মানবসেবা পৃথিবীর একটি মহৎ কাজ। সমাজে অনেকে নিজের অর্থসম্পদ এ কাজে বিলিয়ে দিয়েছেন। আবার অনেকের অর্থসম্পদ কিন্তু বিতরণের মন মানষিকতা নেই। তবে যারা মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারাই এই কঠিন সময়ে অসহায় বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। ত্রাণের প্যাকেট নিয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাড়ালেন সিলেটের মরহুম সুন্দরী হিজড়ার শীষ্যরা। সুন্দরী হিজড়ার পরিবারের তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা ৩ লাখ টাকার ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে নোয়াখালীর বন্যাদুর্গতদের মাঝে বিতরণ করছেন।
শুক্রবার রাতে সিলেট থেকে ৩ লাখ টাকার ত্রাণ প্যাকেট করে ট্রাক যোগে রওয়ানা দেন নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে। শনিবার তারা সেখানে পৌঁছেন। এ সময় তাদের দেখে উৎসুক জনতা ভিড় করে। তবে তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে প্রশংসা করেছেন অনেকেই। পরে শনিবার বিকালেই কিছু পানি বন্দিদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন এবং সেখাই তারা রাত্রি যাপন করেন। পরদিন রোববার তাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা সম্পন্ন হয়। দুইদিনে প্রায় তিনশত পরিবারের সদস্যদের পাশে দাড়িঁয়েছেন। তাদের ত্রাণের প্রতি প্যাকেটে ছিলো চাল, আলু, লবন, তেল, ডাল, পেঁয়াজ, দুই পিছ সাবান, নাপা, খাবার স্যালাইন ও মসলা সামগ্রী।
মরহুম সুন্দরী হিজড়ার বড় শীষ্য বাবলী হিজড়া, কালী হিজড়া, লিপি হিজড়া, রাধা হিজড়া, রানী হিজড়ার নেতৃত্বে এ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করা হয়। পরে কালী হিজড়া, লিপি হিজড়া, রাধা হিজড়া, রানী হিজড়াসহ অন্যান্য হিজড়া সদস্যবৃন্দ একটি ট্রাকে ত্রাণ ও একটি নোহাগাড়ি নিয়ে তারা নোয়াখালীতে পৌঁছে।
হিজড়ারা বলেন, ‘আমরাও মানুষ। মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াবো না তা কি হয়। আমরাও দশ জনের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। বন্যাদুর্গতদের কেউ ভিখারি নয় তারা সবাই পরিস্থিতির শিকার। মানু্ষের এ বিপদে মানবতার খাতিরে আমাদের সাধ্যনুযায়ী সামান্য কিছু করা। তাই বান্যার্ত মানুষের কষ্ট দেখে আমরা সবাই মিলে এই উদ্যোগ নিয়েছি। সবাইকে এই বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ানো অনুরোধ করেন তারা।