আজঃ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

মাদ্রাসায় ১৫ মাসে ধর্ষণের শিকার ৬২ ছেলেশিশু, মৃত্যু ৩

প্রকাশিত:শনিবার ১০ এপ্রিল ২০২১ | হালনাগাদ:শনিবার ১০ এপ্রিল ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image
মাদ্রাসাগুলোয় দিনের পর দিন ছেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চললেও তা বন্ধে এখনও তেমন কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে বিপথগামী কিছু শিক্ষক ও মাদ্রাসাসংশ্নিষ্টরা এটাকে অপরাধ বলেই গণ্য করেন না

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার বড়খারচর আদর্শ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে শিশুটি। গত ১ এপ্রিল হঠাৎ বাড়ি চলে আসে। তার শরীরে তখন অনেক জ্বর। ওষুধ খাইয়ে কিছুটা সুস্থ করে তোলার পর তাকে মাদ্রাসায় যেতে বলা হয়। কিন্তু কিছুতেই সে যেতে রাজি হয় না। গত বুধবার জোর করে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে সে মাদ্রাসার গেটে দাঁড়িয়ে শিক্ষক ইয়াকুব আলীকে গালাগাল শুরু করে। এরপর দৌড়ে চলে যায় থানার সামনে। সেখানে মাকে বলে, পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবে সে। তখন বেরিয়ে আসে তার ওপর হওয়া পাশবিক নির্যাতনের কথা। ওই শিক্ষক একাধিকবার তাকে বলাৎকার করে তা গোপন রাখতে হুমকি দিয়েছেন বলেও জানায় সে।

এরকম ঘটনা শুধু একটি নয়, দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় বহু ছেলেশিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। অভিযোগ কখনও শিক্ষক, কখনও সিনিয়র ছাত্র বা মাদ্রাসাসংশ্নিষ্ট কারও বিরুদ্ধে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর মাদ্রাসায় ধর্ষণের শিকার হয়েছে অন্তত ৫২ শিশু। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছে। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে আরও ১০ শিশু।

আসকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা বলেন, ছেলেশিশুদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে এখনও বলাৎকার শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তবে তা ঘটনাটিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে। অনেকেই মনে করেন, এটা তো বলাৎকার, ধর্ষণ না। গুরুতর কোনো অপরাধ না। আসলে ধর্ষণ তো ধর্ষণই, তা সে ছেলেশিশুর সঙ্গে হোক বা মেয়ে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। শীপা বলেন, আইনের মাধ্যমে সমস্যাটিকে শনাক্ত করে সমাধান খুঁজতে হবে। সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে প্রচলিত আইন পর্যালোচনা করে ছেলেশিশু ধর্ষণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম) সোহেল রানা বলেন, বলাৎকার বা ছেলেশিশু ধর্ষণের ঘটনা বন্ধে আমরা ফেসবুক পেজগুলোর মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক নানা বার্তা দিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়া অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করে না পুলিশ। তবে এ সমস্যা রোধে ব্যাপক সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মাদ্রাসাগুলোয় দিনের পর দিন ছেলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চললেও তা বন্ধে এখনও তেমন কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে বিপথগামী কিছু শিক্ষক ও মাদ্রাসাসংশ্নিষ্টরা এটাকে অপরাধ বলেই গণ্য করেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে ধর্মের নানা অপব্যাখ্যা দেন জড়িতরা। আবার ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে রেখে তা ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে শিশুদের জিম্মি করার ঘটনাও রয়েছে। গত ৭ এপ্রিল সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রামের কফিল উদ্দিন হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এক শিশুর সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল ফোনে আরও কয়েক শিশুর সঙ্গে একই অপকর্মের ভিডিও পাওয়া যায়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, বলাৎকারের দৃশ্য তিনি মোবাইল ফোনে ধারণ করে ওই শিশুদের ভয় দেখিয়ে আবারও বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতে বাধ্য করতেন।

এর আগে গত বছরের ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার আহমদিয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসার হোস্টেল সুপার নাছির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত-সংশ্নিষ্টরা জানান, কবে কোন ছাত্রকে বলাৎকার করবেন রীতিমতো তার রুটিন তৈরি করেছিলেন তিনি। কোনো ছাত্র রাজি না হলে তার ওপর চালানো হতো নির্যাতন। পরে ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। তাদের মধ্যে চার ছাত্র আদালতে ২২ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে নাছিরের পাশবিকতার বর্ণনা দেয়।

