মুক্তহস্ত অঙ্কন এবং দৃষ্টিগত ও স্থানিক ধীশক্তি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা প্রাক-নির্বাচনি ও মূল ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বাছাইকৃত সব সঠিক আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ৪৪৩ জন শিক্ষার্থী গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।

বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার ফল দেখতে ক্লিক করুন এখানে।


আরও খবর



উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৬ সদস্যের দুর্ধর্ষ ‘কিলার গ্রুপ’

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা হয় ১৬ সদস্যের দুর্ধর্ষ কিলার গ্রুপ। যারা ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং, অপহরণ, মাদক ও অস্ত্র সরবরাহ করত। একই সঙ্গে অর্থ সংগ্রহের পাশাপাশি বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জামও নানা উপায়ে সংগ্রহ করত। যা দিয়ে নাশকতার পাশাপাশি পুরো ক্যাম্পের অপরাধ কার্যক্রম চালানো হতো।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে অভিযান চালিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্প থেকে বাংলাদেশে আরসার প্রধান কমান্ডার করিম উল্লাহসহ ৪ জনকে গ্রেফতারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। এসময় উদ্ধার করা হয়েছে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি এলজি, ৭টি ককটেল, ৫ রাউন্ড এ্যামুনিশন এবং ১২ বোর ১ রাউন্ড গুলি।

উখিয়ার ঘোনারপাড়াস্থ ২০ নম্বর বর্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৫ নম্বর ব্লকে অভিযানে গ্রেফতারের মধ্যে রয়েছে বালুখালীর ২০ নম্বর ক্যাম্পের হোসেন আহমেদের ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশে আরসার প্রধান কমান্ডার ও অর্থ বিভাগের প্রধান মো. করিম উল্লাহ প্রকাশ মাস্টার কলিম উল্লাহ (৩২), কুতুপালং এর ৭ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মো. কায়সারের ছেলে আরসা প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনির অন্যতম দেহরক্ষী মো. আকিজ (২৭), ১৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হোসেনের ছেলে আরসার অর্থ বিভাগের সহযোগী মোহাম্মদ জুবায়ের (২৯), ২২ নম্বর ক্যাম্পের মৃত হাসমত উল্লাহর ছেলে আরসার গান গ্রুপের সদস্য সাবের হোসেন প্রকাশ মৌলভী সাবের (৩৫)।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব ১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পে নাশকতার পরিকল্পনা করছে এমন সংবাদ পেয়ে উখিয়ার ২০ নম্বর ক্যাম্পে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। এসময় র‌্যাবের অবস্থান টের পেয়ে আরসা সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে চাইলে তাদেরকে ধাওয়া করে গ্রেফতার করা হয়। আর তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গুলি ও ককটেল।

তিনি জানান, গ্রেফতার আরসার এই ৪ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, অস্ত্র ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে হামলা করাসহ ৮টির অধিক মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা করে ৪ জনকে উখিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

মো. করিম উল্লাহ প্রকাশ মাস্টার কলিম উল্লাহর ব্যাপারে র‌্যাব অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গ্রেফতার মো. করিম উল্লাহ প্রকাশ মাস্টার কলিম উল্লাহ স্বপরিবারে ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় রাস্তার পাশে বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে স্বপরিবারে ক্যাম্প-১২ তে গিয়ে বসতি নির্মাণ করে অস্থায়ীভাবে বসবাস এবং সেখান থেকে ক্যাম্প-২০ এ স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তিনি ক্যাম্প-২০ এ বসবাসের সুবাদে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে ক্যাম্প-২০ এর আরসা জিম্মাদার মৌলভী ইয়াসিনের মাধ্যমে আরসায় যোগদান এবং আরসার সাথী সদস্য হিসেবে কাজ করতে থাকে। তিনি ২০২০ সালে পার্শ্ববর্তী দেশে আরসার প্রশিক্ষণ শেষ করে বাংলাদেশে পুনরায় প্রবেশের পর ক্যাম্প-২০ এর এম/৩৩ ব্লকের জিম্মাদার এবং আরসার হয়ে হত্যা ও চাঁদাবাজি সহকারে নানান ধরনের অপকর্মের ফলশ্রুতিতে তাকে ক্যাম্প-২০ এর হেড জিম্মাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে তিনি ক্যাম্পে আরসার সদস্য বৃদ্ধি সহকারে তার নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। তার নেতৃত্বে ১৬ সদস্যদের একটি অস্ত্রধারী গান গ্রুপ পরিচালনা করতো। আরসার অস্ত্রধারী গান গ্রুপের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তারকাটার বাইরে বাংলাদেশের পাহাড়ে অবস্থান করে থাকে। রাতের আঁধারে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘঠিত করে আরসা সন্ত্রাসীরা সকাল ৭/৮ টার আগেই ক্যাম্প ত্যাগ করে পুনরায় পাহাড়ে অবস্থান নিতো।

