আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

মাহে রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ত্রিশটি আমল

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ এপ্রিল ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

পবিত্র মাহে রমজান আমলের মাস। ফজিলতের মাস। রহমত, বরকত এবং ক্ষমালাভের মাস। মাহে রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ত্রিশটি আমল সম্পর্কে এখানে বর্ণনা করা হলো-

১. রোজা পালন করা:

রোজা বা সিয়াম ইসলামের পাঁচটি রুকনের অন্যতম।

আর রমজান মাসে সিয়াম পালন করা ফরজ। সেজন্য রমজান মাসের প্রধান আমল হলো সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন:  'সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। ' [সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৫]

সিয়াম পালনের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদিসে বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার জন্য রমজানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। [সহীহ বুখারী : ২০১৪]

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে: যে কেউ আল্লাহ তাআ'লার রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহ তাআ'লাকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তাদ্বারা আল্লাহ তাআ'লা তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তী স্থানে রাখবেন’। [সহীহ মুসলিম : ২৭৬৭]

২. সময় মত নামাজ আদায় করা:

পবিত্র রমজান মাস নেক আমলের ট্রেনিংয়ের মাস। এ মাসে সিয়াম পালনের সাথে সাথে সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করার প্রতি মনযোগী হতে হবে। এমনটা যেন না হয় যে, আমার কাজ শেষ করে তবেই আমি নামাজ আদায় করে নেব। বরং সময়মত নামাজ আদায় করে আমি আমার অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করবো। হাদিসে নামাজকে জান্নাতের চাবি বলা হয়েছে। আর নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়ার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হয়। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে: নিশ্চয় সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয। [সূরা নিসা : ১০৩]

হাদিস শরিফেও এ বিষয়ে নির্দেশনা এসেছে। আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! কোন আমল জান্নাতের অতি নিকটবর্তী? তিনি বললেন, সময় মত নামায আদায় করা। ' [সহীহ মুসলিম : ২৬৩]

৩. সহীহভাবে কুরআন শেখা:

মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হয়েছে পবিত্র রমজান মাসে। তাই এ মাসের অন্যতম আমল হলো সহীহভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা। তিলাওয়াতে অক্ষম ব্যক্তিবর্গের জন্য তিলাওয়াত শিখে নেয়া। আর আমাদের জন্য কুরআন শিক্ষা করাকে ফরয করা হয়েছে। যেমন, কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে:পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। [সূরা আলাক : ১]

হাদিস শরিফে এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন শেখার নির্দেশ দিয়ে বলেন: তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর। [মুসনাদ আলজামি : ৯৮৯০]

৪. অপরকে কুরআন তিলাওয়াত শেখানো:

রমজান মাস অপরকে কুরআন শেখানোর উত্তম সময়। এ মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে সাহাবীদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি তিনিই, যিনি নিজে কুরআন শিক্ষা করেন এবং অপরকে শিক্ষা দেন। [সহীহ আল-বুখারী : ৫০২৭]

৫. রাত্রির শেষ প্রহরে সাহরী খাওয়া:

সাহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে এবং সিয়াম পালনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: সাহরী হল বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন। [মুসনাদ আহমাদ : ১১১০১, সহীহ]

৬. সালাতুত তারাবীহতে অংশগ্রহণ করা:

রমজানের প্রতি রাতে সালাতুত তারাবীহ পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। তারাবীহ পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে: যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমজানে কিয়ামু রমাদান (সালাতুত তারাবীহ) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। [সহীহ আল-বুখারী : ২০০৯]

তারাবীহ এর সালাত তার হক আদায় করে অর্থাৎ ধীরস্থীরভাবে সময় নিয়ে আদায় করতে হবে। তারাবীহ জামায়াতের সাথে আদায় করা সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে আছে: যে ব্যক্তি ইমামের সাথে প্রস্থান করা অবধি সালাত আদায় করবে (সালাতুত তারাবীহ) তাকে পুরো রাত কিয়ামুল লাইলের সাওয়াব দান করা হবে। [সুনান আবূ দাউদ : ১৩৭৭, সহীহ]

