আইন অনুযায়ী লাইসেন্স না নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের এলসির (লেটার অব ক্রেডিট) মাধ্যমে বিদেশ থেকে মাদকদ্রব্য আমদানি করে বাজারজাত করছে। এতে একদিকে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে মাদকের অপব্যবহার বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া মাদকদ্রব্য আমদানির এলসি না খোলার জন্য ব্যাংকগুলোকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ নির্দেশনা দিয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে নিয়োজিত ডিলার ব্যাংকগুলোকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পারমিট, অনাপত্তি বা পূর্বানুমতি ছাড়া মাদকদ্রব্য আমদানির জন্য এলসি ইস্যু না করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ, মাদক-১ শাখা হতে ইস্যু করা নির্দেশনা অনুযায়ী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ২৬ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত-২০২০)-এর ১ম তফশিলে ‘ক’ ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আইনের ৯, ১০ ও ১১ ধারা অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ব্যতীত তপশিলে বর্ণিত মাদকদ্রব্যসমূহ আমদানি, সংরক্ষণ, ব্যবহার, গুদামজাতকরণ, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়, বিক্রয়, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন ও স্থানান্তরের কোনো সুযোগ নেই।
কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এলসির মাধ্যমে আইনের তফসিলভুক্ত মাদকদ্রব্য বিদেশ থেকে আমদানি করে বাজারজাত করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপর দিকে আমদানিকৃত মাদকদ্রব্যসমূহের বিভিন্নভাবে অপব্যবহার হচ্ছে।
এমন অবস্থায়, মাদকদ্রব্য স্থল, আকাশ বা সমুদ্রপথে আমদানির কারণে কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে তপশিলি ব্যাংক থেকে এলসি ইস্যু না করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধ করেছে অধিদপ্তর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স ছাড়া মাদকদ্রব্যের আমদানি এলসি না খোলার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।