নয় বছর ধরে ধর্ষণ :২০১৯ সালের ২২ জুলাই রাজধানীর দক্ষিণখানের মাদ্রাসাশিক্ষক ইদ্রিস আহমেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তার বিরুদ্ধে এক শিশু নয় বছর ধরে ধর্ষণ চালানোর অভিযোগ করে। ২০১০ সালে শিশুটি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। তখন তার বয়স ১২ বছর, যৌননির্যাতনের শিকার তখন থেকেই। ৯ বছর পর শিশুটি তার চাচাত ভাইকে ঘটনাটি জানায়। এরপর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।


আরও খবর



টংক আন্দোলনের নেত্রী কুমুদিনী হাজং আর নেই

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

নেত্রকোনার পাহাড়ি সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর উপজেলা স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা শেষ স্বাক্ষী কুমুদিনী হাজং মারা গেছেন। শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার সীমান্ত গ্রাম বহেরাতলীতে স্বামীর ভিটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দুর্গাপুর কালচারাল একাডেমির পরিচালক সুজন হাজং এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে দীর্ঘদিন মত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তলদেশে বিজয়পুর সীমান্তের দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলি গ্রাম। যে গ্রাম থেকে খাজনা প্রথা বিলুপ্তিতে আন্দোলনের গণজাগরণ হয়েছিল যার মৃত্যুতে সেই রাশি মণি হাজংয়ের স্মৃতি ধরে রেখেছিলেন কুমুদিনী হাজং।

রাশিমণির সমাপ্তিতে খাজনা বিদ্রোহে প্রজা আন্দোলনের ইতিহাস ঐহিত্যর বীরত্বগাঁথা মনিষীদেরও চারণভূমিও বলা চলে। এ এলাকায় কুমুদিনী হাজংয়ের কাছে মানুষ শুনতে আসতেন টংক প্রথা বিলুপ্তির ইতিকথা। কিন্তু তিনি মৃত্যুর কয়েক বছর আগে থেকে কথা বলতে পারেন না। তবে যাদের চেনেন। তাদের সন্মান করতেন। বসিয়ে রাখতে চাইতেন পাশে। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শয্যাশায়ী থাকাকালীন মেঝো ছেলে ও ছেলে বউ দেখভাল করেছেন। রাশিমণি স্মৃতিসৌধ দেখতে গিয়েই সকলে কুমুদিনী হাজংয়ের খোঁজ নেন সবাই। তার তিন ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে কয়েক বছর আগেই মারা যান। কুমুদিনী হাজংয়ের মেঝো ছেলে অর্জুন হাজং জানায়- রবিবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

১৯৪৬ সনের কথা। কমরেড মণিসিংহ ভারত থেকে দুর্গাপুর মামা বাড়িতে চলে আসেন। শুরু করেন টংক প্রথা বা ধান কড়াড়ি খাজনা বাতিল আন্দোলন। আন্দেলনে যোগ দেন সীমন্তের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের লঙ্কেশ্বর হাজং, রাশিমণি হাজংসহ আদিবাসীরা। এরই জেরে সে বছরের ৩১ জানুয়ারী লঙ্কেশ্বর হাজংসহ বেশ ক’জন হাজং বিদ্রোহী নেতাকে ধরে নিতে ব্রিটিশ ফন্ট্রিয়ার পুলিশ আসে বহেরাতলী গ্রামে। তাদের না পেয়ে লঙ্কেশ্বর হাজংয়ের সদ্য বিয়ে করা স্ত্রী কুমুদিনী হাজংকে তুলে নিয়ে যায়।

এ খবর এক কৃষক বিদ্রোহ সভায় রাশি মণি হাজংয়ের কাছে পৌঁছে। ছুটে যান তিনি। নারীকে নিয়ে যাওয়া মানে মান নিয়ে যাওয়া উল্লেখ করে তিনি ঝাপিয়ে পড়েন। হাতে থাকা দা দিয়েই পুলিশের উপর হামলা চালান। পরে পুলিশের বন্দুকের গুলিতে তিনিসহ দুজন হাজং নেতার প্রয়াণ ঘটে। তবে রক্ষা হয় গৃহবধূ কুমুদিনী হাজং।


আরও খবর



মুক্তির মহানায়কের জন্মদিন আজ

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ রোববার (১৭ মার্চ)। সারাদেশে দিনটি জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

দিবসটি উদযাপনে এদিন দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু কিশোর দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধীসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে পৃথক বাণী দিয়েছেন তারা।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। তাছাড়া সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় নেতারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। একইসঙ্গে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং শিশু সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন তারা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন।

তার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়াল্ড রেজিস্ট্রারে অর্ন্তভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