ইদানিং তারাবীহ নামাজের রাকাআত সংখ্যা নিয়ে আমাদের সমাজে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক সাধারন মুসল্লিদের ভেতরে মতপার্থক্য ও বিভেদ সৃষ্টির পায়তারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। যদিও বিগত প্রায় দেড় হাজার বছর যাবত পবিত্র মক্কাতুল মুকাররমাহতে অবস্থিত বাইতুল্লাহ শরিফে এবং মদিনাতুল মুনাওওয়ারাহতে অবস্থিত মাসজিদে নববীতে জামাআতের সাথে ২০ রাকাআত তারাবীহর নামাজই চলে আসছে।

৭. কুরআন তিলাওয়াত বেশি বেশি করা:

পবিত্র রমজান কুরআনুল কারিম নাজিলের মাস। এই মাস মহাগ্রন্থ আল কুরআন পঠন, শিক্ষন এরও মাস। রমজান যেন আল কুরআনেরই মাস। এই মাসটি জুড়ে কুরআনে কারিমের যত বেশি সম্ভব তিলাওয়াত, আল কুরআনের মর্ম অনুধাবন এবং তার ফায়দা সমস্ত জগতের মানুষের জন্য উম্মুক্ত করার পথ রচনা করার চেষ্টা করা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ। [সুনান আত-তিরমিযী: ২৯১০]

কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদত বা অভ্যাস ছিল, তিনি রমজান মাসের মত এত বেশি পরিমান তিলাওয়াত অন্য কোন মাসে করতেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রমজান ব্যতিত অন্য কোনো রাত্রিতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত করতে, কিংবা ভোর অবধি সালাতে কাটিয়ে দিতে অথবা পূর্ণ মাস রোযা পালন করে কাটিয়ে দিতে দেখি নি। [সহীহ মুসলিম : ১৭৭৩]

৮. বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা:

পবিত্র মাহে রমজান মাস প্রাপ্ত হওয়া নি:সন্দেহে এক মহা সৌভাগ্যের বিষয়। এ কারণে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা উচিত। বেশি বেশি হামদ ও সানা পাঠ করে মহান মুনিবের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। অবিরত-অনবরত এবং অব্যহতভাবে তাঁর পবিত্র নামের তাসবীহ ঠোটের কোনে লাগিয়ে রাখার চেষ্টা করা। সাথে সাথে আগামী রমজানপ্রাপ্তির জন্য বিনীতভাবে তাঁর নিকট তাওফিক প্রত্যাশা করা। এ বিষয়ক নির্দেশনা ঐশিগ্রন্থ আল কুরআনেও এসেছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ইরশাদ করেন: আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর। [সূরা আলবাকারাহ : ১৮৫]

আল্লাহ তাআ'লার নিআমতের শুকরিয়া আদায় করলে তিনি খুশি হন। অকৃতজ্ঞদের প্রতি তিনি নারাজ হন। ইরশাদ হয়েছে: আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন- যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন। -সূরা ইবরাহীম : ৭

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন: 'নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করে বলতেন- আলহামদুলিল্লাহ, অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআ'লার জন্য। ' [সুনান আত-তিরমিযী : ২৭৩৮]

৯. কল্যাণকর কাজে বেশি অংশগ্রহণ করা:

পবিত্র মাহে রমজান সাওয়াব অর্জনের মাস। এ মাসে একটি ভাল কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সেজন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভাল কাজে অংশগ্রহনের চেষ্টা করতে হবে। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: এ মাসের প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহবান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ কর। (তুমি কি জান?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তায়ালা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন? [সুনান আত-তিরমিযী : ৬৮৪]

১০. নিয়মিত সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করা:

সালাতুত তাহাজ্জুদের রয়েছে বিশেষ ফজিলত। এ নামাজ রাতের শেষ তৃতীয়াংশে নির্জনে একাকি মহান প্রতিপালকের সামনে সিজদায় অবনত হয়ে তাঁর নৈকট্যলাভের অন্যতম মাধ্যম। রমজান মাস ছাড়াও সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়ার মধ্যে বিরাট সাওয়াব এবং মর্যাদা রয়েছে। রমজানের বিশেষ ফজিলতের কারণে এ মাসে এই নামাজের জন্য রয়েছে আরো বেশি সাওয়াব ও ফায়দা। আমাদের প্রত্যেক রোজাদারকেই যেহেতু সাহরী খাওয়ার জন্য উঠতে হয়, আমরা ভোর রাতে উঠি, সে কারণে রমজান মাসে সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করার একটি বিশেষ সুযোগ থেকে যায়। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তাঅা'লা আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল রাতের সালাত অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সালাত। [সহীহ মুসলিম : ২৮১২]

