মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গ্রামে
শিশু আদুরী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিন জনকে
ফাঁসি ও এক জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো.
সিদ্দিকুর রহমান সিং এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন রাজৈর পশ্চিম
স্বরমঙ্গল গ্রামের রফিক হাওলাদারের ছেলে রাজিব হাওলাদার (৪১), কোদালিয়া বাজিতপুরের
মুহিত গাছীর ছেলে রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছী (৩২) ও পিরোজপুর জেলার ভৈরমপুরের রফিকুল
ইসলাম মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম মোল্লা (৩১)। বিচারক মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের
৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।
এছাড়া মামলায় বাগেরহাট জেলার সেলিম হাওলাদারের
(৪১) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২০
সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে সেনদিয়া
জামে মসজিদে আরবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় টুকু সরদারের মেয়ে আদুরী আক্তার (৫)। নিহতের
বাবা টুকু সরদার বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ছয় জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত
আরও চার থেকে পাঁচ জনকে আসামি করে রাজৈর থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলা দায়েরের পরে ওই মসজিদের ইমাম শফিকুল
ইসলামকে রাজৈর থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তিনি পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার
করেন এবং তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মসজিদের পাশ থেকে আদুরী আক্তারের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
করা হয়। পরবর্তীতে মামলার চার আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে
জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। মামলার রায়ের দিন মামলার এক আসামি রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছী
আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের বাবা টুকু সরদার বলেন, রায়ে আমি
খুশি। সরকারের কাছে একটাই দাবি, ফাঁসির রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়।
মাদারীপুর পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর
রহমান সিং বলেন, ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদুরী নামে এক শিশুকে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দি
করে পুঁতে রাখা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মসজিদের ইমামকে গ্রেফতার করে।
তার দেওয়া তথ্যমতে লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ নিতাই
চন্দ্র সাহা আজ রায় দিয়েছেন। রায়ে তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ
সন্তুষ্ট।