অন্যদিকে, ২৬ মাচর্ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন তিনি। তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালির বহু কাঙ্ক্ষিত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সংগ্রামে অবদান রাখার জন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদ প্রদত্ত জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হন। বিবিসির এক জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে বঙ্গবন্ধু যখন বিভিন্নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করতে শুরু করেন, ঠিক সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল তার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ধানমন্ডির বাসভবনে কতিপয় সেনা কর্মকর্তার হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন।

বিশ্ব গণমাধ্যমের চোখে বঙ্গবন্ধু ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। অনন্য সাধারণ নেতাকে স্বাধীনতার প্রতীক বা রাজনীতির ছন্দকার খেতাবেও আখ্যা দেয়া হয়। বিদেশি ভক্ত, কট্টর সমালোচক এমনকি শত্রুরাও তাদের নিজ নিজ ভাষায় তার উচ্চকিত প্রশংসা করেন। বিংশ শতাব্দীর কিংবদন্তি কিউবার বিপ্লবী নেতা প্রয়াত ফিদেল ক্যাস্ট্রো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।

শ্রীলংকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মণ কাদির গামা বাংলাদেশের মহান নেতা সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছিলেন, দক্ষিণ এশিয়া গত কয়েক শতকে বিশ্বকে অনেক শিক্ষক, দার্শনিক, দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক, রাজনৈতিক নেতা ও যোদ্ধা উপহার দিয়েছে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান সবকিছুকে ছাপিয়ে যান। তার স্থান নির্ধারিত হয়ে আছে সর্বকালের সর্বোচ্চ আসনে।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১৩ সালের ৪ মার্চ নগরীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন শেষে মন্তব্য বইয়ে লিখেছিলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন জনগণের নেতা এবং তাদের সেবায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাকে দেয়া বঙ্গবন্ধু খেতাবে এই দেশপ্রেমিক নেতার প্রতি দেশের মানুষের গভীর ভালোবাসা প্রতিফলিত হয়।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মন্তব্য বইয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্মোহনী এবং অসীম সাহসী নেতৃত্বের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে জনগণের নেতৃত্বদান করেছিলেন। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতা সোনিয়া গান্ধী বলেন, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন নেতা এবং রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। তিনি স্বাধীনতার জন্য প্রতিকূলতা ও বিরূপ পরিস্থিতি উপেক্ষা করে অটল সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ সফরের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এসময় মন্তব্য বইয়ে তিনি লেখেন, উপ-মহাদেশের প্রতিটি মুক্তিকামী, মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষের মনে বঙ্গবন্ধু এক জ্বলন্ত অনুপ্রেরণা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি, স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্থপতি এবং পিতা। বাংলা ভাষাকে বিশ্বের মঞ্চে অন্যতম শ্রেষ্ঠত্বে মর্যাদা এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি সেই বিরল নেতা, যার প্রতি ধর্মমত নির্বিশেষে সব মানুষ প্রণাম জানিয়ে ধন্য হয়।

তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী হিসেবে চিত্রিত করলেও ইতিহাসই প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করে, যখন তাঁর এককালীন ঘোরতর শত্রু তাকে মহান দেশপ্রেমিক হিসেবে অভিহিত করে।১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি (বেলুচিস্তান) অফিসার মেজর জেনারেল তোজাম্মেল হোসেন মালিক পরে তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, বস্তুত মুজিব দেশদ্রোহী ছিলেন না (পাকিস্তানে তাকে সেভাবে চিত্রিত করা হলেও)। নিজ জনগণের জন্য তিনি ছিলেন এক মহান দেশপ্রেমিক।

আরেকজন সেনা কর্মকর্তা তৎকালীন পাকিস্তানি জান্তার মুখপাত্র মেজর সিদ্দিক সালিক বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী ৭ মার্চের ভাষণের কথা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সালিক তার গ্রন্থে লিখেছেন, রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর ঘরমুখী মানুষের ঢল নামে। তাদের দেখে মনে হচ্ছিল আশাব্যঞ্জক বাণী শ্রবণ শেষে মসজিদ অথবা গির্জা থেকে তারা বেরিয়ে আসছেন।