১১. অধিক পরিমানে দান-সদাকাহ করা:

পবিত্র মাহে রমজানে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দান সাদাকাহর পরিমান অন্যান্য মাসের তুলনায় অনেকাংশে বেড়ে যেত। তিনি স্বয়ং এই মাসের বিশেষ সাওয়াব অর্জনের জন্য যেখানে বেশি বেশি দান-সাদাকাহ করেছেন, আমাদেরও সেই চেষ্টাই করতে হবে। ইয়াতীম, বিধবা ও গরীব মিসকীনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ও বেশি বেশি দান খয়রাত করা এ মাসের অন্যতম আমল হওয়া উচিত। যাকাত যাদের ফরজ তারা অবশ্যই যাকাত আদায় করে থাকেন। বছরের যে কোনো মাসেই সম্পদের হিসাব করে নির্ধারিত পরিমান যাকাত আদায় করা যায়। তবে এক্ষেত্রেও অন্য মাসের তুলনায় প্রতি বছর এ মাসে যাকাত আদায় করা উত্তম। কেননা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে বেশি বেশি দান খয়রাত করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল আর রমজানে তাঁর এ দানশীলতা আরো বেড়ে যেত। [সহীহ আল-বুখারী : ১৯০২]

১২. উত্তম চরিত্র গঠনের অনুশীলন করা:

রমজান মাস চরিত্র গঠনের মাস। আত্মশুদ্ধি, আত্মোপলব্ধি এবং আত্মোন্নয়নের মাস। এ মাসে চারিত্রিক উন্নয়নে সচেষ্ট হতে হবে। এমনভাবে প্রশিক্ষণ নিতে হবে, যার মাধ্যমে বাকি মাসগুলো পরিচালিত হয় সুন্দরভাবে। ধৈর্য্য, সহিষ্ণুতা, আমানতদারিতা, সত্যবাদিতা, পরোপকারিতার মত উন্নত অন্যান্য গুনাবলী নিজের ভেতরে ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, গিবত, অন্যায়-অশ্লীলতাসহ যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার ট্রেইনিং নিতে হবে। আমাদের প্রতি দিনের অনুশীলন হবে- সুন্দর এবং আদর্শ চরিত্র গঠন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমাদের মধ্যে কেউ যদি রোযা রাখে, সে যেন তখন অশ্লীল কাজ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। রোযা রাখা অবস্থায় কেউ যদি তার সাথে গালাগালি ও মারামারি করতে আসে, সে যেন বলে, আমি রোযাদার। [সহীহ মুসলিম : ১১৫১]

১৩. অন্যতম আমল হোক ইতিকাফ’:

মাহে রমজানের অন্যতম আমল ই‘তিকাফ। 'ই‘তিকাফ' অর্থ অবস্থান করা, অর্থাৎ মানুষজনের কোলাহল থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, দুআ, ইসতিগফার ও অন্যান্য ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদাতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমজানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবীগণ ইতিকাফ করতেন। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত: প্রত্যেক রমজানেই তিনি শেষ দশ দিন ইতিকাফ করতেন। কিন্তু জীবনের শেষ রমজানে তিনি ইতিকাফ করেছিলেন বিশ দিন। দশ দিন ইতিকাফ করা সুন্নাত। ' [সহীহ আলবুখারী : ২০৪৪]

১৪. দাওয়াতে দ্বীনের কাজে অংশগ্রহন করা:

