মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের আলোচিত হত্যাকাণ্ড যুবলীগ কর্মী শহিদুল ইসলাম আকাশ (২৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামী হুমায়ুন কবির মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। একই মামলায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টায় মামলার প্রধান আসামী মামুনকে চট্টগ্রাম শহরের পাহাড়তলী থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য আসামীরা হলো, মুকেশ চন্দ্র দাশ ও মো. ইকবাল (২২)। এই দুইজনকে চাঁদপুর জেলার পুরান বাজার হতে শনিবার রাত ৮টায় গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক ল্যাফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ রোববার দুপুরে বলেন, মানুন ও আকাশের মাঝে দীর্ঘদিনের কোন্দল ছিলো। তাদের মাঝে পারিবারিক, হত্যাকাণ্ড, মাদক ব্যবসায় দ্বন্ধ, দখলদারিত্ব ও রাজনৈতিক অধিপত্য নিয়ে দ্বন্ধ দীর্ঘ দিন ধরে চলছিলো। তা এবার রূপ নেয় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। এক সময় মামুন ও আকাশ দুজন ক্লোজ বন্ধু ছিলো। এবং তারা বারৈয়ারহাট এলাকার একটি রাজনৈতিক গ্রুপের সক্রিয় ক্যাডার হিসেবে পরিচিতি ছিলো। এসময় তারা মাদক সহ বিভিন্ন ব্যাবসায় জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে মাদক ও গাছ কাটা নিয়ে তাদের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেখান থেকে শুরু হয় দুই বন্ধুর বিরোধ।
র্যাব মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ডটি একদিনের কোন ঘটনা নয়! এটি অনেক দিনের বেশ কিছু ইস্যু নিয়ে সংগঠিত হয়। এর আগেও একই এলাকায় দুটি হত্যাকাণ্ড হয়েছিলো। একজন তাদের সহযোগী সাদ্দাম ও অন্যজন মামুনের আপন ছোট ভাই আফজাল।
২০১৫ সালে মামুন আকাশকে হত্যাচেষ্টা করে। এরপর উভয়জন হত্যা হত্যাচেষ্টা, অস্ত্র ও মাদকের একাধিক মামলায় একাধিকবার জেলে যায় দুজন। পরে তাদের দ্বন্ধ আরো চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
এক সময় মামুন তার ওই গ্রুপ ত্যাগ করে অন্য একটি গ্রুপে চলে যায়। ওই গ্রুপের মোতালেব নামের এক কর্মী মামুনের সহযোগী ছিলো। গ্রুপ চেঞ্জ হওয়ায় মামুন সঙ্গ ত্যাগ করে মোতালেব আকাশের সাথে পার্টনারে ব্যবসা শুরু করে।
এরপর মামুন তার চাচাতো বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে না-বালিকা অবস্থায় পরিবারের অ-মতে ওই মেয়েকে বিয়ে করে মামুন। বিয়ে করার কারণে মেয়ের ফ্যামিলি থেকে মামুনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে মামুন প্রায় দুই বছর জেলে থাকে। এর আগে ২০১৯ সালে একটি অস্ত্র মামলায় মামুন জেল খাটে। এর মাঝে মামুনের ভাই আফজালকে নৃশংসভাবে হত্যা করে আকাশের গ্রুপের লোকজন।
এখানে মামুনের মনে হয় যে আকাশের হাত রয়েছে এসবের পেছনে। সেই ক্ষোভ থেকে আকাশকে হত্যা করে মামুন।