আরও খবর



৭ ঘণ্টা পর ঢাকা-খুলনা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

প্রকাশিত:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

Image

৭ ঘণ্টা পর পাবনার ঈশ্বরদীতে তেলবাহী ও মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুত দুটি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। তারপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। পাকশী পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সূফী নুর মোহাম্মদ বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল পৌনে সাতটার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, প্রায় সাত ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত হওয়া দুটি টেনের দুই বগি উদ্ধার করা হয়। এরপর ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা ও খুলনার সঙ্গে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে তেলবাহী ট্রেনে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে খুলনা রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, একটি তেলবাহী ট্রেন পার্বতীপুরে তেল নামিয়ে দিয়ে খুলনার দিকে যাবার পথে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসে দাঁড়ায়। ঘটনার সময় পাথর বোঝাই একটি মালবাহী ট্রেন ভারত থেকে ঢাকা যাবার পথে একই স্টেশনে দাঁড়ায়। এ সময় পাথর বোঝাই ট্রেনটি শানটিং করার সময় (বগি এক লাইন থেকে আরেক লাইনে নেয়ার সময়) তেলবাহী ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন ও মালবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। তারপর ঈশ্বরদী লোকোমোটিভ থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন গিয়ে বগি উদ্ধারে কাজ করে।

পাকশী পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানান, ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, বিভাগীয় সিনিয়র সহকারী সংকেত প্রকৌশলী, সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা, সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী।

কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক এবং অন-ডিউটি সহকারী স্টেশন মাস্টারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: ঈশ্বরদী

আরও খবর



রমজানে মসজিদে ইফতার নিষিদ্ধ করল সৌদি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

আসন্ন রমজানের মসজিদে ইফতার নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের ইসলামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা দিয়েছে। দ্য নিউ আরবের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো শরয়ি আইন বা ধর্মীয় বিধিনিষেধের কারণে নয়, মসজিদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য দেশটির কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, ইফতারি পণ্য নিয়ে মসজিদে যাওয়া যাবে না। মসজিদের পরিচ্ছন্নতার কথা বিবেচনা করে গত সপ্তাহে ইসলামবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক নোটিশে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওই নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ইফতারির পর অনেক নোংরা হয়ে যায় পরিবেশ। সঙ্গে সঙ্গে নামাজ পড়ার মতো উপক্রম থাকে না অনেক সময়। তাই মসজিদের উন্মুক্ত স্থানে ইফতার করতে হবে। তবে ইফতারির জন্য অস্থায়ী কোনো রুম বা তাঁবু স্থাপন করা যাবে না মসজিদের আশপাশেও। পাশাপাশি রোজাদারদের জন্য ইফতারি কিনতে ইমাম বা মুয়াজ্জিনের কাছ থেকে কোনো অর্থ সংগ্রহ করা যাবে না। 

আরও পড়ুন>> কমলো সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম, প্রজ্ঞাপন জারি

অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেউ চাইলে মক্কা এবং মদিনায় ইফতারি নিতে পারবে। এ জন্য নির্ধারিত পোর্টালে আবেদনের মাধ্যমে আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে পারে। তারই সুযোগ মিলবে মসজিদে ইফতারি নেওয়ার।

এর আগে জানানো হয়, পবিত্র রমজান মাসে মসজিদের ভেতর কোনো ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার বা ছবি না তোলার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মসজিদের ভেতর ক্যামেরা স্থাপন করে অনলাইনসহ কোনো ধরনের মিডিয়ায় তা সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।

আগামী ১০ মার্চ রাতে মধ্যপ্রাচ্যে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে আরব আমিরাতভিত্তিক আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র জানিয়েছে, ওইদিন চাঁদ দেখার সম্ভাবনা খুবই কম। সেই হিসেবে ১১ মার্চ চাঁদ দেখা গেলে ১২ মার্চ থেকে পবিত্র রমজান শুরু হবে।


আরও খবর



পিরোজপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশিত:সোমবার ১১ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১১ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মশিউর রহমান রাহাত, পিরোজপুর

Image

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হালিমকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার (১০ মার্চ) রাতে পাড়েরহাট ইউনিয়নের উমেদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত হালিম পিরোজপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আব্দুল হালিমের নাতি আরিফ সিকদার জানান, আব্দুল হালিমের ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা রয়েছে। রবিবার রাতে হজে লোক পাঠানোর বিষয়ে কথা বলার জন্য ফোন দিয়ে বাড়ি সামনে বের হতে বলে একজন। তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে উমেদপুর মসজিদের কাছে গেলে ১০-১২ জন তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা লোহার পাইপ ও রড দিয়ে দুই পায়ে পিটিয়ে আহত করে ফেলে চলে যায়। এরপরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, হামলাকারীরা পরিচিত তবে ফোনে তাদের নাম বলা যাবে না।

ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো.কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, রাজনৈতিক শত্রুতার জন্য এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরও খবর