মাহে রমজান উত্তম আমলের মাস। আর দ্বীনের দাওয়াত এমনিতেই উত্তম একটি আমল। দ্বীনের দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহ তাআ'লার দিকে ডাকা হয়। আত্মভোলা বিপথগামী বান্দাহকে মহান স্রষ্টার দিকে ডেকে আনা। মহান সৃষ্টিকর্তা এবং পালনকর্তাকে ভুলে যাওয়া পার্থিব মোহে আত্মবিভোর মানুষকে রবের সাথে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে দেয়ার মত পূন্যময় কাজ আর কি হতে পারে? এটি নি:সন্দেহে সর্বোত্তম একটি কাজ। আর এ কাজটি যদি করা হয় পবিত্র মাহে রমজানে, এর সাওয়াব অবশ্যই আরও অনেক অনেক গুন বৃদ্ধি পাবে। এজন্য এ বরকতময় মাসটিতে বেশি বেশি মানুষকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসার জন্য আলোচনা করা, কুরআন ও হাদীসের দারস প্রদান, সামর্থ্যানুযায়ী সম্ভব হলে দ্বীনি তারগীব তাবলীগের লক্ষ্যে কুরআন হাদিসের আলোকে লিখিত নির্ভরযোগ্য আলেম উলামাদের বই বিতরণ, কুরআন বিতরণ ইত্যাদি কাজ বেশি বেশি করা। আল কুরআনের ঘোষণা :ঐ ব্যক্তির চাইতে উত্তম কথা আর কার হতে পারে যে আল্লাহ তাআ'লার দিকে ডাকলো, নেক আমল করলো এবং ঘোষণা করলো, আমি একজন মুসলিম। [সূরা হা-মীম সাজদাহ : ৩৩]

১৫. সামর্থ্যবানগনের জন্য উমরাহ পালন করা:

মাহে রমজানে একটি উমরাহ করলে একটি হাজ্জ আদায়ের সমান সাওয়াব হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: রমজান মাসে উমরাহ করা আমার সাথে হাজ্জ আদায় করার সমতুল্য। [সহীহ আলবুখারী : ১৮৬৩]

১৬. শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা:

পবিত্র মাহে রমজানে এমন বরকতময় একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল-কুরআনের ঘোষণা: কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। [সূরা কদর : ৪]

হাদিসে রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদাত করবে তাকে পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। [সহীহ আল-বুখারী : ৩৫]

মহিমান্বিত এ রজনী পাওয়া বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। এক হাদিসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন: রাসূলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য সময়ের তুলনায় রমজানের শেষ দশ দিনে অধিক হারে পরিশ্রম করতেন। [সহীহ মুসলিম : ১১৭৫]

লাইলাতুল কদরে পাঠ করার জন্য হাদিসে বর্ণিত বিশেষ দুআ: লাইলাতুল কদরে যে কোনো দুআ পাঠ করা যায়। যে কোনো বৈধ বাসনা পূরণের জন্য কুরআন হাদিসে বর্ণিত দুআ মুনাজাত করা যায়। তদুপরি, এই রজনীতে পাঠ করার জন্য হাদিসে বর্ণিত বিশেষ একটি দুআ রয়েছে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি লাইলাতুল কদর পেয়ে যাই তবে কি বলব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বলবেঃ 'আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুয়্যুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি। 'হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন। [সুনান আত-তিরমিযী : ৩৫১৩]

১৭. বেশি বেশি দুআয় নিমগ্ন থাকা এবং আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করা:

হাদিসে বলা হয়েছে- 'আদ্দুআউ মুখখুল ইবাদাহ', অর্থাত, দুআ ইবাদাতের মগজ। দুআ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এজন্য এ মাসে বেশি বেশি দুআ করা ও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার নিকট বেশি বেশি কান্নাকাটি করে কায়োমনোবাক্যে প্রার্থনা করা। হাদিসে এসেছে: ইফতারের মুহূর্তে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়া রমজানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে। [আল জামিউস সাগীর : ৩৯৩৩]

অন্য হাদিসে এসেছে: রমজানের প্রতি দিবসে ও রাতে আল্লাহ তা‘আলা অনেককে মুক্ত করে দেন। প্রতি রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলিমের দুআ কবূল করা হয়। [সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব : ১০০২]

১৮. ইফতার করার ভেতরে রয়েছে বরকত:

মাহে রমজানে ইফতারির সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা বিরাট ফজিলাতপূর্ণ আমল। এক্ষেত্রে কোনো সময়ক্ষেপন না করা। কারণ হাদিসে এসেছে: যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র। [সুনান আবু দাউদ : ২৩৫৭, সহীহ]

রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন: 'পিপাসা নিবারিত হল, শিরা উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পুরস্কারও নির্ধারিত হল। ' [সুনান আবূ-দাউদ: ২৩৫৯, সহীহ]

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে যে- 'হে আল্লাহ! আপনার জন্য রোযা রেখেছি, আর আপনারই রিযিক দ্বারা ইফতার করছি। ' -কোনো কোনো মুহাদ্দিসের নিকট এই হাদিসটির সনদ দুর্বল। আল্লাহ পাক আমাদের সহিহ হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। [সুনান আবু দাউদ :২৩৫৮]