জিজ্ঞাসাবাদে মো. করিম উল্লাহ জানান, আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির নির্দেশে মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ টেকনাফের খারাংখালী এবং উনচিপ্রাং সীমান্ত হয়ে গ্রেফতার হওয়া মাস্টার কলিম উল্লাহর কাছে আসতো। পরবর্তীতে সকল ক্যাম্পের জন্য বরাদ্দকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ তিনি নিজেই আরসা ক্যাম্প কমান্ডারদের কাছে হস্তান্তর করতো। অতঃপর ক্যাম্প কমান্ডাররা অস্ত্র-গোলাবারুদ আরসা কিলার গ্রুপের মাঝে সরবরাহ করতো। এছাড়াও মাস্টার কলিম উল্লাহ বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে কক্সবাজারের মহেশখালী ও সদরের ভারুয়াখালী এলাকা এবং টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে দেশীয় অস্ত্র বিক্রেতাদের কাছ থেকে নগদ অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র-গোলাবারুদ ক্রয় করতো।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, মো. করিম উল্লাহ নানা কৌশল অবলম্বন করে মাইন ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে আরসার গোপন আস্তানা ও গহীন পাহাড়ে নিয়ে যেতো। পরবর্তীতে মাইন ও বিস্ফোরক তৈরির পারদর্শী আরসা সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন ধরনের মাইন, বোমা ও বিস্ফোরক তৈরি করতো। তৈরি করা এ সকল বিস্ফোরক রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বিভিন্ন স্থানে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহার করা হতো। মো. করিম উল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় ৮টি মামলা রয়েছে।

মো. আকিজের ব্যাপারে র‌্যাব অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গ্রেফতার মো. আকিজ ২০১৭ সালের প্রথম দিকে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে উনচিপ্রাং সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ এবং ক্যাম্প-৭ এ বসবাস শুরু করেন। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাঝে মধ্যে ক্যাম্পে বসবাস করতেন। তিনি আরসা প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনির অন্যতম দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেন। তাছাড়া তিনি আরসার অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আরসা প্রধানের পক্ষ থেকে বিশেষ যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করতো। পরবর্তীতে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চট্টগ্রামে বসবাসকালে তিনি আরসা নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতো এবং চট্টগ্রাম থেকে আরসার জন্য লজিস্টিক সামগ্রী সহকারে বিভিন্ন মালামাল পাঠাতো। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় ১টি মামলা রয়েছে।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, মোহাম্মদ জুবায়ের বাংলাদেশে আরসার প্রধান কমান্ডার ও অর্থ শাখার প্রধান মাস্টার কলিম উল্লাহ তার আপন চাচাতো ভাই। সেই সুবাদে মো. করিম উল্লাহর একান্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। এই সময়ে তিনি মাস্টার কলিম উল্লাহর নির্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি, অগ্নি সংযোগ সহকারে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে সরাসরি অংশগ্রহণ করতেন। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে কক্সবাজারের উখিয়া থানায় ১টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার সাবের হোসেন প্রকাশ মৌলভী ২০১৭ সালে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ক্যাম্প-২২ এ বসবাস করেন। এরপর ক্যাম্পের ইবনে আব্বাস মসজিদে ইমামতি শুরু করেন। তিনি আরসার নেট গ্রুপের সদস্য ছিলেন। তিনি আরসার সন্ত্রাসীদের পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করতো এবং আরসার সদস্যদের মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আরসার গান গ্রুপের ক্যাম্পে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতো বলেও জানায় র‌্যাব অধিনায়ক।

র‌্যাব জানায়, এখন পর্যন্ত র‌্যাব-১৫ সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সামরিক কমান্ডার, গান গ্রুপ কমান্ডার, অর্থ সম্পাদক, আরসা প্রধান আতাউল্লাহর একান্ত সহকারী ও নানা বিভাগের প্রধানসহ ১০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে ১০টি বিদেশি অস্ত্র, ৫২টি দেশীয় অস্ত্র, ১৪৪ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ৫০.২১ কেজি বিস্ফোরক, ২৮ টি ককটেল, ৪টি আইইডি, ১.৫ কেজি মার্কারী (পারদ) এবং ৪টি হাত বোমা উদ্ধার করা হয়।


আরও খবর