১৯. রোজাদারদের ইফতার করানো:

রোজাদারদের ইফতার করানো একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজন রোজাদারকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা দরকার। এই মর্মে হাদিসে এসেছে: যে ব্যক্তি কোনো রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সাওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না। [সুনান ইবন মাজাহ : ১৭৪৬, সহীহ]

২০. অধিক পরিমাণে তাওবাহ ও ইস্তেগফার করা:

'তাওবাহ' শব্দের আভিধানিক অর্থ- 'ফিরে আসা', পারিভাষিক অর্থে- 'আল্লাহ তাআ'লার নিকট নিজ গুনাহের জন্য লজ্জিত হয়ে বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে পুনরায় উক্ত গুনাহের কাজ আর কখনো না করার সিদ্ধান্ত নেয়া'। পবিত্র রমজান মাস তাওবাহ করার উত্তম সময়। তাওবাহকারীকে আল্লাহ পাক ভালোবাসেন। তাওবাহ করলে আল্লাহ তাআ'লা খুশি হন।

আল-কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:

‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাটি তাওবা; আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। সেদিন আল্লাহ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান। [সূরা আত-তাহরীম : ৮]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: হে মানবসকল! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, আর আমি দিনে তাঁর নিকট একশত বারের বেশি তাওবাহ করে থাকি। [সহীহ মুসলিম : ৭০৩৪]

তবে তাওবাহ ও ইস্তেগফারের জন্য উত্তম হচ্ছে, মন থেকে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার (সর্বশ্রেষ্ঠ ইসতিগফার) পড়া, আর তা হচ্ছে:

'আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী- লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা খলাকতানী-, ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা- আহদিকা অ অ'দিকা, মাসতাতা'তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা- ছনা'তু, আবু-উ লাকা বিনি'মাতিকা আলাইয়া, ওয়া আবু-উ লাকা বিজানবী-, ফাগফিরলী-, ফাইন্নাহু লা- ইয়াগফিরুজজুনূ-বা ইল্লা- আনতা। '

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রতিপালক, আপনি ছাড়া প্রকৃত ইবাদতের যোগ্য কেউ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনার গোলাম আর আমি সাধ্যমত আপনার সাথে কৃত অঙ্গীকারের উপর অবিচল রয়েছি। আমার কৃত-কর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমাকে যত নেয়ামত দিয়েছেন সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করছি। যত অপরাধ করেছি সেগুলোও স্বীকার করছি। অত:এব, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। কারণ, আপনি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।

২১. তাকওয়া অর্জন করা:

তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাহকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপকাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমাদান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম। কুরআনে এসেছে: হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে করে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারো। [সূরা আলবাকারাহ : ১৮৩]

অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে: 'যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। ' [সূরা তালাক : ০২]

২২. ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করা:

ফজরের পর সূর্যোদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করা। এটি একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি ফজর জামাআত আদায় করার পর সূর্য উদয় পর্যন্ত মাসজিদে অবস্থান করবে, অতঃপর দুই রাকাআত সালাত আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ হাজ্জ ও উমারাহ করার প্রতিদান পাবে। [সুনান আত-তিরমিযী : ৫৮৬]

২৩. ফিতরাহ দেয়া:

এ মাসে সিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে ফিতরাহ দেয়া আবশ্যক। ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের সালাত আদায়ের পুর্বে ফিতরাহ আদায় করার আদেশ দিলেন। [সহীহ আল-বুখারী :১৫০৩]

২৪. অপরকে খাদ্য খাওয়ানো:

রমাদান মাসে লোকদের খাওয়ানো, বিশেষ করে সিয়াম পালনকারী গরীব, অসহায়কে খাদ্য খাওয়ানো বিরাট সাওয়াবের কাজ । কুরআনে এসেছে:

'তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। ' [সূরা আদ-দাহর: ৮]

এ বিষয়ে হাদীসে বলা হয়েছে: ‘‘আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, একজন লোক এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামে উত্তম কাজ কোনটি? তিনি বললেন, অন্যদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম দেয়া’’ [সহীহ আল-বুখারী : ১২]

২৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক উন্নীত করা:

আত্মীয়তার সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর তা রক্ষা করাও একটি ইবাদাত। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন: হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন; আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগণিত পুরুষ ও নারী। আর আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচঞ্ঝা করে থাক এবং আত্নীয় জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে সচেতন রয়েছেন। ' [সূরা আন-নিসা: ১]

আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:সালাম বিমিয়ের মাধ্যমে হলেও আত্নীয়তার সম্পর্ক তরতাজা রাখ। [সহীহ কুনুযুস সুন্নাহ আন-নবওয়িয়্যাহ : ১৩]

২৬. কুরআন মুখস্থ বা হিফয করা:

কুরআন হিফয করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেননা আল্লাহ তা‘আলা নিজেই কুরআন হিফযের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি এ দায়িত্ব মূলত বান্দাদেরকে কুরআন হিফয করানোর মাধ্যমেই সম্পাদন করেন। কুরআনে এসেছে:নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আমিই তার হিফাযতকারী। -সূরা আল-হিজর: ৯

যে যত বেশি অংশ হিফয করতে পারবে তা তার জন্য ততই উত্তম। আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘‘কুরআনের ধারক-বাহককে বলা হবে কুরআন পড়ে যাও, আর উপরে উঠতে থাক, ধীর-স্থিরভাবে তারতীলের সাথে পাঠ কর, যেমন দুনিয়াতে তারতীলের সাথে পাঠ করতে। কেননা জান্নাতে তোমার অবস্থান সেখানেই হবে, যেখানে তোমার আয়াত পড়া শেষ হবে”। [সুনান আত-তিরমিযী : ২৯১৪]

২৭. বেশি বেশি যিকর করা:

এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘‘আল্লাহ তা’আলা চারটি বাক্যকে বিশেষভাবে নির্বাচিত করেছেন, তাহলো যে ব্যক্তি পড়বে, তার জন্য দশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি পড়বে, তার জন্য বিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি পড়বে, তার জন্য বিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর বিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে পড়বে, তার জন্য ত্রিশটি সাওয়াব লেখা হয়, আর ত্রিশটি গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হয়’’। [মুসনাদ আহমাদ : ১১৩৪৫]

২৮. মিসওয়াক করা:

মেসওয়াকের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। হাদীসে এসেছে: অর্থাৎ মেসওয়াক মুখের জন্য পবিত্রকারী, এবং রবের সন্তুষ্টি আনয়নকারী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা রেখেও মেসওয়াক করতেন বলে বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়। [সহীহ ইবন খুযাইমাহ : ১৩৫]

২৯. অপরজনকে কুরআন শুনানো:

রমাদান মাসে একজন অপরজনকে কুরআন শুনানো একটি উত্তম আমল। এটিকে দাওর বলা হয়। ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে: জিবরাইল আলাইহিস সালাম রমাদানের প্রতি রাতে রমাদানের শেষ পর্যন্ত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং রাসূল তাকে কুরআন শোনাতেন। -[সহীহ আল-বুখারী : ১৯০২]

ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহ্ বলেন : জিবরাইল প্রতি বছর রাসূলের সাথে সাক্ষাৎ করে এক রমযান হতে অন্য রমযান অবধি যা নাযিল হয়েছে, তা শোনাতেন এবং শুনতেন। যে বছর রাসূলের অন্তর্ধান হয়, সে বছর তিনি দু বার শোনান ও শোনেন।

৩০. কুরআন বোঝা ও আমল করা:

কুরআনের এ মাসে কুরআন বুঝা ও আমল করা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। কুরআন অনুযায়ী নিজের জীবনকে গড়ে তোলা। এ বিষয়ে কুরআনে নির্দেশ দেয়া হয়েছে:তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর’। -সূরা আল-আ‘রাফ : ৩

কুরআনের জ্ঞানে পারদর্শী আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে কুরআনের দশটি আয়াত শিক্ষা গ্রহণ করতাম, এরপর ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা পরবর্তী দশটি আয়াত শিক্ষা করতাম না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা এই দশ আয়াতের ইলম ও আমল শিখতাম’। -শরহে মুশকিলুল আছার : ১৪৫০


আরও খবর
কুরবানি ঈদ কবে, জানাল আরব আমিরাত

মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪




আজ ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায়

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য আজ রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। গতকাল শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা হতে রাত ৯টা পর্যন্ত শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী এলাকার সকল শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

ওই সময়ে আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।


আরও খবর



দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাতের জন্য প্রস্তুত ঐতিহাসিক শোলাকিয়া

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

মাঠের রেওয়াজ অনুযায়ী, বন্দুকের ফাঁকা গুলির শব্দের মাধ্যমে প্রতি বছরের মত এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। এবার ১৯৭তম ঈদুল ফিতর জামাতে ইমামতি করবেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, ইসলামি ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের খতিব মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। নামাজ শুরু হবে সকাল ১০টায়।

মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, এবার শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের চারদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছিদ্র করতে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সারা মাঠে ৪টি উচু অস্থায়ী টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এসব টাওয়ারে পুলিশ সদস্যসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা টাওয়ারের মাধ্যমে মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।

শোলাকিয়া জামাতকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটি ইতোমধ্যে যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন সুযোগ সুবিধাসহ নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে সর্বিক ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, বৃহত্তম ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে শোলাকিয়া ময়দানে চারস্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এবারের জামাতের সারা মাঠ ও আশপাশ এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা থাকবে। পাঁচ প্লাটুন বিডিআর, ৭০০ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র‌্যার ও গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতিতে শোলাকিয়া বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রবিবার (৭ এপ্রিল) থেকে ঈদের রাত পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব মাঠে থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেটাল ডিডেকটর দিয়ে সারা মাঠ তল্লাশি করবেন।

ঈদের দিন সকাল থেকে মাঠের ২৮টি গেইটে মেটাল ডিডেকটর দিয়ে তল্লাশি করে মুসুলিদের প্রবেশ করানো হবে। এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে। পুলিশের ডক স্কোয়াডের মাধ্যমে মাঠের চারদিকে বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক আরও জানান, শোলাকিয়া জামাতে মুসল্লিদের আসা-যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে  ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে দুইটি শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে।

ঈদের দিন ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে সকাল ৭টায় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে। নামাজের পর বিশেষ ট্রেন ফিরতি যাত্রা করবে। এবার গত বছরের তুলনায় আরও বেশি সংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটবে-এমন ভাবনায় সবদিক থেকে শোলাকিয়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।

পৌরসভা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, জেলা চেম্বার অব কমার্সসহ সংশ্লিষ্ঠ বিভাগ সমূহ মাঠে অজু, গোসল এবং শোলাকিয়া মাঠে সহজে প্রবেশের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখাসহ মুসল্লিদের সার্বিক সু-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সদর) মো. আবু রাসেল জানান, এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উচ্ছ্বাস নিয়ে দেশের দূর-দূরান্ত, এমনকি বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে আসবে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা কাতার রাখা হবে। নামাজের জন্য শোলাকিয়া মাঠ প্রস্তুত। সকাল ১০টায় জামাত শুরু হবে।

প্রসঙ্গত, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটেছিল। সোয়া লাখ থেকেই বিবর্তনের ধারায় এ মাঠের নাম শোলাকিয়া হয়েছে। দিন দিন এর প্রচারণা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি বছরই মুসল্লিদের সমাগম বাড়ছে।


আরও খবর



শিল্পী সমিতির নির্বাচন: দুই প্যানেলে লড়বেন যারা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

আগামী ১৯ এপ্রিল বিএফডিসিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে দুটি প্যানেল। ঈদের পর নির্বাচনের শেষ সময়ে প্রচার-প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এফডিসি।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলে আছেন মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল। আরেক প্যানেলে আছেন সোনালি দিনের নায়ক মাহমুদ কলি ও চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার।

নির্বাচনে লড়ছেন যারা

মাহমুদ কলি-নিপুণ প্যানেলে প্রার্থীরা হলেন- সহ-সভাপতি পদে ড্যানি সিডাক ও অমিত হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক বাপ্পি সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জনা রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মারুফ আকিব, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক কাবিলা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে অভিনেতা আজাদ খান।

কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদের প্রার্থীরা হলেন- সুজাতা আজিম, নাদের চৌধুরী, পীরজাদা হারুন, পলি, জেসমিন আক্তার, তানভীর তনু, মো.সাইফুল, সাদিয়া মির্জা, সনি রহমান, হেলেনা জাহাঙ্গীর ও সাইফ খান।

মিশা-ডিপজল পরিষদে সহ-সভাপতি মাসুম পারভেজ রুবেল, সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জ্যাকি আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ডন এবং কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী কমল।

কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন অভিনেত্রী সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু, সাঞ্জু জন, ফিরোজ মিয়া।


আরও খবর



এখনো সিঙ্গেল থাকার কারণ জানালেন মিমি

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

নিটোল প্রেমের গল্পে জুটি বাঁধতে যাচ্ছেন টালিউড তারকা আবির চট্টোপাধ্যায় ও মিমি চক্রবর্তী। এ সিনেমার নাম আলাপ। সম্প্রতি এ সিনেমার প্রচারে গিয়েছিলেন মিমি। সেখানকার এক অনুষ্ঠানে তার ব্যক্তি জীবনের প্রেম সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেন মিডিয়ার লোকজন।

এ সময় মিমিকে প্রশ্ন করা হয়, পর্দায় প্রেমকাহিনি তো অনেক হলো, ব্যক্তিগত জীবনে মিমির প্রেমের আলাপের করার মানুষটি কে?

সম্প্রতি আলাপ সিনেমার একটি ইভেন্টে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে নিজের চরিত্র নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় মিমিকে। সেই উত্তরেরই একটি অংশ হয়েছে ভাইরাল। শোনা যায় মিমি বলছেন, লোককে মারছি, আমার শেষ সিনেমা থেকে শুরুর দিকে আমার দ্বিতীয় সিনেমাতেও, সেখানে প্রেম নিবেদনও করছি মারব বলে!

মিমির দাবি তার এমন একের পর এক মারকুটে চরিত্রের জন্য লোকজন মনে করেন যে তিনি ব্যক্তিগত জীবনেও মারকুটে। তবে তাদের শুধরে দিয়ে মিমি বলতে চান যে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একটু হয়তো ওরকম। কিন্তু আমিও রোমান্টিক মানুষ।

এরপরই হাসতে হাসতে অভিনেত্রী বলেন, আর এজন্য, এই তোমাদের জন্য। এইসব বলে বলে আমি আজও সিঙ্গেল রয়ে গিয়েছি

সিনেমায় মিমি ও আবির ছাড়াও রয়েছে স্বস্তিকা দত্ত। তার চরিত্রের নাম স্বাতীলেখা সেন। তাদের ৩টি চরিত্রই ৩টি আইটি কোম্পানিতে কাজ করে। কাজের সূত্রেই তাদের ৩ জনের দেখা ও আলাপ। তাদের ৩ জনের জীবনের গল্প, বিভিন্ন সমস্যা ও তার মিষ্টি সব সমাধান নিয়েই বোনা হয়েছে সিনেমা গল্প।


আরও খবর



বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

চট্টগ্রামের হালিশহর আর্টিলারি সেন্টারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ রোববার সকালে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নতুন এই স্থাপনা উদ্বোধন করেন তিনি। পরে তিনি ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দরবার করেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা ৭৫ জন বাঙালি এবং বেসামরিক কিছু যোদ্ধা নিয়ে ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই ত্রিপুরার কোনাবনে গঠিত হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রেজিমেন্ট অব আর্টিলারির প্রথম ফিল্ড ব্যাটারি। এই ফিল্ড ব্যাটারি দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত মান্দাবাগ বাজার, সালদা নদী, কসবা, আখাউড়া সিংগাইর বিল, ফেনী ও চট্টগ্রাম অভিমুখে পরিচালিত বিভিন্ন অপারেশনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই বাংলাদেশের প্রথম ফিল্ড ব্যাটারি নামকরণ করা হয়।

রোববার আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বাড়াতে এবং মুক্তিযুদ্ধে এই ব্যাটারির অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রামের হালিশহরে এই কমপ্লেক্স উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। ফলক উন্মোচনের পর তিনি ঊর্ধ্বতন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, চট্টগ্রামের মেয়র এবং সেনাপ্রধানকে নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন।

এরপর তিনি কমপ্লেক্সের ভেতর আর্টিলারি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। জাদুঘরে এই আর্টিলারির মুক্তিযুদ্ধকালীন এবং তারপরের বিভিন্ন স্মারক রাখা হয়েছে।


আরও খবর